নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
বর্ষার মরসুমে সে ভাবে কাজের ক্ষেত্র না থাকায় দু’মাস ধরে হুগলি জেলায় ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পটি প্রায় থমকে রয়েছে। কাজ পাচ্ছেন না শ্রমিকেরা। তাঁদের অভিযোগ, বর্ষায় করার মতো উপযুক্ত কাজ চিহ্নিত করতে পারেনি প্রশাসন। সমস্যার কথা মেনে নিয়ে প্রশাসন জানিয়েছে, বর্ষায় শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার জন্য তিনটি প্রকল্প নির্দিষ্ট করা হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে বলে তাদের আশ্বাস।
জেলার ১৮টি ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের বার্ষিক কর্ম পরিকল্পনায় এই সময়টা ফাঁকা রাখা হয়। কেননা, বর্ষায় মাটির কাজ করার উপায় থাকে না। বস্তুগত উপকরণের মাধ্যমে কাজে বাধা-নিষেধ রয়েছে। আবার পুকুর, নালা, ডোবা সবই জলে ভরে থাকে। তা ছাড়া, আমন ধান রোপণ, পাট কাটা ইত্যাদি কাজে ব্যস্ত থাকেন শ্রমিকেরা। এই সব কারণে বর্ষার মরসুমে ওই প্রকল্পে প্রচলিত কাজগুলি করা হয় না।
ওই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের জেলার নোডাল অফিসার পুলক সরকার বলেন, “জেলাশাসকের অনুমোদন মেলায় বর্ষায় শ্রমিকদের কাজ দেওয়ার মতো তিনটি প্রকল্প নির্দিষ্ট করা হয়েছে সামাজিক বনসৃজন, সব্জি বাগান এবং ফলের বাগান তৈরি। কাজগুলি খুব শীঘ্রই শুরু হবে।” জেলাশাসক শ্রীপ্রিয়া রঙ্গরাজন বলেন, “দু’এক দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাচ্ছে। বর্ষার জন্য ব্যক্তিগত উপকারদায়ী প্রকল্পে আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। শুধু এতেই দেড় লক্ষের বেশি শ্রমিক কাজ পাবেন। তা ছাড়া, উপকরণের (মেটেরিয়াল) কাজও শুরু করা হচ্ছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যক্তিগত উপকারদায়ী প্রকল্পের আওতায় পড়ে সব্জি-বাগান এবং ফলের বাগান তৈরি। হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সব শ্রমিকদের এ পর্যন্ত বছরে গড়ে ২০ দিন কাজ হয়েছে, তাঁরা এই প্রকল্প রূপায়ণের সুযোগ পাবেন। ব্যক্তিগত ভাবে যাঁরা ফলের বাগান করবেন, তাঁদের ৫টি ফলের গাছ দেওয়া হবে। সেই গাছ রোপণ এবং প্রাথমিক তদারকির জন্য সেই শ্রমিককে তিনটি শ্রমদিবসের মজুরি দেওয়া হবে। এক কাঠা বা দু’কাঠা জমির উপরে সব্জি-বাগান করলে সেই পরিবারটি ৩৫টি শ্রমদিবসের মজুরি পাবেন।
কিন্তু এখনও কোনও কাজের ক্ষেত্র চালু না হওয়ায় শ্রমিকদের অনেকেই বেকার-ভাতা পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, কাজ চেয়ে লিখিত আবেদন কেউ করেননি। আইন অনুযায়ী লিখিত আবেদনের পরে ১৫ দিনের মধ্যে কাজ দেওয়া না গেলে বেকার-ভাতা দিতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পটি চালু হয় ২০০৫ সালে। হুগলিতে পরের বছর। গ্রামীণ অর্থনীতির বুনিয়াদ সুদৃঢ় করাই প্রকল্পটির প্রাথমিক উদ্দেশ্য। গত দু’বছরে জেলায় এই প্রকল্পে কাজের হিসেব যথাক্রমে ২৭ দিন এবং ৩৫ দিন। এ বছর কাজের গতি কিছুটা বেড়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ পর্যন্ত প্রায় ২৪ দিন কাজ হয়েছে। |