কর্মরত দুই রেলকর্মীকে মারধর করার অভিযোগে রেলরক্ষী বাহিনীর (আরপিএফ) এক এএসআই-কে সাসপেন্ড করলেন রেল কর্তৃপক্ষ। সুরেশ চৌধুরী নামে ওই আরপিএফ কর্মী দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের অধীন আরপিএফের ভোজুডি থানায় কর্মরত। সোমবার রাতে আদ্রার ডিআরএম অমিতকুমার হালদারের নির্দেশে আরপিএফের আদ্রার সিনিয়র সিকিউরিটি কমান্ডান্ট জ্যোতিকুমার সতিজা ওই এএসআইকে সাসপেন্ড করেন।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে দফতরের কাজে ভোজুডি থেকে আদ্রায় এসেছিলেন সুরেশ। বিকেলে টাটা-ধানবাদ ট্রেনে তাঁর ভোজুডি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় বিকেলে তিনি সাধারণ পোশাকে আদ্রা স্টেশনে ট্রেন ধরতে এসে কর্মরত রেলের চতুর্থ শ্রেণির দুই কর্মী সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় ও বজরঙ্গ মুখিকে মারধর করেন। আহত অবস্থায় ওই দুই রেলকর্মীকে ভর্তি করানো হয়েছে আদ্রায় রেলের বিভাগীয় হাসপাতালে।
প্রহৃত দুই রেলকর্মীর অভিযোগ, আরপিএফ কর্মী সুরেশ এসে তাঁদের কাছে টাটা-ধানবাদ ট্রেন চলে গিয়েছে কি না জানতে চান। বজরঙ্গ মুখি বলেন, “ওই ট্রেনটি আদ্রা থেকে বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ ছেড়ে যায়। সোমবারেও নির্দিষ্ট সময়েই ট্রেনটি ছেড়েছিল। ওই ব্যক্তিকে আমারা তাই জানাই। ট্রেন চলে গিয়েছে শুনেই উনি আচমকা আমাদের গালিগালাজ দিতে শুরু করেন। প্রতিবাদ করায় নিজেকে আরপিএফের আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দিয়ে আমাদের মারধর করেন।” ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই দুই রেলকর্মী সুরেশবাবুকে সংযত হওয়ার কথা বললেও তিনি না শুনে ফোন করে কয়েক জন সহকর্মীকে স্টেশনে ডেকে আনেন। তার পরে সকলে মিলে দুই রেলকর্মীর উপরে চড়াও হন। স্টেশনে উপস্থিত অন্য রেলকর্মীদের হস্তক্ষেপে রেহাই পান দুই রেলকর্মী। পরে সুরেশ চৌধুরী-সহ কয়েক জন আরপিএফের কর্মীর বিরুদ্ধে আদ্রার রেল পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন প্রহৃত রেলকর্মীরা।
ঘটনার খবর পেয়ে এডিআরএম রাহুল গৌতমকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত স্টেশনে যান আদ্রার ডিআরএম অমিতকুমার হালদার। উপস্থিত রেলকর্মীদের কাছে ঘটনার বিষয়ে বিশদে খোঁজ নেন তিনি। রেলকর্মী সংগঠন মেনস কংগ্রেস অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় ডিআরএমের কাছে। মেনস কংগ্রেসের আদ্রার নেতা রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শুধু মূল অভিযুক্তর বিরুদ্ধেই নয়, অন্য যে সব আরপিএফ কর্মী ঘটনায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ডিআরএমের কাছে জানানো হয়েছে।” ডিআরএম বলেন, “অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় আরপিএফের ওই কর্মী রেলের দুই কর্মীকে মারধর করেছেন। অভিযুক্ত আরপিএফ কর্মীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে উনি স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন না। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করা হয়েছে।” সুরেশ চৌধুরীর সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। |