পরিত্যক্ত জলাশয় সংস্কার করে একই সঙ্গে সেচ ও মাছ চাষের কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করেছে কোচবিহার জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষামূলক ভাবে ওই কাজের জন্য ইতিমধ্যে জেলার দুই মহকুমার তিনটি জলাশয় বেছে নেওয়া হয়েছে। ওই তিনটি জলাশয়ের মধ্যে রয়েছে তুফানগঞ্জ মহকুমার মারুগঞ্জের চন্ডীর বিল, সদর মহকুমার বাণেশ্বরের সিদ্ধেশ্বরী বিল ও হরিপুর বিল। দ্বিতীয় পর্যায়ে দিনহাটা মহকুমার আরও তিনটি জলাশয়ে ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করার বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে কাজের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে জেলার বিভিন্ন এলাকার আরও ১৭ টি জলাশয়। তার মধ্যে জেলার ১২টি ব্লকের প্রত্যেকটিতে কমপক্ষে একটি করে জলাশয় তালিকায় রাখা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ওই কাজে ৬০ লাখ টাকা খরচ করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। চন্ডীর বিলের জন্য খরচ ধরা হয়েছে ২২ লক্ষ টাকা। সিদ্ধেশ্বরী বিলের জন্য ১০ লক্ষ টাকা ও হরিপুর বিলের জন্য ৮ লক্ষ টাকা খরচ করা হবে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “পরিকল্পিত ভাবে জলাশয়গুলিকে ব্যবহার করা হলে বিলুপ্তপ্রায় বিভিন্ন মাছের উৎপাদন যেমন বাড়ানো যাবে তেমনই সেচেরও সুবিধে হবে। পরীক্ষামূলক ভাবে সেজন্যই জেলার ওই তিনটি বিল সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। বর্ষার পরে অর্থ বরাদ্দ পেলে পর্যায়ক্রমে বাকি কাজ করা হবে। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, জেলা জুড়ে শতাধিক সরকারি জলাশয় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। জেলায় ক্রমশ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া চেলা, চাপিলা, বোয়াল, ট্যাংরা, কই, মাগুর, রূপচাঁদা মাছের উপাদন বাড়াতে ওই সব জলাশয়কে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা হয়েছে। জলাশয়গুলি গভীরতা বাড়িয়ে খনন, পাড় বাঁধানো ও চারদিকে ফল ও ফুলের গাছ লাগানো হবে। শুখা মরসুমে জলাশয় সংস্কার করা হলে লাগোয়া এলাকার কৃষকেরা সেচের সুবিধেও পাবেন। জেলা পরিষদের এক আধিকারিক বলেন, “প্রাথমিক ভাবে যে তিনটি জলাশয়ের সংস্কার করা হচ্ছে তা থেকেই অন্তত দেড়শ বিঘা জমিতে সেচের সুবিধে পাবেন এলাকার কৃষকেরা। দিনহাটার তিনটি ও তৃতীয় পর্যায়ের জন্য চিহ্নিত ১৭ টি জলাশয় সংস্কার করা হলে সব মিলিয়ে কমপক্ষে এক হাজার বিঘা জমি সেচের আওতায় আনা সম্ভব হবে। ফলে এলাকার কৃষক ও স্থানীয় মস্যজীবী সমিতিগুলিও ওই কাজে ব্যাপক উৎসাহী।” জেলা পরিষদের সভাধিপতি দিলীপ বিশ্বাস বলেন, “পরীক্ষামূলক ওই উদ্যোগ সফল হবে বলে আমরা আশাবাদী। এতে জেলার বাজারে মাছের জোগানও বাড়ানো যাবে। |