শেষ অবধি বিষ্ঠার প্রলেপেই মিলল সমাধান সূত্র। দলছুট, মানুষের শুশ্রূষা পাওয়া হস্তিশাবককে ফেরত নিল বন্য হস্তি বাহিনী। ঘটনাটি ঘটেছে কাজিরাঙায়। কাজিরাঙা পশু উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্র সূত্রে খবর, গত কাল রাতে নাহারজান চা বাগানের নালা এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল হাতিদের একটি দল। সেই সময় একটি হস্তিশাবক নালায় পড়ে যায়। হাতির দলটি ওই শাবকটিকে ফেলে রেখেই এগিয়ে যায়। আজ ভোরে চা বাগানের শ্রমিকরা হাতির ছানটিকে দেখতে পেয়ে বনদফতরকে খবর দেন। বনরক্ষী ও কাজিরাঙা পশু উদ্ধার কেন্দ্রের চিকিৎসক অভিজিৎ ভাওয়াল ঘটনাস্থলে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় শাবকটিকে উদ্ধার করেন। রাতভর ওঠার জন্য লড়াই করে শাবকটি তখন বেজায় ক্লান্ত। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে শাবকটিকে বলবৃদ্ধির পানীয় খাওয়ানো হয়। সুস্থ ও চলাফেরায় সক্ষম হওয়ার পরে হাতির ছানাটিকে নিয়ে ফের চা বাগানের সীমানায় হাজির হন বনরক্ষী ও চিকিৎসকেরা। |
অভিজিৎবাবু জানান, শাবকটি তার মাকে ডাকতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ পরে, কার্বি আংলং সীমানার জঙ্গল থেকে হাতির পাল তার ডাকে সাড়া দেয়। কিন্তু, শাবকের গায়ে ততক্ষণে মানুষের গায়ের গন্ধ লেগে গিয়েছে। অভিজিৎবাবু বলেন, “এর আগে উদ্ধার হওয়া শাবকদের এই কারণে হাতির দল ফেরত নেয়নি। তাই এইবার, আশপাশে পড়ে থাকা হাতির মল শাবকটির গায়ে লেপে দিই আমরা। এরপর নিরাপদ দূরত্বে সরে গিয়ে আমরা নজর রাখছিলাম।” কিছুক্ষণের মধ্যেই হাতির দল চা বাগানে ঢোকে। শাবকটির মা ধীর পায়ে সন্তানের দিকে এগিয়ে আসে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে শাবকটির গা শোঁকে। আড়ালে লুকিয়ে থাকা বনরক্ষীরা তখন ভাবছেন, গন্ধ বিচারের পরীক্ষায় ‘পাশ’ করতে পারবে কিনা হাতির ছানাটি। শেষ অবধি পরীক্ষায় উতরে যায় ছানাটি। হস্তিমলের দৌলতে তার গায়ে মানুষের গন্ধ ততক্ষণে উধাও। দেখা যায়, সন্তানকে সঙ্গে নিয়েই ফিরে যাচ্ছে মা। তারপর মা ও সন্তান দু’জনেই হাতির দলের সঙ্গেই জঙ্গলে ফিরে যায়। স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়েন পশু চিকিৎসক ও বনরক্ষীরা। অন্য দিকে, আজ কাজিরাঙার হাতিকুলি চা বাগানের কাছে, বড়বিল এলাকা থেকে একটি গন্ডারের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। বনবিভাগ জানিয়েছে, স্বাভাবিক ভাবে গন্ডারটির মৃত্যু হয়েছে। তার খড়্গটি কেটে নেন বনরক্ষীরা। |