এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন কংগ্রেসের
কেন্দ্রের ঘুম কাড়ছেন ‘ঠান্ডা মাথার’ বিনোদ
ন্য ময়দানে বিনোদ রাই।
বিনোদ রাই। ৬৪ বছরের এই মানুষটিকে নিয়েও এখন দেশের রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে আলোচনা তুঙ্গে। ‘কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল’ (সিএজি) পদে নিজের দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করছেন, নাকি সীমা লঙ্ঘন করছেন, এই নিয়েই চলছে বিতর্ক।
পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। ট্রেকিং করতে ভালবাসেন। টেনিস নিয়ে প্রচণ্ড উৎসাহ। দেখলেই বোঝা যায়, অসম্ভব ঠান্ডা মাথার মানুষ। ত্রিসুর জেলার সাব-কালেক্টর হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেছিলেন কেরল ক্যাডারের এই আইএএস। কেরলের বাম নেতাদের অনেকেই দারুণ পছন্দ করেন তাঁকে। কারণ রাজ্যের অর্থসচিব হিসেবে আর্থিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের কাজে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল তাঁর।
পোড় খাওয়া এই আমলাকেই ২০০৮ সালে সরকারি আয়-ব্যয়ের হিসাব পরীক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আর তার পর থেকে একের পর এক ‘দুর্নীতি’ ফাঁস করে মনমোহন সিংহের সরকারকে ‘বিপদে’ ফেলে দিয়েছেন বিনোদ রাই।
—নিজস্ব চিত্র
এত দিন ছিল টু-জি স্পেকট্রাম বণ্টন, কমনওয়েল্থ গেমস-সহ ডজন খানেক ছোট-বড় ‘দুর্নীতি’র রিপোর্ট। যা হাতিয়ার করে আন্দোলনে নেমেছে বিরোধী বাম-বিজেপি তো বটেই, অণ্ণা হজারে এবং তাঁর অনুগামীরাও। গত কাল সেই তালিকায় যোগ হয়েছে কয়লা খনি বণ্টন, দিল্লি বিমানবন্দর ও বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে আরও তিনটি রিপোর্ট। যার ধাক্কা সামলাতে ফের বিনোদ রাইকেই আক্রমণের পথ নিতে হয়েছে মনমোহন সরকার তথা কংগ্রেস নেতৃত্বকে।
সিএজি-র রিপোর্ট নিয়ে কোথায় আপত্তি শাসক দলের?
আগে সিএজি-র রিপোর্টে শুধুই আর্থিক হিসেবের ত্রুটি তুলে ধরা হত। এখন তা থেকে সরে এসে সামগ্রিক ছবি, অর্থাৎ নীতিগত বা পদ্ধতিগত ত্রুটি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রতিমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামীর দাবি, সরকারের নীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনও অধিকারই নেই সিএজি-র। সরকারের আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির যে হিসেব তারা দিয়েছে, সেখানেও বড়সড় গোলমাল রয়েছে বলে কংগ্রেসে অভিযোগ। দলের মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, “সিএজির-র আসলে সরকারের ক্ষতির অঙ্কে শূন্য জোড়ার অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।” তাঁর যুক্তি। টু-জি স্পেকট্রাম বণ্টনের ক্ষেত্রে সিএজি যে আর্থিক ক্ষতির হিসেব কষেছিল, সুপ্রিম কোর্টও তা মানেনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলিও দাবি করেছেন, সিএজি-র রিপোর্টের সঙ্গে বাস্তবের কোনও সম্পর্ক নেই। প্রধানমন্ত্রীর সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলাও অযৌক্তিক।
রাজনীতির অঙ্ক মেনেই বিনোদ রাই আপাতত বিজেপি ও অন্যান্য বিরোধী দলকে পাশে পাচ্ছেন। বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভড়েকরের হুমকি, সরকারের তরফে যে ভাবে সিএজি-কে আক্রমণ করা হচ্ছে, তা ওই সংস্থার অধিকার ভঙ্গের সামিল। মঙ্গলবার সংসদে তাঁরা এ নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবেন। অণ্ণা-শিবিরের অন্যতম সদস্য কিরণ বেদীর মতে, সিএজি স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারছে বলেই এই ধরনের রিপোর্ট আসছে। সিবিআইয়ের মতো প্রতিষ্ঠানগুলিকে এই কারণেই সরকার স্বাধীনতা দেয় না। তাঁর কথায়, “বিনোদ রাই আজ সিএজি হিসেবে যা করেছেন, পুনর্বহালের স্বপ্ন না থাকলে সিবিআইয়ের এক জন সাহসী ডিরেক্টরও তা করতে পারতেন।”
ইউপিএ সরকারের সমস্যা একটাই। ইচ্ছে থাকলেও বিনোদ রাইকে সিএজি-র পদ থেকে সরানো সম্ভব নয়। ওই পদে তাঁর মেয়াদ ছ’বছর। আর তা ২০১৪ সাল পর্যন্ত। লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই তাঁর মেয়াদ শেষ হবে। তার আগে তাঁকে সরাতে গেলে ‘ইমপিচমেন্ট’ প্রক্রিয়ায় গিয়ে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। বিনোদ রাইও সে কথা ভালই জানেন। দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের দফতরে তাই নিশ্চিন্ত মনেই কাজ করে চলেছেন তিনি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.