|
|
|
|
পণ্য খালাস নিয়ে জট, ফের বিক্ষোভ হলদিয়ায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া ও কলকাতা |
পণ্য খালাস করা নিয়ে হলদিয়া বন্দরে সমস্যা চলছেই। মঙ্গলবার দুপুর থেকে বন্দরের বাইরে চিরঞ্জীবপুরে বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘অপারেশনাল বিল্ডিং’ ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান ‘অন শোর হ্যান্ডলিং এজেন্সি’র কর্মীদের একাংশ। রাত ৯টা পর্যন্ত অফিসের চারটি বিভাগের আধিকারিক ও কর্মীদের আটকে রেখে বিক্ষোভ চলে।
সমস্যার মূলে রয়েছে বন্দরের ২ ও ৮ নম্বর বার্থে বেশি সংখ্যক জাহাজ নোঙর করানোর সিদ্ধান্ত। হাইকোর্টের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই দু’টি বার্থে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পণ্য খালাসের দায়িত্বে রয়েছে ‘এবিজি’ গোষ্ঠী। অন্য বার্থগুলিতে এই কাজ করে অন্য কয়েকটি সংস্থা। ‘এবিজি’র বার্থে বেশি জাহাজ ভিড়লে তাঁরা কাজ হারাবেন, এই আশঙ্কায় অন্য সংস্থাগুলির শ্রমিকেরা এ দিন বিক্ষোভ দেখান বলে অভিযোগ। তাঁরা বা তাঁদের সংস্থার কর্তারা এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়ে কর্মী-আধিকারিকদের আটকে রেখেছেন এই অভিযোগে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা শ্যামল আদকের নামে থানায় এফআইআর করেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি, সিদ্ধান্ত হয় এবিজি’র বার্থের পরিবর্তে অন্য বার্থে জাহাজ নোঙর করবে।
শ্যামল আদক অবশ্য বলেন, “বন্দর কর্তৃপক্ষের ডাকেই বৈঠক করতে গিয়েছিলাম। অভিযোগ মিথ্যা।” তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, “প্ররোচিত হয়েই বন্দর কর্তৃপক্ষ মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আগামী ২১ সেপ্টেম্বর বন্দরের গেটে সভা করে আমি যা বলার বলব।”
প্রথমে স্থির হয়েছিল, ২ নম্বর বার্থে নোঙর করবে ডারবান থেকে ম্যাঙ্গানিজ নিয়ে আসা ‘এপিজে শিরিন’ নামে একটি জাহাজ। আর ৮ নম্বর বার্থে ভিড়বে অস্ট্রেলিয়া থেকে কোকিং কোল বাঝাই হয়ে আসা ‘এম ভি ন্যানোস’। কিন্তু বন্দর সূত্রের খবর, এ দিনের বিক্ষোভের পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ‘এপিজে শিরিন’ বি-৯ বার্থে এবং ন্যানোস ৪-বি বার্থে নোঙর করবে।
নাব্যতার অভাবে দীর্ঘ দিন ধরে হলদিয়া বন্দর ধুঁকছে। প্রতিটি বার্থেই জাহাজের যাওয়া-আসা কমেছে। এরই মধ্যে উঠেছে রাজনৈতিক চাপের অভিযোগও। ‘এবিজি’র দাবি, যেখানে সাড়ে তিনশো শ্রমিক দিয়ে পণ্য খালাসের কাজ করা যায়, শ্রমিক ইউনিয়নগুলির চাপে তাদের প্রায় হাজার শ্রমিক নিয়োগ করতে হয়েছে। তার উপরে বন্দর কর্তৃপক্ষ চুক্তি অনুযায়ী, পণ্য খালাসের প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেননি। ফলে, দু’বছরে সংস্থাটির ৩৪ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। তার জেরে তারা কাজ বন্ধের নোটিস দিলে হলদিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। গত ১২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, ২ ও ৮ নম্বর বার্থে বেশি সংখ্যক জাহাজ নোঙর করাতে হবে। শুক্রবার বন্দর কর্তৃপক্ষ ও অছি পরিষদের বৈঠকেও ওই দু’টি বার্থে অধিকাংশ জাহাজ ভেড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। তার পরেই এ দিনের বিক্ষোভ এবং সিদ্ধান্ত বদল। |
|
|
|
|
|