লক্ষ্য দ্বন্দ্ব মেটানো
‘নিয়ন্ত্রণ’ বাড়াতে শাখা সংগঠনে বদল তৃণমূলে
শ্রমিক সংগঠনের পাশাপাশি দলের শিক্ষা-পঞ্চায়েত সংক্রান্ত বিভিন্ন সংগঠনের পুনর্বিন্যাস করে ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ বন্ধে ‘তৎপর’ হল তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সিদ্ধান্ত হয়েছে, যে কোনও সংস্থায় থাকবে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র একটিমাত্র স্বীকৃত শাখা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে শিক্ষা ও পঞ্চায়েত সংক্রান্ত সংগঠনের দায়িত্বও দেওয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে।
পঞ্চায়েত বিষয়ক সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী শিশির অধিকারীকে। দলীয় এই সিদ্ধান্ত রবিবার জানান তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
শিক্ষা থেকে পঞ্চায়েত বা শ্রমিক সংগঠন প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিয়ন্ত্রণ দলনেত্রী নিজের হাতে রাখতে চান। পঞ্চায়েত ভোটের আগে যে কোনও সাংগঠনিক বিবাদ মেটানোই তাঁর লক্ষ্য। সে জন্যই শাখা সংগঠনগুলির এই পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। ওই কমিটির জেলাওয়াড়ি দায়িত্বও ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, “এ বার পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য চাহিদা বাড়বেই। প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য আগেভাগেই জেলাওয়াড়ি দায়িত্ব বণ্টন করে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্ততি শুরু করতে চাইছেন দলনেত্রী। দলের সাংগঠনিক শক্তিও বাড়াতে চাইছেন তিনি। সে কারণেই এই রদবদল।” দলের খেতমজুর ও কৃষক থেকে শুরু করে আইন সংক্রান্ত শাখা সংগঠনেও রদবদল করা হয়েছে। কৃষক সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিঙ্গুরে জমি আন্দোলনের নেতা ও বিধায়ক বেচারাম মান্নাকে।
প্রসঙ্গত, শনিবার মহাকরণে আইএনটিটিইউসি-সহ দলীয় সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন মমতা। সেখানেই দলীয় কয়েকটি শাখা সংগঠনে রদবদল করার বিষয়েও দলীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। দলের শ্রমিক সংগঠনের দুই নেতা-নেত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং দোলা সেনের বিরোধ প্রকাশ্যে আসায় ‘বিব্রত’ হতে হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বকে। সেই ‘বিড়ম্বনা’ এড়াতেই এ বার যে কোনও সংস্থায় আইএনটিটিইউসি-র একটি স্বীকৃত সংগঠন রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে সংস্থাগুলিতে ইতিমধ্যেই দু’টি সমান্তরাল সংগঠন রয়েছে, সেগুলির কী ব্যবস্থা হবে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি পার্থবাবু। দলীয় সূত্রের খবর, দোলাদেবীর নেতৃত্বাধীন সংগঠনগুলি অপেক্ষাকৃত নতুন। সে ক্ষেত্রে শোভনদেবের নেতৃত্বাধীন পুরনো সংগঠনই বহাল রাখা হবে বলে ঠিক হয়েছে।
একইভাবে তৃণমূলের শিক্ষা শাখার চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য এবং সভাপতি চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের ‘বিরোধে’ও দলনেত্রী যথেষ্ট ‘ক্ষুণ্ণ’ বলে দলীয় নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য। দলের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে শিক্ষা শাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যবাবুকে। মানিকবাবু ও চিত্তরঞ্জনবাবুকে আপাতত ওই শাখা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মানিকবাবু এখন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি এবং চিত্তবাবু স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান।
দু’টিই সরকারি পদ। পার্থবাবু বলেন, “ওঁরা সরকারি পদে রয়েছেন। ফলে একজন দু’টি দায়িত্ব সামলাবেন না।” দলের এক শীর্ষ নেতা জানান, মন্ত্রী পদাধিকার বলে দায়িত্ব সামলাবেন। মন্ত্রীর মাধ্যমে দলনেত্রী সরাসরি সংগঠনের কাজকর্মের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে চাইছেন। পরে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ও বলেন, “মানিকবাবু ও চিত্তবাবুরা এখন সরকারি কর্মী। ফলে তাঁরা এখন সংগঠনের কাজে বেশি সময় দিতে পারবেন না। তাই সংগঠনের পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে।”
ব্রাত্যবাবুকে শিক্ষা শাখার চেয়ারম্যান রেখে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী সংগঠনের দায়িত্বও ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। পার্থবাবু জানান, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের নিয়ে দলের নতুন সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সমিতি (ওয়েবকুপা) তৈরি হবে। এর দায়িত্বে থাকবেন শিক্ষিকা কৃষ্ণকলি বসু। ব্রাত্যবাবুর নেতৃত্বে শিক্ষা শাখার একটি কোর কমিটিও গড়া হচ্ছে। সেই কমিটিতে শিক্ষা শাখার বিভিন্ন সংগঠনের প্রধানরা ছাড়াও উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন মুকুল, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, পার্থবাবু, সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন প্রমুখ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.