নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
চলতি মরসুমের প্রথম দফায় ডিভিসি-র ছাড়া জলে আরামবাগ মহকুমার কোনও এলাকা প্লাবিত না হলেও ধসে গিয়েছে বেশ কিছু নদীবাঁধ। ডিভিসি ফের বেশি পরিমাণে জল ছাড়লে সেই সব বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা দ্রুত বাঁধ মেরামতির দাবি তুলেছেন।
শুক্রবার ডিভিসি-র দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে ৮৫ হাজার ৭২৩ কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়। বর্ষার আগে বিভিন্ন পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বহু নদীবাঁধ সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু ডিভিসি-র ছাড়া জলে সেই সব বাঁধের অধিকাংশই ধসে গিয়েছে। দু’দিন পরে নদীগুলির জলস্তর কমলেও গ্রামবাসীরা মনে করছেন, দুর্বল বাঁধগুলি এই জলের চাপও ধরে রাখতে পারবে না।
আরামবাগের হরিণখোলা-১ পঞ্চায়েতের মজফ্ফরপুর মৌজার মুণ্ডেশ্বরী নদীবাঁধের বিস্তীর্ণ এলাকার বাঁধ ধসে গিয়েছে শনিবারই। তার মধ্যে ৫০ মিটার এলাকার অবস্থা শোচনীয়। শনিবার রাত থেকেই সেচ দফতর ওই বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করে। রবিবার সকালে রাজ্য সেচ দফতরের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার নয়নজ্যোতি ঘোষ, জেলা সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার পবিত্র পাল, মহকুমা স্তরের মুণ্ডেশ্বরী সেচ দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আশিস চট্টোপাধ্যায়-সহ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তাঁদের ছিলেন আরামবাগের মহকুমাশাসক অরিন্দম নিয়োগী এবং এসডিপিও শিবপ্রসাদ পাত্রও।
মহকুমাশাসক বলেন, “মজফ্ফরপুর মৌজায় সেচ দফতর কাজ শুরু করে দিয়েছে। ওই বাঁধ এলাকাটি শক্তপোক্ত ভাবে সংস্কারের উদ্দেশে ইঞ্জিনিয়াররা পরিকল্পনা করছেন। বাকি বাঁধগুলির ক্ষেত্রেও যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”মুণ্ডেশ্বরী সেচ দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার আশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জলের ঘূর্ণির কারণে মজফ্ফরপুরের নদীবাঁধটির ৫০ মিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই এলাকাটি বারবার ভাঙে। এ বার সেচ দফতরের তরফে বিশেষ পরিকল্পনা করা হয়েছে।” আজ, সোমবার থেকেই বাঁধ মেরামতি শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
ধস দেখা গিয়েছে আরামবাগের মুণ্ডেশ্বরী নদীর ঘোলতাজপুর, আমগ্রাম, কৃষ্ণপুর, লাকুচক, চকবেঁশে এলাকায়। একই অবস্থা পুড়শুড়া ব্লকের দামোদর নদীর ভাঙামোড়া, জঙ্গলপাড়া, দেউলপাড়া এবং খানাকুলের দু’টি ব্লকের উদনা, অরুণ্ডা, পানশিউলি, ঢলডাঙা, মাড়োখানা, চিংড়া প্রভৃতি এলাকায়।
সংশ্লিষ্ট বিডিওদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে বাঁধগুলির যা পরিস্থিতি, তাতে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে শুধু মাটি দিয়ে দীর্ঘস্থায়ী বাঁধ সংস্কার করা দুরূহ। তবে, সম্প্রতি সেচ দফতরের সঙ্গে যৌথ ভাবে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প রূপায়ণের যে ব্যবস্থা হয়েছে, তাতে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। |