আপস নয় সংস্কারে
শেষ চেষ্টা করতে চায় কংগ্রেস
ক্ষুব্ধ হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে এতটা কড়া পদক্ষেপ করবেন, তা ভাবতে পারেননি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা। অনেকেই ভেবেছিলেন, শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করলেও সরকারকে সমর্থন জুগিয়ে যাবেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু দিনের শেষে চূড়ান্ত অস্বস্তিতে কংগ্রেস। দলের শীর্ষ নেতারা মানছেন, তৃণমূল সরলেও এই মুহূর্তে সরকারের তেমন বড় বিপদ নেই ঠিকই, কিন্তু এখন মুলায়ম-মায়াবতীর উপরে নির্ভরতা বাড়বে। যা মোটেই স্বস্তির বিষয় নয়।
এই পরিস্থিতিতে মমতাকে বোঝানোর একটা শেষ চেষ্টা করতে চায় কংগ্রেস। তাতে সমিল হতে পারেন সনিয়া গাঁধীও। কিন্তু সংস্কারের পথ থেকে (বিশেষ করে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির সিদ্ধান্ত) যে সরে আসা হবে না, তা-ও স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে কংগ্রেস সূত্রে।
এ দিন দিল্লিতে সাত রেসকোর্স রোডে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন সনিয়া। ডেকে পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকেও। পরে দশ জনপথ ঘনিষ্ঠ কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা জানান, মমতার হুঙ্কার সত্ত্বেও আর ফিরে দেখার প্রশ্ন নেই। তা ছাড়া সংস্কারের জন্য সরকার যে পদক্ষেপ করছে, তা শিল্পমহল ও বিনিয়োগকারীদের কাছে প্রশংসিত হচ্ছে।
মনমোহন-সনিয়ার সঙ্গে বৈঠকে চিদম্বরম আজ ফের জানিয়ে দিয়েছেন, রাজকোষ ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গেলে ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি বা সংস্কারের অন্য সিদ্ধান্তগুলি থেকে ফেরার উপায় নেই। পরে কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক দিগ্বিজয় সিংহ প্রকাশ্যেই বলেন, “খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি লগ্নির সিদ্ধান্ত মানুষের হিতের কথা ভেবেই নেওয়া হয়েছে। সরকার যে ভাবে পরমাণু চুক্তির সিদ্ধান্তে অটল ছিল, এ ক্ষেত্রেও তেমনই অনড় থাকা উচিত।”
প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, এ বার তিস্তা চুক্তি সম্পাদনের জন্যও সক্রিয় হবেন মনমোহন। দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করবে সরকার।
সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে এখনই উদ্বিগ্ন না হলেও সনিয়া-মনমোহনের পক্ষে আগামী যে বিশেষ সুখের নয়, তা ভালই বুঝছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিশেষত, সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়লে লোকসভা ভোটের আগে বিরোধী জোটের নতুন সমীকরণ গড়তে নেমে পড়বে বিজেপি। ইতিমধ্যেই সরকারের শরিক হয়েও ডিএমকে ২০ তারিখের বন্ধকে সমর্থন করেছে। তবে কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, এই সিদ্ধান্ত নেহাতই রাজ্য-রাজনীতির কারণে।
যদিও কংগ্রেসের অনেকেই বলছেন, লোকসভা ভোট আরও দেড় বছর বাকি। সংস্কারের মাধ্যমে দেশকে বৃদ্ধির পথে ফেরাতে পারলে হাওয়া ঘুরতেই পারে। সরকারের এক মন্ত্রীর বক্তব্য, জোটে বেশি শরিক থাকা ভাল ঠিকই, কিন্তু এ-ও ঠিক যে, দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের গোড়া থেকে মমতা যে ভাবে কংগ্রেস ও সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন, তা বামেরাও করেননি।
তবে কৌশলগত কারণেই এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ আজ ঘটাতে চায়নি কংগ্রেস। দলের প্রধান মুখপাত্র জনার্দন দ্বিবেদী বলেন, “কংগ্রেস মমতাকে মূল্যবান শরিক বলেই মনে করে। উনি আজ যে সব কথা বলেছেন (কংগ্রেস সম্পর্কে), তার পরেও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ওঁকে শরিক বলেই মানব।”
মমতার আজকের সিদ্ধান্তের পরে পশ্চিমবঙ্গে জোটের সম্ভাব্য ছবি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তবে এখনই তার জবাব না দিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূলের সিদ্ধান্ত দুঃখজনক। দেশের রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুন মমতা।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.