|
|
|
|
আডবাণীর প্রস্তাবে আপত্তি শরদের |
সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকা নিয়ে ধন্দে বিজেপি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
ভারত বনধ হল। কিন্তু খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সর্বদলীয় প্রতিনিধি নিয়ে গিয়ে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণী, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
আডবাণীর প্রস্তাব ছিল, অবিলম্বে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নি নিয়ে আলোচনা হোক।
সেই আলোচনার ভিত্তিতে সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় একটি প্রস্তাবও পাশ করা হোক। রাষ্ট্রপতির কাছে এই দাবি
জানানোর সময় সামিল হন বাম-মুলায়ম-মায়াবতী-মমতাও। কিন্তু আজ ভারত বনধের পরেও এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন নিয়ে বিজেপি শিবিরেই সংশয় রয়েছে।
ইতিমধ্যেই এনডিএ-র শরিক জেডি(ইউ) নেতা শরদ যাদব মন্তব্য করেছেন, বিশেষ অধিবেশন ডাকার প্রয়োজন নেই। বনধের সাফল্য তুলে ধরে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ীকেও যখন প্রশ্ন করা হয়, এর পর দলের কৌশল কী হবে? তিনিও সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার ব্যাপারে কোনও ঘোষণা করেননি। বরং আডবাণীর প্রস্তাবের প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করেছেন মাত্র। রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্রেও আজ বলা হয়েছে, বিজেপি রাষ্ট্রপতির কাছে কোনও সময় চায়নি।
বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, আডবাণীর সঙ্গে গডকড়ীর এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রস্তাবটি এখনই ঠান্ডা ঘরে পাঠানো হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আগে এনডিএ-তে আলোচনা হবে। কারণ এনডিএ-র মধ্যেই এ নিয়ে মতান্তর রয়েছে। তা ছাড়া আজকের ভারত বনধের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দেখা গিয়েছে, যন্তর-মন্তরে বাম নেতারা বিজেপির সঙ্গে এলেও মুলায়ম-দেবগৌড়া-চন্দ্রবাবুরা বিজেপির কাছে ঘেঁষতে চাইছেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির বিরোধিতা করলেও বিজেপির সঙ্গ এড়িয়ে চলছেন। বিজেপি নেতা বিজয় গোয়েল আজ কলকাতায় মমতার সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তিনি সময় দেননি। পশ্চিমবঙ্গে উমা ভারতীর ‘গঙ্গা যাত্রা’র সময়ও সভার অনুমতি দিচ্ছেন না মমতা। এই অবস্থায় সর্বদলীয় প্রতিনিধি নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়াটা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে বিজেপির মধ্যে সংশয় রয়েছে।
বিজেপির আর একটি আশঙ্কা হল, রাস্তায় নেমে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির বিরোধিতায় মুলায়ম-মায়াবতীরা বিরোধিতা করতে পারে। কিন্তু সংসদে বিষয়টি এলেই তাঁরা সরকারের সমর্থনে চলে আসতে পারেন। সে ক্ষেত্রে কংগ্রেসও নিজেদের সংগঠিত করার সুযোগ পেয়ে যাবেন। এই পরিস্থিতিতে নিতিন গডকড়ী দলের কাছে একটি প্রস্তাব দিয়েছেন। তাঁর মতে, কংগ্রেস-বিরোধী আন্দোলনে মুলায়ম যদি অ-কংগ্রেসি দলগুলির নেতৃত্ব দেন, আর তাতে যদি কংগ্রেস আরও দুর্বল হয়, তা হলে পিছন থেকে সমর্থন দিক বিজেপি। মমতা আনুষ্ঠানিক ভাবে সমর্থন যদি প্রত্যাহার করে নেন, তার পর সরকারের জিয়নকাঠি হিসাবে থাকবেন মুলায়ম আর মায়াবতীই। ফলে তাঁরা যদি কংগ্রেস সরকারকে ধরাশায়ী করতে এগিয়ে আসেন, পিছনে থেকে মদত দিতেও রাজি বিজেপি। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও মুলায়মরা বিজেপিকে সঙ্গে নিতে রাজি থাকবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে এনডিএ-র আহ্বায়ক শরদ যাদবকে সামনে রেখে একটি চেষ্টা চালাতে পারেন বিজেপি নেতৃত্ব। এনডিএ বৈঠকে তা নিয়েই আলোচনা হবে। প্রকাশ কারাটরা অবশ্য অপেক্ষা করছেন রাজধানীতে আগামিকালের গতিবিধির উপরে। তৃণমূল আনুষ্ঠানিক ভাবে সমর্থন প্রত্যাহার করলে মুলায়ম ও বাকি দলের রণকৌশল কী হয়, তা দেখে বামেরা পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করতে চাইছে। মুলায়মও তৃণমূলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়।
বিজেপিও তাই আরও কিছু দিন পরিস্থিতির উপরে নজর রেখেই এনডিএ-র বৈঠক ডাকতে চাইছে। |
|
|
|
|
|