|
|
|
|
কেলেঘাই সংস্কার |
সেচ কর্তাদের হেনস্থা, নালিশ তৃণমূল প্রধানের ছেলের নামে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
সেচ দফতরের আধিকারিকদের হেনস্থা করে, কেলেঘাই-কপালেশ্বরী নদী সংস্কার প্রকল্পের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না-ভগবানপুর সীমানা এলাকার চাবুকিয়া ঘাটের কাছে ওই ঘটনার ব্যাপারে স্থানীয় থানা থেকে পুলিশ সুপার, জেলাশাসক পর্যন্ত অভিযোগ হয়েছে।
তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন অবশ্য বলেন, “ঘটনার সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই। সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় যারাই জড়িত থাকুক, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে বলা হয়েছে।” আর সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার বক্তব্য, “ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছি। সেই সঙ্গে আমার আবেদন, কারও কোনও বক্তব্য থাকলে জনপ্রতিনিধিদের জানান, আমাকেও জানাতে পারেন। কিন্তু দয়া করে কাজে বাধা দেবেন না। কারণ, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ৩০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন।”
জেলাশাসক পারভেজ আহমেদ সিদ্দিকি বলেন, “অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ সুপারকে বলেছি।” পুলিশ সুপার সুকেশ কুমার জৈনের আশ্বাস, “অভিযোগের তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”৬৫০ কোটি টাকার কেলেঘাই-কপালেশ্বরী-বাগুই অববাহিকা নিকাশি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে গত এপ্রিলে। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার অভিযোগ, কাজ শুরু করার পরেই নানা অজুহাতে তাদের থেকে টাকা আদায়, টাকা না পেলে হুমকি, সশস্ত্র হামলার মতো ঘটনাও ঘটছে। গোলমালের জেরে কয়েকটি জায়গায় কয়েকদিন কাজও বন্ধ ছিল। আপাতত কেলেঘাইয়ের প্রধান প্রবাহ পথে চ্যানেল খননের কাজ চলছে। এই অংশের দু’দিকে রয়েছে ভগবানপুর ১, ময়না ও সবং ব্লকের কিছু এলাকা। এই সব এলাকাতেই রাখা হচ্ছে কাটা মাটি।
সেচ দফতর সূত্রের খবর, ওই প্রকল্পে সাব-কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করছেন মহম্মদপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান চাঁদহরি প্রধানের ছেলে নান্টু প্রধান। কাটা মাটি দূরে সরানোই তাঁর কাজ। জেলা সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার তাপস মাইতি জানান, দিন কয়েক আগে তাঁরা খবর পান, নান্টু দলবল নিয়ে কাটা মাটি ফের নদীখাতে ফেলছেন। বৃষ্টির সময় নদীখাতে ফেলা মাটি সহজে ধুয়ে যাওয়ায় খাটনি বাঁচবে বলেই এমন করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। কাটা মাটি মাপতে এ দিন বেলা পৌনে ১১টা নাগাদ নির্বাহী বাস্তুকার তাপসবাবু, মহকুমা সেচ আধিকারিক (অনুসন্ধান ১) চিরঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় ও প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার ইঞ্জিনিয়ার-সহ জনা দশেকের একটি দল চাবুকিয়া ঘাটে যায়। তাপসবাবুর অভিযোগ, “নান্টু প্রধান বাঁশ নিয়ে প্রথমে মহকুমা সেচ আধিকারিকের উপরে হামলা চালান। বাধা দিতে গেলে আমার উপরেও হামলা হয়। মাটি মাপলে প্রাণে মারার হুমকি দেন নান্টু। ওই পরিস্থিতিতে ফিরে আসতে বাধ্য হই।”
নিজেকে তৃণমূলের মহম্মদপুর ১ অঞ্চল সভাপতি হিসেবে দাবি করে নান্টু অবশ্য বলেন, “কেলেঘাই নদীর মাটি তুলে নদীতীরের চাষজমিতে রাখা হয়েছে। এ জন্য চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। এ দিন চাষিদের সঙ্গে নিয়ে সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে সে বিষয়েই কথা বলতে গিয়েছিলাম। তখন বচসা হয়েছে মাত্র। হামলার অভিযোগ একেবারে মিথ্যা।” তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন জানিয়েছেন, নান্টু প্রধান দলের অঞ্চল সভাপতি নন। সেচ দফতর জানিয়েছে, মাটি রাখার জন্য চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি তারা দেয়নি। |
|
|
|
|
|