দার্জিলিং এবং ডুয়ার্স ভ্রমণকারীদের কাছে শিলিগুড়ি বর্তমানে ‘ট্রানজিট’ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু শুধু এই ‘ট্রানজিট পয়েন্ট’ হিসেবে নয়, শিলিগুড়িকে পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলতে চায় শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
শনিবার শিলিগুড়ির সেবক রোডের সিটি গার্ডেনে পর্যটন দফতর এবং বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে তিন দিন ব্যাপী পর্যটন মেলা ‘ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম মার্ট’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, “শিলিগুড়ি এখনও পর্যটকদের কাছে ‘ট্রানজিট’ পয়েন্ট। শিলিগুড়িকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরতে ইতিমধ্যে চটহাটে সর্পোদ্যান তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মাটিগাড়ায় ‘রক ক্লাইম্বিং ওয়াল’ তৈরি হচ্ছে। তার মাধ্যমে ‘স্পোর্টস ট্যুরিজম’-এ উৎসাহীদের আগ্রহ বাড়বে।” কলকাতায় গঙ্গার পাড় যে ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়েছে সেই ধাঁচে মহানন্দার পাড় সাজিয়ে তোলার ভাবনাচিন্তাও রয়েছে বলে তিনি জানান। এ ছাড়া নৌকা-বিহারের ব্যবস্থা হবে। পর্যটকেরা যাতে দার্জিলিং, ডুয়ার্সের পাশাপাশি শহরেও কয়েকদিন কাটাতে আগ্রহী হন সেই ব্যবস্থাও হবে।
রুদ্রবাবু জানান, ফুলবাড়ি বাংলাদেশ সীমান্তে অত্যাধুনিক ‘ল্যান্ড কাস্টম স্টেশন’ (এলসিএস) তৈরি হয়েছে। ২১ অগস্ট শুল্ক দফতরের হাতে তা তুলে দেওয়া হবে। পরে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে কথা বলে ‘ওয়াঘা’ সীমান্তের মতো জওয়ানদের ‘ডিউটি’ বদলের সময় ‘রুট মার্চ’ সাধারণের দেখার ব্যবস্থা করা হবে। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা হবে। ভারত, ভুটান, নেপাল এবং বাংলাদেশে মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই সীমান্তপথ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে জানান রুদ্রবাবু। এ ব্যাপারে সহমত পোষণ করে পুরসভাও। |
মেলায় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। ছবি: কার্তিক দাস। |
অনুষ্ঠানে মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “মহানন্দা সংস্কার করে সাজিয়ে তোলার ব্যাপারে আমরাও আগ্রহী। শহর সাজাতে এ ধরনের উদ্যোগে সব সময়ই পাশে আছি।” রুদ্রবাবু জানান, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে আগামী নভেম্বরে পর্যটকদের জন্য বিশেষ ট্রেন চালু করার কথা। তাতে ৫টি বাতানুকূল কামরা থাকবে। শিয়ালদহ থেকে তা প্রথমে মুর্শিদাবাদে যাবে। সেখানে ঘোরার পর পর্যটকদের নিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি এবং ডুয়ার্সে আসবে ট্রেনটি। পর্যটকদের পাহাড় এবং ডুয়ার্সে ঘোরানোর ব্যবস্থা সরকারের তরফে করা হবে।
পর্যটন মেলায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্র্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন (এটোয়া)। পর্যটন দফতরের সঙ্গে যৌথ ভাবে সামিল বেসরকারি সংস্থা ‘নর্থ ইস্ট ফেয়ারস’। উত্তরবঙ্গে এ ধরনের পর্যটন মেলা এই প্রথম বলে দাবি পর্যটন দফতরের। মেলায় যোগ নিয়েছে মধ্যপ্রদেশ, অসম, ঝাড়খণ্ড, সিকিমের পর্যটন দফতর-সহ বেসরকারি অন্য ভ্রমণ সংস্থাও। সেই স্টলগুলি থেকে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে ঘোরার সুলুক সন্ধান পাবেন উৎসাহীরা।
মধ্যপ্রদেশের পর্যটন উন্নয়ন নিগমের রেসিডেন্ট ম্যানেজার অভিজিৎ ধর বলেন, “রাজ্যের কোথায় কী ঘোরার জায়গা, সরকারি ব্যবস্থা রয়েছে তা তুলে ধরা হচ্ছে। পাশাপাশি স্থানীয় পর্যটন সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে ওঠা উভয় রাজ্যের পর্যটনের উন্নয়নে সহায়ক হবে।” একই আশা পোষণ করেন অসমের পর্যটন উন্নয়ন নিগমের অপারেটর যতীনচন্দ্র মণ্ডল। |