ঘরোয়া ফুটবলের ইতিহাসে কার্যত নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে গেল শনিবার।
দলের এক ফুটবলারের সমর্থনে কলকাতা লিগের প্রথম ম্যাচ খেলতে মাঠেই গেল না মোহনবাগান। ওয়াকওভার দিয়ে দিল প্রতিপক্ষ সাব্বির আলির দল সাদার্ন সমিতিকে। লিগের নিয়মানুযায়ী তিন পয়েন্ট কাটা হবে বাগানের। তাতে অবশ্য হেলদোল নেই সবুজ-মেরুন কর্তাদের। সচিব অঞ্জন মিত্র এ দিন বললেন, “আড়াই মাসে যারা একটি সমস্যার সমাধান করতে পারে না, তাদের কোনও অস্তিত্ব আছে বলে মনে করি না। তারা কী করল তা নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। ফেডারেশন, এএফসি কেউ চায় না ঘরোয়া লিগ খেলি। তবুও আইএফএ-র অস্তিত্ব রাখতে খেলেছি। কিন্তু আর অন্যায় বরদাস্ত করা যাচ্ছে না।” পাশাপাশি তাঁর আক্রমণ, “রাজ্য সংস্থার অফিস পুড়িয়ে যারা ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করল তারাই আইএফএ-র চেয়ারে বসে। একটা ক্লাবের হয়ে অন্যায় ভাবে দিনের পর দিন কাজ করছে। এ বার ওরা দেখবে আমরা কী করতে পারি।” মোহনবাগানের তোপের মুখে আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য ‘যুদ্ধে’ নামতে চাননি। বললেন, “আমরা অনুরোধ করেছি বারবার। ওরা না খেললে কী করা যাবে। লিগ সূচি বদলানো সম্ভব নয়।”
যাঁকে কেন্দ্র করে এই সঙ্কট, সেই টোলগে এ দিন ছিলেন মোহনবাগান জার্সিতে। প্রস্তুতি ম্যাচে গোল করে বললেন, “গোল পেয়ে চাপ অনেক কমে গিয়েছে। ওডাফার সঙ্গে মানিয়ে নিতে আরও কয়েকটা ম্যাচ খেলতে হবে।”
মোহনবাগান আগেই জানিয়ে দিয়েছিল তারা মাঠে যাবে না। আইএফএ অবশ্য যুবভারতীতে প্রস্তুতি রেখেছিল। দল নিয়ে হাজির ছিলেন সাব্বির আলি। আইএফএ কর্মীরা লিখে ফেলেন সাদার্নের ফুটবলারদের তালিকা। মোহনবাগান না আসায় টিম লিস্টের এক দিকটা ফাঁকাই রয়ে গেল।
হতাশ সাব্বির বলছিলেন, “ফুটবলার বা কোচ হিসাবে কোনও দিন এ রকম পরিস্থিতির সামনে পড়িনি।” ম্যাচ কমিশনার সুমন্ত ঘোষের কথায়, “রেফারিদের পক্ষ থেকে আইএফএ-র কাছে রিপোর্ট দেব, মোহনবাগান অনুপস্থিত ছিল। এর পর কলকাতা লিগ কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে।”
যুবভারতীতে একজন দর্শকও ছিলেন না। কিন্তু ঠিক ওই সময়ই মোহনবাগান মাঠে হাজির কয়েকশো সমর্থক। সবুজ-মেরুন কর্তারা ঠিকই করে রেখেছিলেন গাড়োয়াল রাইফেলসের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন। সন্তোষ কাশ্যপের দল ৬-০ গোলে জিতল। প্রথমার্ধে চার বিদেশিই খেললেন। টোলগের গোলের পর জোড়া গোল করেন ওডাফা। বাকি তিনটি গোল করেন স্ট্যানলি, সাবিথ, বিজেন রাই। কলকাতা লিগ না খেলে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে লাভ কী? কোচ কাশ্যপ বললেন, “কলকাতা লিগে না খেলাটা ক্লাবের সিদ্ধান্ত। আমি প্রস্তুত ছিলাম খেলব বলে।” |