ইসলাম-বিরোধী সিনেমার প্রতিবাদে এ বার আত্মঘাতী হামলা চালাল জঙ্গিরা। কাবুলে আজ এক আত্মঘাতী হামলায় নিহত হয়েছেন ১২ জন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ৮ জন বিদেশি। জঙ্গি গোষ্ঠী হিজব-ই-ইসলামির দাবি, ইসলাম-বিরোধী সিনেমাটির প্রতিবাদেই এই হামলা।
ইসলাম-বিরোধী ওই সিনেমার জেরে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশে হামলা ও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে আমেরিকা তথা পশ্চিমী দুনিয়াকে। ইউটিউবের মতো ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ছড়িয়েছে সিনেমাটি। আফগানিস্তানে গোলমাল এড়ানোর জন্য ইউটিউব, গুগল ও জি মেল ব্লক করে দিয়েছে সরকার। কিন্তু, তাতেও শেষ রক্ষা করা যায়নি। আজ সকালে কাবুলের এয়ারপোর্ট রোডে একটি মিনিবাসে ধাক্কা মারে বিস্ফোরক ভর্তি একটি গাড়ি। বিস্ফোরণে নিহত হন অন্তত ১২ জন। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৮ জন দক্ষিণ আফ্রিকার নাগরিক। তাঁরা দক্ষিণ আফ্রিকার বিমান চার্টার সংস্থা এসিএস বালমোরালের কর্মী। নিহত বাকি চার জন আফগান।
হিজব-ই-ইসলামি জানিয়েছে, এই আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছে ফতিমা নামে ২২ বছরের একটি মেয়ে। আফগানিস্তানে মেয়েদের আত্মঘাতী হামলা চালানোর ঘটনা বিরল। সে দেশে এখনও খুব কম মেয়েই গাড়ি চালায়।
জঙ্গি মুখপাত্র হারুন জারগুনের বক্তব্য, ইসলাম-বিরোধী সিনেমাটি ইন্টারনেটে প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই হামলার সুযোগ খুঁজছিলেন তাঁরা। অনেক তরুণ এই হামলা চালাতে তৈরি ছিল। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তরুণী ফতিমাকেই সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভবিষ্যতে আরও হামলা চালানো হবে বলে হুমকি দিয়েছে জারগুন।
এই বিস্ফোরণ আফগানিস্তান নিয়ে আমেরিকার উদ্বেগ বাড়িয়ে দিল বলে মনে করা হচ্ছে। আফগান সেনা ও পুলিশকে প্রশিক্ষণ দিয়ে ধীরে ধীরে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল ওয়াশিংটনের। কিন্তু, সম্প্রতি মার্কিন তথা ন্যাটো সেনাদের আক্রমণ করেছে আফগান সেনা ও পুলিশের বেশ কয়েক জন কর্মী। ফলে, আফগান বাহিনীর উপরে কতটা নির্ভর করা যায় তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জেনারেল স্তরের অফিসারের অনুমতি ছাড়া আফগান বাহিনীর সঙ্গে যৌথ অভিযানে নামতেও আর রাজি নয় ন্যাটো বাহিনী। ইসলাম-বিরোধী সিনেমা আফগানদের ভাবাবেগে আঘাত করেছে বলে ধারণা মার্কিন কর্তাদের। সে ক্ষেত্রে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর উপরে অবিশ্বাস আরও বেড়ে যেতে পারে। ফলে, মার্কিন সেনা ঠিক কবে আফগানিস্তান ছাড়তে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেবে। |