ন’পাড়া পঞ্চায়েত তৃণমূলের
নকুলবাবুর খাসতালুকে হার সিপিএমের
সিপিএমের দুই পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে সরিয়ে দিলেন নিজের দলের পঞ্চায়েত প্রধানকে। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় এমনটা ঘটলেও পুঞ্চা ব্লকের নপাড়া পঞ্চায়েতের মঙ্গলবারের এই ঘটনার তাৎপর্য অন্য। সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা প্রাক্তন সম্পাদক নকুল মাহাতোর নিজের এলাকার এই ঘটনা ওয়াকিবহাল মহলের চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে।
প্রায় তিন দশক ধরে নপাড়া পঞ্চায়েত সিপিএমের দখলে ছিল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই পঞ্চায়েতের ৯টি আসনের মধ্যে সিপিএম ৬টি আসনে জিতে পঞ্চায়েতের ক্ষমতা ধরে রাখে। তৃণমূল ২টি ও ঝাড়খণ্ড মুক্তিমোর্চা ১টি আসন নিয়ে বিরোধী শিবিরে ছিল। সম্প্রতি এই সমীকরণ বদলে যায়। সিপিএমের দুই পঞ্চায়েত সদস্য দলেরই পঞ্চায়েত প্রধান অশোক মাহাতোর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন। বুধবার অনাস্থা সংক্রান্ত ভোটে প্রধানের বিপক্ষে ৫টি ভোট পড়ে। সংখ্যলঘু হয়ে পড়েন প্রধান। পুঞ্চার বিডিও সুপ্রতিক সিংহ বলেন, “বর্তমান প্রধান সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন। নতুনভাবে প্রধান নির্বাচন করা হবে। দিন ঠিক হয়নি।”
আস্থা ভোটে পরাজিত অশোক মাহাতো বলেন, “আমাদের দলের দামোদরপুর ও বুগলিডি সংসদ সদস্য ছায়ারানি মাহাতো ও অনিলবরণ সহিস ৩১ অগস্ট বিডিও-র কাছে আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা চেয়ে আবেদন জানান। তার ভিত্তিতে আস্থাভোট হয়। ওই ভোট আমার বিরুদ্ধে গিয়েছে।” ওই দুই পঞ্চায়েত সদস্যের অভিযোগ, “প্রধান হিসেবে অশোকবাবু নিজের মর্জিমাফিক পঞ্চায়েতের কাজ পরিচালনা করছিলেন। আমাদের কথা তিনি গুরুত্ব দিতেন না। আমাদের এলাকার উন্নয়নের কাজেও বাধা দিয়েছেন।” তাঁদের দাবি, সিপিএমের স্থানীয় নেতাদের জানিয়েও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে তাঁরা অশোকবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। তাঁরা জানান, প্রয়োজনে দল ছাড়ার কথাও ভাবছেন।
সিপিএমের দীর্ঘদিনের জেলা সম্পাদক থাকা নকুল মাহাতো দলের শেষ জেলা সম্মেলনে ওই পদ থেকে অব্যাহতি নেন। তাঁর এলাকার পঞ্চায়েতে এই ঘটনায় তাঁর প্রতিক্রিয়া, “কী আর বলবো? যা হয়েছে, সবাই দেখতে পাচ্ছেন।” সিপিএমের পুঞ্চা জোনাল কমিটির সম্পাদক বিপত্তারণ শেখরবাবু দাবি করেন, “নপাড়া পঞ্চায়েত দখল করার জন্য তৃণমূল নেতৃত্ব আমাদের ওই দুই সদস্যকে কিনে এখন দলের আদর্শ মেনে কম কর্মীই রয়েছেন।”
সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদকের গ্রামে পঞ্চায়েতের আস্থাভোটকে ঘিরে এ দিন দুই রাজনৈতিক শিবিরে উত্তেজনা ছিল। দুই দলেরই কয়েকশো নেতা-কর্মী পঞ্চায়েত কার্যালয়ের কাছে উপস্থিত ছিলেন। ঝুঁকি না নিয়ে পুঞ্চা, হুড়া ও কেন্দা থানার পুলিশকর্মীরাও হাজির ছিলেন। তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক নবেন্দু মাহালি দাবি করেন, “নপাড়া তো নকুলবাবুর খাস তালুক। সেখানে ওদের পঞ্চায়েত হারানো তো নকুলবাবুরও নৈতিক পরাজয়।” মানবাজারের বিধায়ক সন্ধ্যারানি টুডু, তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.