বন্ধ সমর্থনে-বিরোধিতায়, দু’পক্ষই রাস্তায়
সারাদিনে

মুরারই ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেসের রুহিনা বিবিকে নিগ্রহের পাশাপাশি সরকারি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের। রুহিনা বিবির অভিযোগ, পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে কাছে যোগ দেওয়ার পথে মুরারই-রঘুনাথগঞ্জ রাস্তায় হিয়াতনগর মোড়ের কাছে কয়েকজন ফরওয়ার্ড ব্লক কর্মী তাঁর গাড়ি আটকে ভাঙচুর করে। রুহিনা বিবি বলেন, “ওরা শাবল, লোহার রড নিয়ে হামলা চালায়। গাড়ির ড্রাইভার এবং আমার স্বামীকে মারধর করে। আমার শাড়ি ধরে টানাটানি করে ছিঁড়েও দেয়।” ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা মহম্মদ হান্নান অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সিউড়িতে ট্রেজারি অফিস। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়।

সিপিএমের ঢঙেই বাইক বাহিনী বের করল তৃণমূল। অভিযোগ, বোলপুর পুরসভার উপপুরপ্রধান নরেশ বাউড়ির নেতৃত্বে তৃণমূলের কিছু যুবকর্মী শহর দাপাল সেই বাইক নিয়ে। বোলপুরে অবস্থিত পূর্ত দফতরের (সড়ক) অফিসঘরের তালা ভাঙা কিংবা শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের অফিসে বা দোকানপাটে টাঙানো সিপিএম-বিজেপির পতাকা ছেড়া সবেতেই বিশেষ ‘ভূমিকা’য় দেখা গেল ওই বাইক বাহিনীকে। অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
রামপুরহাট বাসস্ট্যান্ডের ছবিটি তুলেছেন সব্যসাচী ইসলাম।

বন্ধের সমর্থনে নলহাটিতে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই অবরোধ শুরু করেন ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে। মিনিট কুড়ি পরে পুলিশ এসে ওই অবরোধ তুলে দেয়। গ্রেফতার করা হয় বিজেপির নলহাটি ১ ব্লক সভাপতি অনিল সিংহ ও জেলা যুব মোর্চা নেতা ধ্রুব সাহাকে। অন্য দিকে, ইলামবাজারেও ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিজেপি। আধঘণ্টা পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে উঠে যায় অবরোধ। গ্রেফতার হন ২২ জন বন্ধ সমর্থক।


গেটে তালা। বাইরে স্কুলের ২৬ জন শিক্ষক ও বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী। এ ভাবে প্রায় ঘণ্টা খানেক অপেক্ষার পর পুলিশের হস্তক্ষেপে খুলল স্কুল। তার আগেই অবশ্য বেশ কিছু পড়ুয়া ফিরে গিয়েছে স্কুল বন্ধ দেখে। মাড়গ্রাম থানার প্রতাপপুর হাইস্কুলের ঘটনা। স্কুলের এক শিক্ষক গৌরীশঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, “ঠিক সময়ে তালা না খোলাতেই এই বিপত্তি।”
বোলপুর আদালত চত্বর থেকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।—নিজস্ব চিত্র।

ভোরবেলা নির্ধারিত সময়েই ছেড়েছিল ট্রেনটি। কিন্তু আমোদপুর স্টেশনে ঢুকতেই বাধা পেল বিশ্বভারতী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার। বিজেপির এই অবরোধের জেরে বিভিন্ন স্টেশনে পরপর থেমে যায় হাওড়া, শিয়ালদহ ও বর্ধমানগামী লোকাল ও এক্সপ্রেস ট্রেনগুলি। আধঘণ্টা পর অবশ্য অবরোধ কাটিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ট্রেনগুলি।


বন্ধে এমনিতে লোকজন ছুটির মেজাজে। কিন্তু রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তির ‘চাপে’ বিভিন্ন সরকারি দফতরে অন্যান্য দিনের থেকেও ভিড় বেড়েছে কর্মী-আধিকারিকদের। কিন্তু লোক কোথায়! যাঁদের জন্যে আসা তাঁরাই তো নেই। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই অধিকাংশ কর্মীরই দিন কাটল পুরনো ফাইল নড়াচড়া করে। এ দিন জেলার সর্বত্রই ছিল এই দৃশ্য।
বোলপুরে পূর্ত দফতরের তালা ভাঙছেন বন্ধ বিরোধীরা। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

আমোদপুরে পার্টি অফিস ভাঙচুর করেছে তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী। তৃণমূলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলল সিপিএম-বিজেপি উভয় পক্ষই। বিজেপি নেতৃত্বের আরও অভিযোগ, এই ঘটনায় চুরি গিয়েছে একটি মোটরবাইকও। তৃণমূলের তরফে যথারীতি অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
যানবাহন নেই। সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে গল্পে মজেছেন পুলিশকর্মীরা।—নিজস্ব চিত্র।

ময়ূরেশ্বরে ২ ব্লকে আগাম ছুটি স্কুলে। বন্ধ স্থানীয় তিনটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রও। এ ভাবে পরোক্ষে বন্ধ ‘সমর্থন’ করার অভিযোগে স্থানীয় বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূল কর্মীরা।
বন্ধ হেতমপুর পঞ্চায়েত।—নিজস্ব চিত্র।

সিটু প্রভাবিত কর্মীদের বন্ধ সমর্থনের জেরে সারাদিন কোনও কাজই হল না তৃণমূল পরিচালিত রামপুরহাট পুরসভায়। ছিলেন না খোদ পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারিও। পুরপ্রধানের দাবি, “রাস্তা সংস্কারের কাজের তদারকিতে বাইরে ছিলাম।”

তাঁরা বললেন
“জেলার সমস্ত সরকারি দফতর খোলা ছিল। কর্মীদের হাজিরা ৯৯ শতাংশ।” জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা।
“মুরারই থানার পাইকর ও আমোদপুরে গণ্ডগোলের খবর আছে। তা ছাড়া বন্ধকে ঘিরে জেলায় তেমন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।” জেলা পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা।
“এফডিআইয়ের ক্ষতিকর দিকের কথা বুঝে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বন্ধকে সমর্থন করেছেন। তৃণমূলের গুণ্ডাবাহিনী আমাদের পার্টি অফিস ভাঙচুর-সহ কয়েকজন কর্মীকে মারধরও করেছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়।
“বন্ধ সফল হয়েছে। তৃণমূলের গুণ্ডাবাহিনী ও পুলিশ দিয়ে এই বন্ধ বানচাল করার চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে। সাধারণ মানুষ প্রমাণ দিয়েছেন তাঁরা আমাদেরই পাশে আছেন। ” বিজেপি-র জেলা সভাপতি অর্জুন সাহা।
“সিপিএমের তো পায়ের তলায় মাটি নেই। আর পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি বলেও কিছু নেই। বন্ধ সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
“বামপন্থীদের গুণ্ডামির ইতিহাস দীর্ঘদিনের। মুরারইয়ের ঘটনা তাতে নতুন সংযোজন মাত্র। এমন আচরণকে ধিক্কার জানাই।” কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.