নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ভূমিক্ষয় রোধে গবেষণা-কেন্দ্র চালু হয়েছিল মেদিনীপুর শহরঘেঁষা আবাসে। রাজ্যের একমাত্র ‘সয়েল কনজারভেশন অ্যান্ড রিসার্চ স্টেশন’ বলে কথা। ১৯৬৩-তে তৈরি সেই গবেষণা-কেন্দ্রটিই ধুঁকছে। গবেষণা শিকেয় উঠেছে। সামান্য কিছু ফল চাষ করে কোনও রকমে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে এই কেন্দ্র।
ভূমিক্ষয়ের কারণ অনুসন্ধান এবং ক্ষয়-প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা কী হতে পারেসে-সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আবাস এলাকায় ৩২২.৮ একর জমিতে গবেষণা-কেন্দ্রটি তৈরি করা হয়েছিল। যে সময়ে কর্মী-সংখ্যা ছিল ১০৪ জন। দেখা হত, বৃষ্টির সময়ে বা ঝড়-বৃষ্টিতে কী হারে, কতটা ভূমিক্ষয় হয়। কোন ধরনের চাষে ক্ষয় বেশি, কোন ধরনে কম। এখন সে-সব কোনও কিছুরই আর বালাই নেই। তবে গবেষণা-কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, ফের একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছে কৃষি-দফতরের উপরমহলে। প্রকল্প মঞ্জুর হলে ফের গবেষণা শুরু হতে পারে।
তার আগে নানা সমস্যায় জর্জরিত এই কেন্দ্রে আপাতত অ্যাগ্রো-ফরেস্ট্রি নিয়েই কোনও রকমে কাজ চলছে। আম, পেয়ারা, কাজু, পাতিলেবুর বাগান তৈরি হয়েছে। মাঝে মধ্যে ওলেরও চাষ হয়। এ ছাড়াও নিম, বেল, শিশু, আকাশমণির মতো কিছু গাছও লাগানো হয়েছে। আর এই ফলের বাগান বা গাছের মাঝে মাঝে চাষ করা হয় বিভিন্ন ধরনের ঘাস, মুগ, অড়হর ডাল। ভূমিক্ষয়-রোধের গবেষণা নামমাত্র। কৃষিকাজে পরামর্শ দেওয়ার মতো চর্চা-গবেষণার পরিকাঠামোও আর নেই। সরকারের নজর না থাকায় কেন্দ্রটিই
এখন ক্ষয়িষ্ণু।
কী ভাবে ক্ষয় হচ্ছে কেন্দ্রের? আগে এখানে ১০৪ জন কর্মী ছিলেন। বর্তমানে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৩৯! বর্তমানে যে কয়েকজন কৃষি-শ্রমিক এখানে রয়েছেন, তাঁদের আবার বেশিরভাগই চাকরির শেষ সীমায় পৌঁছে গিয়েছেন। এখন আবার এই কেন্দ্রের জমি সুবর্ণরেখা ব্যারাজ প্রকল্পের অফিস, এসবিএসটিসি ডিপো, ন্যাশনাল সিড কর্পোরেশনের অফিস তৈরির জন্যও বিভিন্ন সংস্থাকে দিয়ে দিচ্ছে সরকার। এই করতে করতে কেন্দ্রটিই না পাকাপাকি উঠে যায়সেই সংশয় দেখা দিয়েছে। |