|
|
|
|
একশো দিনের কাজে |
মজুরি বাঁধা নিয়ে বিতর্ক |
অমিত কর মহাপাত্র • এগরা |
১০০ দিনের প্রকল্পে কোনও শ্রমিককে দিনে ১৩৬ টাকার বেশি পারিশ্রমিক দেওয়া যাবে না সম্প্রতি মহকুমা, ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরে জেলাশাসকের পাঠানো এই নির্দেশ ঘিরে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভ ছড়িয়েছে। উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন স্তরের বৈঠকে প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও পঞ্চায়েত প্রধানেরা ক্ষোভ জানিয়েছেন। এ নিয়ে বিডিওদের একাংশ উষ্মাও প্রকাশ করেছেন। তাঁরা জানান, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের আইনেই বলা রয়েছে, বেশি কাজ করলে বেশি টাকা আর কম কাজ করলে কম টাকা মিলবে। জব কার্ডের পিছনেও লেখা রয়েছে একই কথা। তাঁরা আরও জানান, এই নির্দেশ কার্যকরী হলে শ্রমিকদের মধ্যে বিক্ষোভ দেখা দেবে, এমনকী শ্রমিক পেতেও সমস্যা হবে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করাই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি বলেন, “রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে পাঠানো নির্দেশই জেলা থেকে পাঠান হয়েছে। নির্দেশ না মানলে প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
প্রশাসন ও ত্রিস্তর পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, এতদিন পঞ্চায়েত সমিতি বা গ্রাম পঞ্চায়েত বেশি শ্রমিক পাওয়া ও দ্রুত কাজ শেষ করা নিশ্চিত করতে আইন অনুযায়ী বেশি কাজ করলে বেশি পারিশ্রমিক নীতি অবলম্বন করেছেন। সে ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, ১৩৬ টাকা পারিশ্রমিকের জন্য নির্দিষ্ট কাজের থেকে অনেক বেশি কাজ করে দৈনিক সাড়ে তিনশো টাকা পর্যন্ত উপার্জন করেছেন ২০-৪০ বছর বয়সী অনেক শ্রমিক। নির্দিষ্ট ৮ ঘণ্টা কাজও করতেন তাঁরা। কিন্তু জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, একদিনে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়ার সুযোগ নিয়ে পঞ্চায়েতের একাংশ ও পঞ্চায়েত সমিতি আর্থিক দুর্নীতি করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মাস্টার রোলে বেশি কাজের সময় বা বেশি কাজ দেখিয়ে টাকা তোলা হচ্ছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দল দলীয় কর্মী-সমর্থকদের এ ভাবে টাকা পাইয়ে দিচ্ছে। এ ছাড়া একজন শ্রমিক বেশি কাজ করার ফলে অন্যদের কাজ পাওয়ার সুযোগ কমে যাচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করিয়ে শ্রম আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে। অনেক শ্রমিকের আবার অভিযোগ, শ্রম আইনানুযায়ী তারা ন্যায্য পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, একটি পঞ্চায়েত এলাকায় জবকার্ডের মাধ্যমে যত জন কাজের সুযোগ পান, প্রকৃতপক্ষে কাজ করতে আসেন তার ৪০-৫০ শতাংশ। ফলে কার্ডের সংখ্যার অনুপাতে গড় কাজের দিন অনেক কম হয়। ফলে বেশি জনকে কাজে আনতে এই নির্দেশ কিছুটা হলেও বেশি সহায়তা করবে।
জেলাশাসকের পাঠানো নির্দেশে বলা হয়েছে, প্রতিটি প্রকল্পেই শ্রমিকদের দৈনিক মজুরির বিষয়টিতে নজরদারি করা হবে। দেখতে হবে কেউ যেন ৮ ঘণ্টার বেশি কাজ না করে এবং ১৩৬ টাকার বেশি না পায়।
জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন বলেন, “নির্দেশ কার্যকর হলে জেলার উন্নয়ন ধাক্কা খাবে। এই নির্দেশ বাস্তবোচিত নয়।” |
|
|
|
|
|