উল্টো পথে হেঁটে শীর্ষ আদালতের কাছে আজ নতি স্বীকার করলেন পাক প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরফ। সুপ্রিম কোর্টে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের সামনে পারভেজ জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা ফের শুরু করতে আপত্তি নেই তাঁর সরকারের।
প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই ২০০৯ সালের ডিসেম্বর থেকে জারদারির বিরুদ্ধে মামলা চালানো নিয়ে আদালত বনাম সরকারের অঘোষিত যুদ্ধের সমাপ্তি হল বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাক্তন পাক আভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রেহমান মালিকও আশরফের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
আজ সকাল ন’টা নাগাদ আদালতে আসেন আশরফ। সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নেড়ে আদালতে ঢুকে যান তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চের কাছে মামলা ফের চালু করার কথা জানান আশরফ। তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে, প্রেসিডেন্ট জারদারির মত নিয়েই তিনি এই মামলা চালু শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও অনেকের মতে, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অবমাননার ফলে জনগণের মধ্যে একটা বিরুদ্ধ মত তৈরি হচ্ছিল। সেটা আঁচ করেই ভাবমূর্তি ঠিক করতে উল্টো পথে হাঁটলেন আশরফ-জারদারিরা।
নব্বইয়ের দশকে সুইৎজারল্যান্ডের একটি সংস্থাকে অর্থের বিরুদ্ধে বিশেষ সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জারদারি আর তাঁর স্ত্রী বেনজির ভুট্টোর বিরুদ্ধে। কিন্তু পারভেজ মুশারফ প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন বেনজিরের সঙ্গে হওয়া গোপন চুক্তি অনুযায়ী এই দুর্নীতি থেকে রেহাই দেওয়া হয় তাঁদের। ২০০৭ সালে তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মালিক খইয়ুম একটি চিঠি লিখে সুইৎজারল্যান্ডের সরকারকে এই মামলা বন্ধের অনুরোধ জানান।
কিন্তু ২০০৯ সালে পাক শীর্ষ আদালত সেই মামলা ফের শুরুর জন্য সরকারকে চাপ দিতে থাকে। শুরু হয় টালবাহানা। প্রেসিডেন্ট বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী, এই অজুহাতে জারদারির বিরুদ্ধে মামলা শুরু না করার জন্য পদ খোয়াতে হয় ইউসুফ রাজা গিলানিকে। তাঁর জায়গায় আসেন রাজা পারভেজ আশরফ। মামলা চালু করতে রাজি না হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধেও আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠে। আজ সুপ্রিম কোর্টে আশরফ জানিয়েছেন, খইয়ুমের চিঠির বক্তব্য না শোনার অনুরোধ করে শীঘ্রই সুইৎজারল্যান্ড সরকারকে একটি চিঠি পাঠানো হবে। এর পরেই সুপ্রিম কোর্ট মামলার পরবর্তী শুনানি ২৫ তারিখ হবে বলে ঘোষণা করে। আর সেই সঙ্গে সুইৎজারল্যান্ড সরকারকে পাক সরকারের তরফে যে চিঠি পাঠনো হবে, তার একটা খসড়াও নিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। |