|
|
|
|
আইনজীবীর চিঠি, বোর্ড মিটিং স্থগিত খড়্গপুরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
কলকাতা হাইকোর্টের এক আইনজীবীর চিঠির প্রেক্ষিতে স্থগিত রাখা হল খড়্গপুর পুরসভার ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বোর্ড মিটিং। সব মিলিয়ে ১৯ টি বিষয় নিয়ে এই মিটিংয়ে আলোচনার কথা ছিল বলে পুরসভা সূত্রে খবর। এর মধ্যে উন্নয়নের টাকা ওয়ার্ড ভিত্তিক ভাগ করা, কয়েকটি জলের পাম্প মেরামত করার মতো বিষয়গুলিও ছিল। আগামী শনিবার এই মিটিং হবে বলে পুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। খড়্গপুরের পুরপ্রধান জহরলাল পাল বলেন, “মঙ্গলবার সকালেই আইনজীবীর চিঠিটি হাতে পেয়েছি। চিঠিতে বোর্ড মিটিং না করার অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কারণ, পুরসভার বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। সেই মতোই বোর্ড মিটিং স্থগিত রাখা হয়েছে।” তাঁর বক্তব্য, “বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আজকের মিটিংয়ে আলোচনার সম্ভাবনা ছিল। পরবর্তী মিটিংয়ে এই বিষয়গুলি নিয়েই আলোচনা হবে।”
খড়্গপুর পুরসভার অনাস্থা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন কংগ্রেস কাউন্সিলরেরা। ৭ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের করা হয়। প্রসঙ্গত, পুর-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ এনে গত ১৪ অগষ্ট তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল কংগ্রেস। শুরুতে এই বোর্ডকে সমর্থন করেছিল কংগ্রেস। পরে সেই সমর্থন প্রত্যাহার করা হয়। অনাস্থা প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে গত ২৭ অগষ্ট পুরসভায় বোর্ড মিটিং হয়। এই মিটিংয়ে ঠিক কী হয়েছে, মিটিংটি বৈধ না অবৈধ, তা নিয়েই ধোঁয়াশা রয়েছে। কংগ্রেসের দাবি, বৈধ ভাবেই মিটিং হয়েছে। অনাস্থা ভোটে হেরে গিয়েছেন পুরপ্রধান জহরলাল পাল। অন্যদিকে, তৃণমূলের বক্তব্য, অবৈধ ভাবে মিটিং হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে টালবাহানা চলে। শেষমেশ ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে পুর-দফতর থেকে এ নিয়ে একটি নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়। যেখানে জানানো হয়, অনাস্থা সংক্রান্ত বৈঠকের বিষয়টি লিগ্যাল সেলের বিবেচনাধীন। যতক্ষন না সেল কোনও মতামত দিচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ২৭ অগষ্টের আগে পুরসভা যেমন চলছিল, তেমনই চলবে। অর্থাৎ, জহরলাল পাল পুরপ্রধানের কাজকর্ম চালাবেন। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, বিষয়টি যখন লিগ্যাল সেলের বিবেচনাধীন, তখন উপপুরপ্রধান তুষার চৌধুরিকেই পুরপ্রধানের কাজ চালানোর নির্দেশ দেওয়াই উচিত ছিল। তবে পুর- দফতর তা করেননি।
পুরসভা সূত্রে খবর, ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওই নির্দেশ আসার পরপরই বোর্ড মিটিং ডাকার তোড়জোড় শুরু করেন পুর- কর্তৃপক্ষ। ৭ সেপ্টেম্বর বোর্ড মিটিং ডাকার সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত মতো মঙ্গলবার বোর্ড মিটিং হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, এদিন সকালেই হাইকোর্টের আইনজীবী পুষ্পল চক্রবর্তীর একটি চিঠি আসে পুরপ্রধানের কাছে। যেখানে বোর্ড মিটিং না- করার অনুরোধ জানানো হয়। কংগ্রেস সূত্রে খবর, হাইকোর্টে দায়ের করা মামলার শুনানি মঙ্গলবারই শুরু হয়েছে। সবদিক খতিয়ে দেখে এদিন বোর্ড মিটিং না করার সিদ্ধান্ত নেন পুর-কর্তৃপক্ষ। তবে নির্দ্ধারিত সময়ের মধ্যে পুরসভায় চলে এসেছিলেন অধিকাংশ তৃণমূল কাউন্সিলর। এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা অনিতবরণ মন্ডল সহ বামফ্রন্টের ৪ জন কাউন্সিলর। ছিলেন পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার (ইও) বাসুদেব পালও। পরে আলোচনার প্রেক্ষিতে মিটিংটি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এক্সিকিউটিভ অফিসার বলেন, “বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর এসেছিলেন। তবে আইনজীবীর ওই চিঠির প্রেক্ষিতে মিটিংটি স্থগিত রাখা হয়েছে। শনিবার এই মিটিং হবে।” |
|
|
|
|
|