শাড়ি থেকে গয়না, নরম পানীয় থেকে মোবাইল ফোন পুজোর ক’দিন জনজোয়ারে ভেসে যাওয়া মণ্ডপগুলো ছেয়ে থাকে এমন হরেক পণ্যের রকমারি বিজ্ঞাপনে। শুধু কলকাতা নয়, জেলাতেও। উদ্যোক্তাদের খরচের বড় অংশের সংস্থান হয় তা থেকে। এ বার সে তালিকায় জুড়ছে নির্বাচন কমিশনের বিজ্ঞাপনও। শুধু তা-ই নয়, তাদের হোর্ডিং কে কত ‘নজরকাড়া’ জায়গায় রাখল, তার ভিত্তিতে উদ্যোক্তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও ইনামেরও ব্যবস্থা করছে নির্বাচন কমিশন।
কমিশন-সূত্রের খবর: এ বছর বড় বড় পুজোমণ্ডপে কমিশনেরও হোর্ডিং পড়বে। উদ্দেশ্য, নতুন ভোটার ধরা ও ভোটার-সচেতনতাবৃদ্ধি। ভোটার তালিকায় নাম তোলা থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রের (ইভিএম) বোতাম টেপা সব ক্ষেত্রে হবু ভোটারদের প্রতি উৎসাহমূলক বার্তা থাকবে তাদের হোর্ডিংয়ে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার সুনীল গুপ্তের কথায়, “শহরাঞ্চলে মহিলা ও তরুণদের মধ্যে ভোটার তালিকায় নাম তোলায় তেমন আগ্রহ নেই। আমাদের সমীক্ষা বলছে, উদাসীনতা এর একটা কারণ বটে, তবে অনেকে তালিকায় নাম তোলার ব্যাপারে ঠিক তথ্য ঠিক সময়ে জানতেও পারেন না।”
এই ঘাটতি দূর করতেই পুজো-কমিটিগুলোর হাত ধরার সিদ্ধান্ত। এবং স্রেফ মণ্ডপে হোর্ডিং বসিয়েই উদ্যোক্তাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যাক, কমিশন এটাও চাইছে না। নির্বাচন সম্পর্কে ভোটারদের আগ্রহ বাড়াতে পুজো-কর্তাদের প্রত্যক্ষ মদতও তারা চায়। কী রকম?
সুনীলবাবু জানান, রাজ্যের ছ’টি পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় (কলকাতা, হাওড়া, ব্যারাকপুর, সল্টলেক, আসানসোল-দুর্গাপুর ও শিলিগুড়ি) এ বার পুজোয় তাঁদের ‘ভোটার-সচেতনতা’ প্রচার চলবে। কমিশন প্রয়োজনীয় তথ্য ও সামগ্রী জোগাবে, সে সব প্রচারের ব্যবস্থা করবে পুজো কমিটিগুলো। কার প্রচারের ‘কৌশল’ কত ভাল, তা নিয়ে মণ্ডপে-মণ্ডপে প্রতিযোগিতার আয়োজন হবে। কৌশলের নিরিখে ‘সেরা মণ্ডপ’ বাছাই করবে স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত বিচারকদল। প্রতিটি কমিশনারেটে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানাধিকারীকে নির্বাচন কমিশন পুরস্কৃত করবে। কমিশনের তরফে পুরো বিষয়টি দেখভালের দায়িত্বে থাকবেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কমিশনার। উদ্যোগটি সফল করতে রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত, যুবকল্যাণ ও স্বনির্ভর গোষ্ঠী দফতরেরও সহায়তা নেওয়া হবে।
এ দিকে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ১ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ভোটার তালিকায় নাম তোলা-নাম বাতিলের আবেদন গ্রহণ করা হবে। পুজোর সময়ে কাজ বন্ধ থাকবে। উৎসবের মরসুম পেরোলে আবার শুরু হবে ১ নভেম্বর, চলবে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত। আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন। |