দশ কিলোমিটার দূরে গিয়েও ‘রেহাই’ পেলেন না তরুণী।
তাঁকে সমানে ‘উত্ত্যক্ত’ করত পাড়ারই এক যুবক। নিষ্কৃতি পেতেই স্বামীকে নিয়ে অন্য এক পাড়ায় বাড়ি ভাড়া করে উঠে যান ওই সদ্যবিবাহিতা। তবু ‘রক্ষা’ করতে পারলেন না নিজের সম্ভ্রম। অভিযোগ, সোমবার রাতে খুঁজতে খুঁজতে ওই নতুন বাড়িতে হাজির হয় সেই যুবক। স্বামীর অনুপস্থিতির সুযোগে মত্ত অবস্থায় ঘরে ঢুকে শ্লীলতাহানি করে ওই তরুণীর। বাধা পেয়ে মারধরও করে। মঙ্গলবার দুপুরে সেই তরুণী যখন বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের করছেন, তখনই ইভটিজিং রুখতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়ে বৈঠক করছে পুলিশ।
থানায় দায়ের করা অভিযোগে বারাসতের ন’পাড়ার ওই বধূ জানান, তাঁরা আগে বারাসতের কাজীপাড়ার কাছে বর্মা কলোনিতে থাকতেন। বিয়ের পর থেকেই প্রীতম সেন নামে ওই এলাকারই বছর তিরিশের এক যুবক তাঁকে উত্ত্যক্ত করত। রাস্তায় বেরোলে নানা রকম কুপ্রস্তাবও দিত। ওই তরুণীর স্বামী এ দিন বলেন, “এর থেকে মুক্তি পেতে প্রায় দশ কিলেমিটার দূরে অপেক্ষাকৃত জনবহুল এলাকা ন’পাড়ায় দিন কয়েক আগে ঘর ভাড়া নিয়ে এসেছি।” অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতী খোঁজ করে সোমবার রাতে ন’পাড়ার বাড়িতে চড়াও হয়।
কী ঘটে ওই রাতে? অভিযোগে ওই বধূ জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী কাজে গিয়েছিলেন। রাতে আচমকা প্রীতম মত্ত অবস্থায় তাঁদের ঘরে ঢুকে পড়ে ভিতর থেকে দরজা আটকে দেয়। তার পর তাঁর শ্লীলতাহানি করে। বাধা দিলে তাঁকে মারধর করে। তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা জড়ো হওয়ার আগেই ওই দুষ্কৃতী পালিয়ে যায়। ওই তরুণীর আরও অভিযোগ, এই ঘটনা জানাজানি হলে তাঁকে খুনের হুমকি দিয়ে যায় প্রীতম। ভয়ে প্রথমে ঘটনাটি কাউকে না জানালেও বারাসত আদালতের এক পরিচিত আইনজীবীর মারফৎ মঙ্গলবার দুপুরে বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। বারাসত হাসপাতালে ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষার পরে পুলিশ অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। তবে, অভিযুক্তের সঙ্গে ওই বধূর কোনও সম্পর্ক ছিল কি না এবং কী করে সে বাড়ির মধ্যে ঢুকে পড়ল, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
অপরাধ ঠেকাতে এক দিকে পুলিশ যখন বারাসতে রাতভর তল্লাশি চালাচ্ছে, সাধারণ মানুষকে নিয়ে বৈঠক, মিছিল করছে, তার মধ্যেই রবিবার বারাসতে একটি ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির ঘটনার পরে ফের সোমবারই এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। এ দিন দুপুরে বারাসত স্টেডিয়ামে এলাকার সমস্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এসডিপিও সুবীর চট্টোপাধ্যায়, আইসি পরেশ রায়। সেখানে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ছাত্রীদের কী সমস্যা হয়, তা নিয়ে আলোচনা হয়। পুলিশকর্তাদের মোবাইল নম্বর সমস্ত পড়ুয়া ও অভিভাবকের হাতে দিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয় বৈঠকে। স্কুলে যাতায়াতের সময় পুলিশি টহলদারি চলবে বলেও জানান সুবীরবাবু।
অন্য দিকে, বালির শান্তিনগরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আঠেরো বছরের এক তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে তাঁর মেসোকে গ্রেফতার করে পুলিশ। |