নালার জলে শিশুকে ছুড়ে উধাও যুগল, বাঁচালেন প্রৌঢ়
লো-আঁধারে মেশা নালায় হঠাৎ ঝপাং শব্দ। রাস্তার পাশের কলে জল নিতে নিতে চমকে ফিরে তাকালেন প্রৌঢ়। নালায় তখন অল্প ঢেউ। আর রাস্তা দিয়ে সাইকেলে ঊর্ধ্বশ্বাসে পালাচ্ছে একটি পুরুষ আর এক মহিলা। ওই
ফেলে যাওয়া সেই
শিশু।—নিজস্ব চিত্র
দু’জন নালায় পুঁটুলির মতো কী ছুড়ে দিয়ে পালাল, দেখতে জলে নেমে পড়েন প্রৌঢ়। অগভীর জল থেকে কাপড়ের পুঁটুলি তুলে এনে দেখেন, তাতে বছর দেড়েকের একটি শিশু। সামান্য নড়াচড়া করছে।
রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার লিলুয়া স্টেশন রোড চত্বরে। ওই প্রৌঢ়ের তৎপরতায় বেঁচে গিয়েছে শিশুটি। পুলিশি সূত্রের খবর, প্রৌঢ়ের নাম গুণবাহাদুর শর্মা। রাতে লিলুয়া স্টেশন রোডে রানিঝিল সংলগ্ন বড় একটি নালার পাশের কল থেকে জল নিচ্ছিলেন তিনি। তখনই সাইকেলে চড়ে সেখানে আসে একটি পুরুষ এবং এক জন মহিলা। গুণবাহাদুর বলেন, “কিছু ক্ষণ ওখানে দাঁড়িয়ে থাকার পরে হঠাৎই ওরা জলে কিছু একটা ছুড়ে ফেলে দিল। কাপড়ে মোড়া বস্তুটি জলে পড়তেই ঝপাং করে শব্দ হল।” রাস্তার দিকে চোখ ফিরিয়ে গুণবাহাদুর দেখেন, সাইকেলে চড়ে দুই আগন্তুক পালিয়ে যাচ্ছে। তারা নালায় কী ফেলে গেল, কৌতূহল হল প্রৌঢ়ের। ফুট তিনেক চওড়া আর দু’-আড়াই ফুট গভীর ওই নালা দিয়ে জল এসে পড়ে রানিঝিলে। সেই নালায় নেমে পড়েন গুণবাহাদুর। কাপড়ের একটি পুঁটুলি পান তিনি। উঠে এসে পুঁটুলি খুলে দেখেন, তাতে রয়েছে বছর দেড়েকের একটি শিশুপুত্র।
শিশুটিকে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে লিলুয়া থানায় দৌড়ন গুণবাহাদুর। ঘটনাস্থল বালি থানা এলাকাভুক্ত। তাই লিলুয়া থানা খবর দেয় বালি থানায়। বালি থানার আইসি রূপক সরকার এসে শিশুটিকে লিলুয়ার জয়সোয়াল হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেন। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, জলে ডুবে গেলেও প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তুলে আনার ফলে শিশুটিকে প্রাণে বাঁচানো গিয়েছে। তবে শিশুটি ডুবন্ত অবস্থায় নালার জল খেয়ে ফেলায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই হাসপাতালেই রাখা হয়েছে তাকে।
কারা শিশুটিকে ও-ভাবে নালায় ছুড়ে দিয়ে পালিয়ে গেল?
গুণবাহাদুর বলেন, “বাচ্চাটাকে উদ্ধার করতে গিয়ে আমি সাইকেলে চড়ে আসা দু’জনকে ধরতে পারিনি। আমাকে দেখেই ওরা দ্রুত লিলুয়া স্টেশনের দিকে চম্পট দেয়।” সাইকেলে আসা দুই আগন্তুক কারা, তারাই শিশুটির বাবা-মা কি না, খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে তাদের সন্দেহ, অবৈধ সন্তান বলে ওই পুরুষ ও মহিলা হয়তো শিশুটিকে ফেলে পালিয়েছে। তবে পুরনো শত্রুতার জেরে অন্য কারও শিশু চুরি করে এনে ফেলে দিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। বালি থানা তো বটেই, আশপাশের থানা এলাকার বিভিন্ন নিখোঁজ-ডায়েরিও পরীক্ষা করছে তারা। শিশুটির রক্ষাকর্তা কে এই গুণবাহাদুর? পুলিশ জানায়, লিলুয়া স্টেশন রোড সংলগ্ন এলাকায় একটি বন্ধ কারখানায় দারোয়ানের কাজ করেন গুণবাহাদুর। থাকেন স্ত্রী আর দুই মেয়েকে নিয়ে। শিশুটিকে দত্তক নিতে চেয়ে ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছেন গুণবাহাদুর।
পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের পরে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.