ফেডারেশনের সঙ্গে যুদ্ধে লি-কেও টানার চেষ্টায় মহেশ
আইটিএ-র বিরুদ্ধে মঙ্গলবার মুম্বইয়ে মহেশ ভূপতির একের পর এক বোমাবর্ষণের মধ্যে টেনিসমহলের কাছে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ, অনিল খন্নাকে একহাত নিতে গিয়ে লিয়েন্ডার পেজের প্রতি তাঁর একদা ডাবলস পার্টনারের ঘুরিয়ে নমনীয় মনোভাব প্রকাশ। মহেশ এ দিন প্রকাশ্যে এমনও মন্তব্য করেছেন যে, অলিম্পিক-বিতর্কের সময় তাঁকে আর লিয়েন্ডারকে একটা ঘরে বসিয়ে তাঁদের ঝগড়া মেটানোর বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেননি এআইটিএ-র একজন কর্তাও। গত দু’-এক দিনে টেনিসমহলের কেউ কেউ যখন প্রশ্ন তুলেছেন যে, সানিয়াকে ছাড়া অলিম্পিকে মিক্সড ডাবলসে খেলতে না চেয়ে লিয়েন্ডারও এক অর্থে ফেডারেশনের বিরুদ্ধাচারণ করেছিলেন, তখন স্বয়ং মহেশ এ দিন বলেন, “লিয়েন্ডার পেশাদার প্লেয়ার। একজন পেশাদার হিসেবে নিজের সেরাটা দেওয়ার জন্য যা করা দরকার সেটাই ও করেছিল।”
লিয়েন্ডার গত কালই ওয়ার্ল্ড টিম টেনিসে ওয়াশিংটন ক্যাসেলসের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পিছনে বড় অবদান রেখেছেন। ভেনাস উইলিয়ামসকে নিয়ে মিক্সড ডাবলসে জিতে লিয়েন্ডারই ফাইনালে দু’দলের স্কোর সমান করেন। তার পরে শেষ সিঙ্গলসে ভেনাস জিতে ট্রফি আনেন। এ সবের মধ্যেই লিয়েন্ডারের ঘনিষ্ঠমহলের সূত্রের খবর, তিনি এবং ভেস পেজ দু’জনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এআইটিএ বনাম মহেশদের লড়াইয়ে নিজেরা জড়াবেন না। কোনও প্রতিক্রিয়া দেবেন না মিডিয়ায়। এ দিন মুম্বই থেকে ইনদওর যাওয়ার পথে ভেস পেজ মোবাইলে বললেন, “এটা সম্পূর্ণ অন্যদের ব্যাপার। অন্যের ব্যাপারে লিয়েন্ডার বা আমি নাক গলাব কেন? তা ছাড়া লিয়েন্ডারের গত সপ্তাহে ডেভিস কাপ না খেলা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছিল তার স্পষ্ট ব্যাখ্যাও আশা করি সবাই ফেডারেশন থেকে পেয়ে গিয়েছে।”
আবার জয়দীপ মুখোপাধ্যায়ের মতো প্রাক্তন টেনিস ব্যক্তিত্বদের কেউ কেউ মহেশের এ দিনের চাঞ্চল্যকর সাংবাদিক সম্মেলনে করা নানান মন্তব্যের মধ্যে কিছু কিছুকে সমর্থন করছেন। নরেশ কুমার দিল্লিতে চিকিৎসাধীন থাকায় এবং রামনাথন কৃষ্ণন সপরিবার চেন্নাইয়ের বাইরে থাকায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। কিন্তু রাতের দিকে রমেশ কৃষ্ণন ফোনে বললেন, “শুধু টেনিস নয়, সব খেলার ফেডারেশনেই পরিচালন সমিতিতে মাঝেমধ্যে পরিবর্তন ঘটা ভাল। তাতে নতুন নতুন চিন্তা, আরও আধুনিক ভাবনার আমদানি হয়। যার সুবাদে সেই খেলাটারই উন্নতি ঘটার সুযোগ থাকে আমাদের দেশে।” জয়দীপ অবশ্য সরাসরি বললেন, “মহেশ ঠিকই বলেছে। এআইটিএ-তে কোনও কোনও কর্তা বহু বছর ধরে আছে। কিন্তু সেই অনুযায়ী কাজের কাজ হয়নি। বরং আমি বলব, কার্যকরী কমিটিতে প্লেয়ারদের তরফে একজন প্রতিনিধি রাখা উচিত। তাতে প্লেয়ারদের সুবিধে-অসুবিধে, সমস্যাগুলো আরও ভাল ভাবে বোঝা সম্ভব। বিচার করা সম্ভব। এটিপি-টা প্লেয়াররাই চালায়। খুব ভাল ভাবেই।”

মহেশ বনাম অনিল
• “এআইটিএ-র নির্বাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাব।”
• “এটা নির্বাসন নয়। আমাদের মনে হয়েছে, ওদের দু’জনকে আগামী দু’বছর ভারতীয় দলে দরকার নেই।”
• “ফেডারেশনই লিয়েন্ডার আর আমার মধ্যে ঝগড়া লাগিয়েছে।”
• “প্রাপ্তবয়স্ক এবং পেশাদার মানুষের থেকে এ রকম মন্তব্য অপ্রত্যাশিত।”
• “অনিলের কমিটি কুড়ি বছরে একটাও পেশাদার প্লেয়ার দিতে পারেনি।”
• “বছরে তিন কোটি টাকা প্রত্যেক জাতীয় প্লেয়ারের প্রস্তুতিতে ফেডারেশন খরচ করে। মহেশ-বোপান্নাও তালিকায় আছে।”

মহেশ আদালতে গেলে এআইটিএ সমস্যায় পড়বে কি না তা নিয়েও কেউ কেউ আশঙ্কায় রয়েছেন। ফেডারেশনের যথেষ্ট ঘনিষ্ঠ এক প্রাক্তন টেনিস তারকা বলছিলেন, “এআইটিএ এমনিতে আঁটঘাট বেঁধেই মহেশ-রোহনকে ব-কলমে সাসপেন্ড করেছে। কার্যকরী কমিটি জুলাইয়ে, সাধারণ সভা সেপ্টেম্বরে, সব শেষে ফেডারেশনের ‘এথিক্স কমিটি’ তার দু’দিন পর সব মিলিয়ে তিন দফার বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নিশ্চয়ই আইনজীবী মহলের মতামত, পরামর্শ নিয়েই এ রকম কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে এআইটিএ। কিন্তু পাশাপাশি একটা ফাঁকও রেখে ফেলেছে ফেডারেশন। মহেশ-বোপান্নার কাছে পাঠানো শাস্তির চিঠিতেও এআইটিএ ওদের দু’জনের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে কেন ওদের বিরুদ্ধে এ রকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না তার কারণ জানাতে। যার মানে শাস্তির চিঠিতে মহেশদের শো-কজ করা হয়েছে। যেটা হাস্যকর। মহেশদের কাছে যেটা যুদ্ধের পরের রাউন্ডে বড় অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.