দেশের বেহাল আর্থিক পরিস্থিতির জেরে আজ কেন্দ্রীয় নীতির সমালোচনায় সরব হল বিজেপি। সেই সঙ্গে অভিযোগ তুলল অ-কংগ্রেসি রাজ্যগুলির প্রতি ‘বিমাতৃসুলভ’ আচরণ নিয়েও।
যোগ্য নেতৃত্বের অভাব, প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নিয়ে বিবাদ, দলীয় সভাপতির ভূমিকার সমালোচনা করে বর্ষীয়ান নেতার ব্লগ লেখা এমন বহু বিষয় নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে জেরবার নিতিন গডকড়ীর দল। অথচ, চলতি বছরেই দুই বিজেপি-শাসিত রাজ্য গুজরাত ও হিমাচলপ্রদেশে বিধানসভা ভোট। তার দু’বছরের মধ্যেই লোকসভা নির্বাচন। এই পরিস্থিতিতে আজ দিল্লিতে এনডিএ-র মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে কেন্দ্রকে আক্রমণ করে ঐক্যের ছবি তুলে ধরতে সচেষ্ট হলেন বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপি সভাপতি নিতিন গডকড়ী আজ বলেন, “দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়। মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ক্রমশ কমছে। সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে নীতিপঙ্গুত্ব দেখা দিয়েছে। বাড়ছে দুর্নীতি। পরিকাঠামোগত উন্নয়ন স্তব্ধ হওয়ার জোগাড়। আর্থিক সংস্কারও কেবলই এড়িয়ে যেতে চাইছে সরকার।”
দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে যে আশা প্রধানমন্ত্রী করেছেন, তার কৃতিত্বও বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলির বলে দাবি দলীয় নেতাদের। দলের মুখপাত্র প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, “বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির আর্থিক বৃদ্ধির হার দশ শতাংশের বেশি। তার জোরেই প্রধানমন্ত্রী ওই আশা করছেন।”
কিন্তু দেশের অর্থনীতিতে এই ‘অবদান’ সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের রাজ্যের প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করছেন বলে আজ বৈঠকে অভিযোগ করেন বিজেপি-র মুখ্যমন্ত্রীরা। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা অরুণ জেটলিও বলেন, ইউপি সরকারের আমলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ক্রমাগত আক্রান্ত হচ্ছে। শিক্ষা বা স্বাস্থ্যের মতো যৌথ তালিকাভুক্ত বিষয়গুলির ক্ষেত্রেও কেন্দ্র জোর করে নিজের মতামত রাজ্যের উপরে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
জেটলির অভিযোগ শুধু বিজেপি-শাসিত রাজ্যই নয়, ইউপিএ-র শরিক দলগুলির আপত্তিও শুনতে নারাজ মনমোহন-সরকার। বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, কংগ্রেসের সঙ্গে শরিক দলগুলির মতবিরোধকে কাজে লাগিয়ে বৃহত্তর রাজনৈতিক অক্ষ গড়ে তোলার চেষ্টা করাই তাদের লক্ষ্য। এই অক্ষে তৃণমূলকে সামিল করার চেষ্টা যেমন আছে, তেমনই রয়েছে বিজেডি, এডিএমকে-র মতো দলগুলিকে কাছে টানার চেষ্টা। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের প্রশ্নে ইউপিএ সরকারের বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ শানিয়ে বিজেপি আজ ওই দলগুলিকে ফের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করল। |