দমদম ক্যান্টনমেন্টে শিকদার দম্পতির খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ঝর্না শিকদার ছাড়াও আর কেউ জড়িত কি না, খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, একাধিক প্রোমোটার ওই জমি-সহ বাড়ি বিক্রির ব্যাপারে গণেশবাবুর ভ্রাতৃবধূ ঝর্নার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। পুলিশ ঝর্নাকে জেরা করে ওই প্রোমোটারদের নাম-ঠিকানা জানার চেষ্টা করছে।
প্রশ্ন উঠেছে, ওই জমি সমেত বাড়ি বিক্রির ব্যাপারে গণেশ শিকদারের অন্য ভাইয়েরা রাজি ছিলেন কি না? কারণ ওই জমি সমেত বাড়িটির মালিক গণেশবাবু ও তাঁর আরও চার ভাই। গণেশবাবুর মেয়ে রিঙ্কি পুলিশকে জানিয়েছেন, জমি প্রোমোটারকে দিতে আপত্তি করেন তাঁর বাবা। তদন্তকারীদের প্রশ্ন, তবে কি গণেশবাবুর অন্য ভাইয়েরা জমি বিক্রিতে রাজি ছিলেন? শুধু গণেশবাবুর পরিবারই কি ওই ব্যাপারে ‘পথের কাঁটা’ ছিল? এ নিয়ে গণেশবাবুর ভাইদের সঙ্গেও কথা বলছে পুলিশ।
ঝর্নার বাপের বাড়ি দমদমের খ্রিষ্টান পাড়ায়। তাঁর কিছু আত্মীয় প্রোমোটারদের ইমারতি দ্রব্য সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত। সেই সূত্রে কয়েক জন প্রোমোটারের সঙ্গে ঝর্নার যোগাযোগ ছিল। পুলিশ জেনেছে, তাঁদের কেউ কেউ গত কয়েক মাস ধরে গণেশবাবুর বাড়িতে যাতায়াত করছিলেন। তাঁদের যাতায়াত নিয়ে গণেশবাবু ঝর্নার সামনে অসন্তোষও প্রকাশ করেন। রাস্তাতেও গণেশবাবুকে ওই সব লোকেরা বাড়ি বিক্রির কথা বলতেন। গণেশবাবু যে চাপে ছিলেন, তা তিনি স্ত্রী-মেয়েকেও জানিয়েছিলেন।
শনিবার রাতে গণেশবাবুদের বাড়িতে যায় ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের দল। শুক্রবার গভীর রাতে গণেশবাবু ও তাঁর স্ত্রী পুষ্প শিকদার ছাদের যে ঘরে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পড়েছিলেন, সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। এক আধিকারিক জানান, পোড়া বালিশের অংশ, প্লাস্টিকের সামগ্রী-সহ বেশ কিছু নমুনা জোগাড় করা হয়েছে। কিন্তু ঘরের কিছু জিনিস পোড়া অবস্থায় পাওয়া গেলেও বিছানার চাদরে আগুন লাগার চিহ্ন মেলেনি। আগুনের হাত থেকে বিছানার চাদরটি কী ভাবে বেঁচে গেল, তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “কিছু জায়গায় খটকা রয়েছে। ঝর্না ছাড়াও তাঁর কয়েক জন আত্মীয় ও গণেশবাবুর অন্য আত্মীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ফরেন্সিক রিপোর্ট ও ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এলে জট অনেকটাই খুলবে বলে আশা করা যায়।” |