|
|
|
|
|
ত্রিফলা-জবাবে পারিষদের
নাম জড়ালেন ডিজি
নিজস্ব সংবাদদাতা |
|
পুর-কমিশনারকে শো-কজের জবাবে কলকাতা পুরসভার ডিজি (আলো) গৌতম পট্টনায়ক জানালেন,সংশ্লিষ্ট মেয়র পারিষদের সম্মতিতেই নিয়ম ভেঙে ত্রিফলা আলো লাগানোর বরাত দেওয়া হয়েছি। আত্মপক্ষ সমর্থনে তাঁর বক্তব্য: মেয়র পারিষদ (আলো) মনজার ইকবালের অনুমতির ভিত্তিতেই বরাত দেওয়ার কাজ টেন্ডার মেনে করা হয়নি।
ত্রিফলা আলোর বরাত ঘিরে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় মেয়র পরিষদ বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক গৌতমবাবুকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছিল গত সপ্তাহে। ওই বৈঠকে মেয়র পারিষদ (আলো) মনজার ইকবালও উপস্থিত ছিলেন। শো-কজের জবাবে ডিজি সরাসরি পারিষদের নাম জড়িয়ে দেওয়ায় পুর-কর্তৃপক্ষ স্বভাবতই অস্বস্তিতে। গৌতমবাবুর বক্তব্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে মনজার মঙ্গলবার বলেন, “আমি কিছু জানি না। আগে দেখি, ডিজি কোথায় কী লিখেছেন!”
পুর-সূত্রের খবর: ডিজি’র জবাবে এক বার মেয়রের নামের উল্লেখ থাকলেও ঘটনায় মেয়রকে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়ানো হয়নি। একাধিক বার পুরসভার ‘সর্বোচ্চ মহল’-এর কথা বলা হয়েছে। এর মাধ্যমে তিনি কাকে বা কাদের বুঝিয়েছেন, গৌতমবাবু এ দিন তা ভাঙতে চাননি। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শো-কজের জবাব আমি দেখিনি। ওটা পুর-কমিশনারের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ত্রিফলা আলো লাগানোর ৩০ কোটি টাকার কাজে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় পুর-কমিশনার খলিল আহমেদই সংশ্লিষ্ট যাবতীয় বিল আটকে দেন। পরে নিয়মভঙ্গের অভিযোগে ডিজি (আলো)-কে শো-কজও করেন তিনি। শো-কজের চিঠিতে তাঁর কাছে কী কী জানতে চাওয়া হয়েছিল?
পুর-সূত্রের খবর: চিঠিতে ছিল মূলত তিনটি প্রশ্ন। গোটা কাজটা কেন ছোট ছোট ভাগে ভাঙা হয়েছিল, পুর-বিধি অনুযায়ী পুরসভার টেন্ডার বার্তা এবং ওয়েব পোর্টালে কাজের নোটিস কেন দেওয়া হল না, এবং বরাত দেওয়ার আগে পুর অর্থ দফতরকে পুরোপুরি অন্ধকারে রাখা হল কেন।
প্রথম প্রশ্নের জবাবে গৌতমবাবুর ব্যাখ্যা: এক-একটা বাতিস্তম্ভকে এক-একটা কাজ হিসেবে ধরা যেতেই পারে। এবং কাজের ‘সুবিধার্থে’ পুরসভার ‘উচ্চ মহলের’ অনুমতি নিয়েই তা করা হয়েছে বলে
তাঁর দাবি।
দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাবে ডিজি লিখেছেন, সময়াভাবে সব পদ্ধতি মেনে কাজ করা সম্ভব হয়নি। তাঁর এ-ও দাবি: পুরসভার ওয়েব পোর্টাল ঠিকমতো কাজ করে না এবং ‘সময়ের অভাবে’ই টেন্ডার বার্তায় তা প্রকাশ করা যায়নি। আর পুরসভার ‘সর্বোচ্চ মহল’ কাজ শেষ করার জন্য যে ভাবে চাপ দিচ্ছিলেন, তাতেই অর্থ দফতরকে তখন বিষয়টি জানানো যায়নি বলে লিখেছেন গৌতমবাবু। “ঠিক হয়েছিল, কাজ শেষ হলে তাতে অর্থ দফতরের দিয়ে সিলমোহর লাগানো হবে।” চিঠিতে বলেছেন ডিজি।
পুর-কর্তৃপক্ষের কী বক্তব্য?
পুর-সূত্রের ইঙ্গিত, ডিজি’র জবাবে পুর-প্রশাসন সন্তুষ্ট নয়। পুর-সচিবালয়ের এক পদস্থ অফিসার জানান, ডিজি’র জবাব সম্পর্কে পুর কমিশনার ইতিমধ্যে পুরসভার যুগ্ম কমিশনার (সাধারণ) ও অর্থ দফতরের মতামত জানতে চেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এ দিন মেয়র পরিষদেও আলোচনা হয়। ওই অফিসারের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থাগ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে বলে পুর-সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে মেয়র পারিষদ (আলো)-র বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত হবে কি না, মেয়রই তা ঠিক করবেন বলে পুর-সূত্রের খবর।
|
|
|
|
|
|