|
|
|
|
ঠিক এক বছর, ফের কাঁপল সিকিমের পাহাড় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
টানা বৃষ্টির আবহে কয়েক মুহূর্তের তীব্র ঝাঁকুনি। মঙ্গলবার (১৮ তারিখ) সন্ধ্যায় সিকিম পাহাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা কাঁপিয়ে যেন ভূমিকম্পের ‘বর্ষবরণ’ করল প্রকৃতি। কাকতালীয় হলেও গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বরের সন্ধ্যাতেও প্রবল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল সিকিম এবং দার্জিলিং-সহ উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত বারের মতো এ দিনের কম্পনের উৎসস্থলও উত্তর সিকিমের পাহাড়ি এলাকা!
এ দিন ভূমিকম্পের বিস্তার সীমাবদ্ধ ছিল সিকিমেই। স্থানীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, এ দিন সন্ধ্যা ৫টা ৫৬ মিনিটে ভূমিকম্প হয়ছ সিকিমে। গত বছর এই দিনেই ৬টা ১০ মিনিটে কেঁপে ওঠে সিকিম ও উত্তরবঙ্গ। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে এ দিনের কম্পনের মাত্রা ছিল ৪.১.। কম্পন ৩-৪ সেকেন্ড স্থায়ী হয়। আবহাওয়া দফতরের বিশ্লেষণে এই কম্পন মাত্রা সামান্য হলেও, গ্যাংটক থেকে মঙ্গন সর্বত্রই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ভূমিকম্পের পরেই এলাকাবাসী নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি শুরু করে দেন। গ্যাংটকের মহাত্মা গাঁধী মার্গে বেশ কয়েক হাজার আতঙ্কিত মানুষ ভিড় জমান। কেউ কেউ আবার কান্নাকাটি জুড়ে দেন। কেউ দু’হাত তুলে প্রার্থনা করতে শুরু করেন। ভূমিকম্পের সঙ্গে সঙ্গে সিকিমের বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। ২০ মিনিট পরে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়। তবে টেলিফোন, মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। রাত অবধি তা পুরোপুরি ঠিক হয়নি। রাত অবধি হতাহতের খবর নেই।
এ যাত্রা অবশ্য উত্তরবঙ্গে কম্পন টের পাওয়া যায়নি। কিন্তু ভূমিকম্পের খবর ছড়িয়ে পড়তেই দার্জিলিং, শিলিগুড়ি-সহ গোটা উত্তরবঙ্গই কিছুক্ষণের জন্য আলোড়িত হয়। পাড়ার মোড়ে, ক্লাবে, বাড়িতে কৌতূহলীদের চোখ টিভির পর্দায় ছিল। তৃণমূল কেন্দ্র থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করবে কি না, তা জানতে সবার উৎসাহ ছিল তুঙ্গে। কিন্তু, ভূমিকম্পের খবর মিলতেই সব চাপা পড়ে গেল। উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ বাসিন্দাই তখন এক বছর আগের সেই দুঃস্বপ্নের স্মৃতিচারণায় ব্যস্ত। জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ি শহরের বিভিন্ন বাড়িতে সন্ধ্যার পরে শাঁখ বাজানোর শব্দ পাওয়া গিয়েছে।
গত বছর ১৮ সেপ্টেম্বরের ভূমিকম্পে ৮০ জনের মৃত্যু হয়। ৩৫০ জন গুরুতর আহত হয়। প্রচুর বহুতল ধসে পড়ে। রাস্তা ভেঙে দীর্ঘদিন সিকিম বিপর্যস্ত হয়েছিল। এ দিন গ্যাংটক থেকে ৩০-৩৫ কিলোমিটার দূরে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল।
সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “দার্জিলিং ও সিকিম হিমালয়ের বিস্তীর্ণ এলাকা বরাবরই ভূমিকম্পপ্রবণ। তবে একই দিনে তা হওয়াটা কাকতালীয়। কম্পনের
মাত্রা সামান্য হলেও গত বছরের ভয়াবহ স্মৃতি এখানকার বাসিন্দাদের মনে এখনও টাটকা। তাই এ বারের কম্পনও তাঁদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর ছিল যথেষ্ট।” |
|
|
|
|
|