নিজস্ব সংবাদদাতা • জগৎবল্লভপুর |
ব্লক প্রশাসনের পাঠানো বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা এবং প্রতিবন্ধী ভাতার চেক ব্যাঙ্কে ভাঙান গেল না।
জগৎবল্লভপুর ব্লক প্রশাসন থেকে এই চেক পাঠানো হয়েছিল কয়েকটি ডাকঘরে। তারা চেকগুলি ভাঙানোর জন্য পাঠায় ব্যাঙ্কে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে চেকগুলি ব্যাঙ্কে না-পাঠানোর ফলেই সেগুলি ভাঙানো যায়নি। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ব্লক প্রশাসন ও ডাকঘর কর্তৃপক্ষের মধ্যে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। এ দিকে চেকগুলি না-ভাঙাতে পেরে কয়েকশো গরিব মানুষ ভাতা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হলেন। টাকা নিয়ে আশঙ্কায় আছেন তাঁরা।
সমস্যাটি দেখা দিয়েছে এই ব্লকের বড়গাছিয়া ১ এবং ২, হাঁটাল, জগৎবল্লভপুুর ১ এবং ২ ও শিয়ালডাঙা এই ছ’টি পঞ্চায়েতে। প্রায় ছ’মাস ধরে এই পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু গরিব মানুষ বার্ধক্য-ভাতা, বিধবা-ভাতা এবং প্রতিবন্ধী-ভাতা পাচ্ছেন না। তাঁদের প্রত্যেকের মাসে ৪০০ টাকা করে পাওয়ার কথা। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে ছ’টি পঞ্চায়েতে মোট ৫ লক্ষ ৭৩ হাজার ৮০০ টাকা পাঠানো হয় ব্লক প্রশাসনের কাছে।
সেখান থেকে ছ’টি পৃথক চেকের মাধ্যমে বড়গাছিয়া উপ-ডাকঘরে পাঠানো হয় ৪ লক্ষ ৯৯ হাজার, চারটি পৃথক চেকের মাধ্যমে জগৎবল্লভপুর উপ-ডাকঘরে পাঠানো হয় ৫২ হাজার ৮০০ এবং ১টি চেকের মাধ্যমে মুন্সিরহাট উপ-ডাকঘরে পাঠানো হয় ২২ হাজার টাকা। তিনটি ডাকঘর থেকে চেকগুলি পাঠানো হয় ব্যাঙ্কে। চেকগুলি ভাঙানোর পরে টাকা ডাকঘরে এলে সেখান থেকে ভাতাপ্রাপকেরা গিয়ে তাঁদের প্রাপ্য বুঝে নেবেন।
কিন্তু অগস্ট মাসের মাঝামাঝি সংশ্লিষ্ট ডাকঘরগুলিতে ভাতা প্রাপকেরা গেলে তাঁদের জানানো হয়, ব্যাঙ্কে পাঠানো হলেও চেকগুলি ভাঙানো যায়নি। ফলে ভাতার টাকা দেওয়া যাবে না। তিনটি ডাকঘরের তরফ থেকেই ওই সব চেক ব্লক প্রশাসনের কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
তিনটি ডাকঘরের কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এর জন্য ব্লক প্রশাসনের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য চেকগুলিতে যে তারিখ দেওয়া হয়েছে তা থেকে তিন মাস পর্যন্ত সেগুলিকে ভাঙানো যায়।
কিন্তু তাঁদের কাছে চেকগুলি পাঠানো হয়েছিল তিন মাস শেষ হতে যখন মাত্র দু’তিন দিন বাকি রয়েছে সেই সময়ে। ফলে ব্যাঙ্কে চেকগুলি পাঠানো হলেও সেগুলি শেষ পর্যন্ত বাউন্স করে।
অন্য দিকে, ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে পাল্টা অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে ডাকঘরগুলির দিকে। বিডিও সলমন হুসনি বলেন, “যথেষ্ট সময় হাতে না-রেখেই চেকগুলি যে তাঁদের কাছে পাঠানো হয়েছে সে কথা জানা সত্ত্বেও ডাকঘরের তরফে চেকগুলি জমা নেওয়া হল কেন? তখনই সেগুলি ফেরত পাঠালে আমি তারিখ বাড়িয়ে দিতাম। তা হলে আর সমস্যা হত না।” তবে ফের নতুন করে চেক লিখে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও।
আপাতত সেটাই স্বান্তনা গরিব মানুষগুলির। |