সরকারি বাসও ছিল না, দুর্ভোগ
ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে রাজ্য জুড়ে বাস ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জেলাবাসীদের। বেসরকারি বাস গত দু’দিনে পথে নামেনি। সেই সঙ্গে সরকারি বাসেরও দেখা মেলেনি। ফলে চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছেন নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ যাত্রী। এদিকে পুজোর মুখে বাস ধর্মঘট জেলার ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির দিকে ঠেলে দিয়েছে বলেও অভিযোগ। ফলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। জেলা চেম্বার অফ কমার্সের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদ্যোৎ দে বলেন, “পুজোর মুখে এই বাস ধর্মঘট জেলার ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারাও। পুজোর আর বেশি দিন নেই। এই অবস্থায় জেলার ছোট-বড় সমস্ত ব্যবসায়ী টাকা লগ্নি করে পুজোর সামগ্রী কিনে দোকান ভরিয়ে তুলেছেন। কিন্তু বাস বন্ধ থাকায় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা আসতে পারছেন না। কেনাকাটা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষুব্ধ। পুজোর মুখে দু’দিন ব্যবসা বন্ধ থাকার অর্থ ব্যবসায়ীদের চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়েছে।”
রাজ্য পরিবহণ দফতর বাস ধর্মঘটে সাধারণ মানুষের হয়রানি কমাতে অতিরিক্ত সরকারি বাস চালানোর কথা ঘোষণা করলেও জেলায় তার কোনও প্রভাব নেই। ফলে দুর্ভোগ বেড়েছে নিত্যযাত্রীদের। মুর্শিদাবাদ জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক ইন্দ্রনীল বসু অবশ্য বলেন, “বাস ধর্মঘটের জেরে নিত্যযাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ঠিকই। তবে অতিরিক্ত সরকারি বাস চালানোর কোনও নির্দেশ এখনও আসেনি। ওই বিষয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে জানাতে পারব।” কান্দি মহকুমা এলাকায় একটিও অতিরিক্ত সরকারি বাস না চলায় ক্ষুব্ধ নিত্যযাত্রীরা। সাধারণ মানুষের ওই দুর্ভোগের কথা ভেবে কান্দি বাস সিন্ডিকেট জরুরি বৈঠক করে। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট কাউন্সিলের সিদ্ধান্তই মেনে চলবে কান্দি বাস সিন্ডিকেট সদস্যরা। কান্দি বাস সিন্ডিকেটের সহ-সভাপতি ফুলু মিঞা বলেন, “আগের সরকারের আমলে ভাড়া বেড়েছিল। তার পর ধাপে ধাপে দু’ থেকে তিন বার ডিজেলের দাম বেড়েছে। কিন্তু বাস ভাড়া বাড়েনি। তাই এবার ভাড়া বৃদ্ধি হোক, সেটা চাই।” বাস মালিক সংগঠনের পক্ষে রথীন মণ্ডল বলেন, “মুর্শিদাবাদে সমস্ত রুটে প্রতি দিন সাড়ে সাতশো বাস চলে। কিন্তু বাস বন্ধ।”
বাস মালিকদের কথায়, শুধু ডিজেলের দাম বেড়েছে এমন নয়। বাসের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের দাম বেড়েছে, বেড়েছে টায়ারের দামও। পাঁচ বছর আগে এক জোড়া টায়ারের দাম ছিল ১৬ থেকে ২০ হাজার টাকা। বর্তমানে এক জোড়া টায়ারের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ থেকে ৩৬ হাজার টাকা। একই ভাবে বিমা, কর থেকে পরিবহণ শিল্পের সংক্রান্ত সব ক্ষেত্রেই বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ। অথচ বাসের ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে না। ওই ক্ষতি সামাল দিয়ে বাস চালানো সম্ভব নয় বলেও তাঁরা সাফ জানিয়ে দেন। যদিও সুষ্ঠু ভাবে বাসগুলি যাতে চলে সেটাও বাস মালিকদের দেখতে হবে বলে মনে করছে নিত্যযাত্রীরা। মুর্শিদাবাদ জেলা নিত্য বাসযাত্রী সমিতির সম্পাদক সমরেন্দ্র ভট্টাচার্য বলেন, “সোমবার বন্ধ থাকলেও মঙ্গলবার স্কুল-সরকারি বিভিন্ন দফতর থেকে আদালত-ব্যাঙ্ক খুলেছে। ফলে সোমবার বাস বন্ধের প্রথম দিনের তুলনায় এদিন পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নেয়। ছাত্রছাত্রী থেকে সরকারি কর্মীদের যন্ত্রচালিত ভ্যান লছিমন, ছোট লরি ভাড়া করে স্কুলে-অফিসে পৌঁছান। হাতে গোনা কয়েকটি সরকারি বাস চলেছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।” কান্দি নিত্যযাত্রী সংগঠনের সম্পাদক তপন পাত্র বলেন, “যে সব রুটে সরকারি বাস চলেছে, সেখানে যাতায়াতে সমস্যা হয়নি। তবে অধিকাংশ এলাকায় সরকারি বাস না চলায় সরকারি কর্মী থেকে নিত্যযাত্রীদের যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.