নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর |
ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দুষ্কৃতীকে খুনের অভিযোগে এক সমাজবিরোধীকে গ্রেফতার করেছে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। ধৃতের নাম তারাশঙ্কর মিত্র ওরফে চিমা। বাড়ি শ্রীরামপুরের ভাদুড়ি লেনে। শুক্রবার রাতে সেখান থেকেই পুলিশ তাকে ধরে। পুলিশ অফিসারদের দাবি, চিমা জেলার কুখ্যাত দুষ্কৃতী রমেশ মাহাতোর সাগরেদ। শ্রীরামপুরে এক নামজাদা প্রোমোটারের সঙ্গেও তার যোগসাজস রয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ২৮ মে রাতে সুরজিৎ পাত্র ওরফে বাচ্চা নামে শহরের এক দুষ্কৃতী গুলিবিদ্ধ হয়। দিনকয়েক পরে কলকাতার হাসপাতালে সে মারা যায়। তদন্তকারীদের দাবি, মৃত্যুকালীন জবানবন্দিতে কয়েক জনের নাম জানিয়েছিল বাচ্চা। এর আগে ওই ঘটনায় পুলিশ ৩ জনকে ধরেছিল। ঘটনার পর থেকে চিমা পলাতক ছিল। শুক্রবার রাত ১১টা নাগাদ শ্রীরামপুর থানার আইসি তথাগত পাণ্ডে গোপন সূত্রে খবর পান, চিমা বাড়িতে ফিরেছে। তার পরেই পুলিশ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশ মহলের দাবি, চিমার বিরুদ্ধে দুষ্কৃতীমূলক আরও অভিযোগ রয়েছে পুলিশের খাতায়। গ্রেফতারের খবর পেয়েই শহরের এক পদাধিকারী তৃণমূল নেতা তাকে ছাড়াতে সরাসরি থানায় চলে যান। কার্যত শনিবার সকাল পর্যন্ত এ নিয়ে পুলিশকে আবেদন-নিবেদন করেন ওই নেতা। তবে, পুলিশ তাতে কর্ণপাত করেনি। শনিবার চিমাকে আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাকে ৭ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পুলিশের দাবি, বাচ্চাকে খুনের আগে শহরের চাতরা এলাকার একটি ক্লাবের মাঠের ধারে বসে মদ খায় দুষ্কৃতীরা। তার পরে বাইকে চাপিয়ে বাচ্চাকে কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়ে খুন করে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “চাতরার ওই জায়গায় দুষ্কৃতীদের আনাগোনার খবর পুলিশের কাছে রয়েছে। পুলিশ ওখানে নজরদারি বাড়াবে। সমাজবিরোধীমূলক কোনও কাজ বরদাস্ত করা হবে না।”
দলের নেতার থানায় গিয়ে দুষ্কৃতীকে ছাড়ানোর ‘তদ্বির’-এর বিষয়টি তৃণমূলের স্থানীয় লোকজনও অস্বীকার করছেন না। তা নিয়ে দলের অন্দরে গুঞ্জনও রয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, “বিষয়টি আমার কানে এসেছে। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি দিলীপ যাদবকে বলেছি, বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিয়ে রিপোর্ট দিতে।”
তৃণমূল সূত্রের খবর, চিমার সঙ্গে যে প্রোমোটারের যোগসাজস রয়েছে, তার সঙ্গে ওই তৃণমূল নেতার ওঠাবসা রয়েছে। এর আগেও এলাকার সাংসদ-ঘনিষ্ঠ ওই নেতার বিরুদ্ধে হাসপাতালে, কলেজে গিয়ে গোলমাল ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। তবে দলীয় নেতৃত্ব কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। |