একটি ফ্যান। দু’টি লাইট। আর একটি মাত্র টিভি। চার সদস্যের একচালা মাটির বাড়িতে সম্বল এটুকুই।
অথচ বিদ্যুতের বিলের পরিমাণ ৮৭ লক্ষ ৫১ হাজার ৯২৭ টাকা ৯১ পয়সা! তিন মাসের এই বিদ্যুৎ বিল হাতে পেয়ে প্রায় মূর্চ্ছা যাওয়ার অবস্থা হয়েছিল বোলপুরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাছারিপট্টি-রায়পাড়ার বাসিন্দা নমিতা ভাস্করের। তিনি বলেন, “বিলের কাগজটা দেখে বুঝতে পারছিলাম না, আমি ঠিক দেখছি তো! এ রকমটা যে হতে পারে কখনও ভাবিনি।” এমন বিল পেয়ে বৃহস্পতিবারই পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ নিগমের সংশ্লিষ্ট গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
নমিতাদেবীর পরিবারের সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪ সেপ্টেম্বর জারি হওয়া ওই ‘ভুতুড়ে’ বিলটি বৃহস্পতিবার তাঁদের বাড়িতে পৌঁছেছে। অগস্ট-অক্টোবর এই তিন মাসের ওই লক্ষাধিক টাকার বিল (এ ক্ষেত্রে যার পরিমাণ ৮৫ লক্ষ ৩৯ হাজার ৯৬০ টাকা) তাঁদের জমা দিতে হবে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। নমিতাদেবীর ছেলে অসীম ভাস্কর বলেন, “গতবারই (মে-জুলাই) বিল এসেছিল ৩০৭ টাকা! যা আমরা ১৬ জুলাই জমাও দিয়ে দিয়েছি। তারপরে এই বিল আমাদের বিস্মিত করেছে।” |
এলাকায় ‘ভুয়ো’ বিদ্যুৎ বিল নিয়ে মাঝে মধ্যেই ক্ষোভ ছড়ায়। অভিযোগ ওঠে ঠিক ভাবে বিদ্যুতের রিডিং না নেওয়ারও। তবে নমিতাদেবীর এই প্রায় কোটি টাকার কাছাকাছি বিল রীতি মতন বিস্ময় তৈরি করেছে এলাকায়। স্থানীয় গৃহবধূ নন্দিনী চক্রবর্তী বলেন, “এমন অস্বাভাবিক একটি বিল দফতর পাঠায় কী করে তা ভেবে পাচ্ছি না!” অন্য দিকে, সুনন্দিতা ঘোষহাজরা-র অভিমত, “ঠিক মতো বিল না নেওয়ার পাশাপাশি যাঁরা এই বিদ্যুৎ বিল তৈরি করেন এই ঘটনার পেছনে সেই কর্মীদের গাফিলতিকেও অস্বীকার করা চলে না।”
এমন বিলের কথা শুনে অবশ্য পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ নিগমের শান্তিনিকেতন গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের স্টেশন ম্যানেজার মহম্মদ সোহেল হাসানের মন্তব্য, “নিশ্চয় কিছু ত্রুটি হয়েছে। ওই বিল খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।” |