পরিষেবা পান না প্রসূতিরা
‘ওটি’ সচল বন্ধ্যাকরণে
সুসজ্জিত বাতানুকুল ঘর। দরজার সামনে লেখা ‘অপারেশন থিয়েটার’। ভিতরে দুটি হাইড্রোলিক টেবল, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, জীবাণুনাশক মেশিন, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। এত কিছুর আয়োজন থাকলেও চিকিৎসকের অভাবে সেখানে প্রসূতিদের ‘সিজারের’ সুযোগ মিলছে না। চলছে শুধু বন্ধ্যাত্বকরণ। ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে জার্মান প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় তৈরি অপারেশন থিয়েটারের পরিস্থিতি। ওই ঘটনায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে স্বাস্থ্যকর্তাদের উদাসীনতার।
জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কৌশিক চৌধুরী বলেন, “অপারেশন থিয়েটার বন্ধ হয়ে পড়ে আছে এমনটা বলা যায় না। সেখানে বন্ধাত্বকরণের কাজ চলছে। সেটা পর্যায়ক্রমে পুরোমাত্রায় চালু করার চেষ্টা চলছে। যে কারণে ময়নাগুড়ি হাসপাতালে রক্ত সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চিকিৎসক পাওয়া গেলে নিশ্চয়ই পাঠানো হবে।” যদিও ব্লক রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় বিধায়ক অনন্তদেব অধিকারী জেলা স্বাস্থ্য কর্তার ওই বক্তব্য মেনে নেননি। তিনি বলেন, “শুধুমাত্র বন্ধ্যাত্বকরণের জন্য ওই অপারেশন থিয়েটার তৈরি করা হয়নি। সেখানে প্রসূতিদের সিজারের ব্যবস্থা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটাই হয়নি। তাই অপারেশন থিয়েটার চালু আছে যায় না। বরং বলা ভাল শুধুমাত্র বন্ধ্যাত্বকরণের কাজ করে সেটি চালু রাখার চেষ্টা চালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসকরা।”
ছবি তুলেছেন দীপঙ্কর ঘটক।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অপারেশন থিয়েটার চালু করতে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ, অ্যানাস্থেশিয়া বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান জানান, বিষয়টি বিধানসভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নজরে আনা হয়েছে। কিন্তু কবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক পাঠিয়ে প্রসূতিদের সিজারের সুযোগ করে দেওয়া সম্ভব হবে সেই বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য কর্তারা কিছু জানাতে পারেননি। বছরের পর বছর ওই পরিস্থিতি চলতে থাকায় গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে প্রতিদিন গড়ে ৩ জন প্রসূতিকে সিজারের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠাতে হচ্ছে। অথচ এমনটা যে হওয়ার কথা ছিল না তা চিকিৎসকরাও বলছেন। ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়নাগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকার প্রসূতিদের সিজার সহ ছোটখাটো অপারেশন নিয়ে হয়রানি কমাতে ২০০২ সালে ওই অপারেশ থিয়েটার তৈরির কাজ শুরু করে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। কাজ শেষ হয় ২০০৮ সালে। সেখানে দু’জন চিকিৎসক যেন এক সঙ্গে পাশাপাশি দুটি অপারেশন করতে পারবেন সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের আশ্বাস ছিল অপারেশন থিয়েটারটি দ্রুত চালু করে গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে জেলা সদর হাসপাতালে প্রসূতিদের রেফারের ঘটনা কমানো হবে। শুধু তাই নয়। ধীরে ধীরে এখানে অন্যান্য অপারেশনের কাজও চালু করা হবে। কিন্তু তা আজও সম্ভব হয়নি। কেন? স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অপারেশন থিয়েটার তৈরি করা হলেও চিকিৎসক নিয়োগ না-করায় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। ময়নাগুড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ বাগ বলেন, “অপারেশন থিয়েটার চালু করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিকিৎসক চাওয়া হয়েছে।” ৬০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসক থাকার কথা ৬ জন। বর্তমানে রয়েছেন পাঁচ জন। যে চিকিৎসকরা রয়েছেন তাঁদের মধ্যে তিনজন মেডিক্যাল অফিসার, দু’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট মেডিক্যাল অফিসার। দিনে গড়ে ২০ প্রসূতি ভর্তি হলেও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ কেন পাঠানো হচ্ছে না প্রশ্ন উঠেছে খোদ চিকিৎসক মহলে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.