বোল্টকে এ বার চারশো মিটারে দেখতে চাই
যে সত্যিই কিংবদন্তি, গত বৃহস্পতিবার সেটা প্রশ্নাতীত ভাবে প্রমাণ করে দিল উসেইন বোল্ট। অনেকেই অবশ্য একশো মিটার জেতার পরেই ওকে সর্বকালের অন্যতম সেরা বলতে শুরু করেছিলেন। বোল্ট নিজে কিন্তু বলেছিল যে, কিংবদন্তির সম্মানটা ওকে অর্জন করতে হবে। আর সেটা তখনই পারবে যদি একশোর পাশাপাশি দু’শো মিটারেও নিজের অলিম্পিক মুকুট ধরে রাখতে পারে। নিজের সবথেকে পছন্দের ইভেন্ট দু’শো মিটারেও সোনা জিতে বোল্ট প্রমাণ করে দিল, ওর শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলার আর কোনও জায়গা নেই। এ বার ৪x১০০ রিলেতে সোনা জিতলে পরপর দুই অলিম্পিকে স্প্রিন্ট-ট্রিপলের অসাধারণ নজির গড়ার সুযোগ ওর সামনে।
সত্যি বলছি, আমার মনে হয়েছিল লন্ডনে দু’শো মিটারেই বোল্ট সব থেকে বেশি নড়বড়ে। এর দু’টো কারণ ছিল। প্রথম, ও পুরো একশো ভাগ ফিট নেই। দ্বিতীয়, জামাইকার ট্রায়ালে প্র্যাক্টিস পার্টনার ইয়োহান ব্লেকের কাছে হেরে ছিল। বোল্ট নিজেও স্বীকার করেছে যে, ট্রেনিংয়ে ব্লেক ওর থেকে অনেক বেশি পরিশ্রম করে। আর একশো মিটারের তুলনায় দু’শো মিটারে সাফল্যের সমীকরণটা অনেক বেশি নির্ভর করে ট্রেনিংয়ে কে কত পরিশ্রম করছে তার উপর। ব্লেকও মনে হয় ভেবেছিল, দু’শো মিটারেই ওর বোল্টকে হারানোর সেরা সুযোগ। এমনকী ফাইনালের লেন ড্র পর্যন্ত ব্লেকের পক্ষে গিয়েছিল। ব্লেক চার নম্বর লেন পায়, বোল্ট পায় সাত নম্বর। যার মানে, ব্লেক গোটা রেসে বোল্টের দৌড়ের উপর চোখ রেখে নিজের গতি বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল। বোল্ট কিন্তু ব্লেক কী করছে সেটা দেখতে পায়নি। ফলে গোটা রেসে অকল্পনীয় চাপে ছিল বোল্ট।
অথচ সেই চাপের পাহাড় মাথায় নিয়েই নিজের সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জারের বিরুদ্ধে কী অসাধারণ পারফরম্যান্সটাই না বের করে আনল! তাও কখন? না, যখন ও পুরো একশো ভাগ ফিট নয়! চার বছর আগে বেজিংয়ে নিজের অবিশ্বাস্য প্রতিভা দিয়ে আমাদের চমকে দিয়েছিল বোল্ট। আর লন্ডনে বুঝিয়ে দিল ও শুধু ক্ষণজন্মা প্রতিভাই নয়, প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবেও মহান।
এ বার গোটা বিশ্বের আগ্রহ জড়ো হবে বোল্ট এর পরে কী করে সেটা দেখায়। লন্ডন গেমসের পরে একই ইভেন্টে আরও বেশি জোরে দৌড়ানো বা আরও বেশি সোনার পদক জেতা ওকে আর সে ভাবে তাতাতে পারবে বলে মনে হয় না। আমি নিজে বোল্টকে চারশো মিটারে দেখতে চাই। কিন্তু ও সম্ভবত জানে যে চারশো মিটারের জন্য ট্রেনিংয়ে যে কঠোর পরিশ্রমটা করতে হয়, সেটা করার কোনও আগ্রহ ওর নেই।
আসলে বোল্ট ওর পরের একটা গোটা প্রজন্মের প্রেরণা হয়ে উঠেছে। গত চার বছরে জামাইকার স্প্রিন্ট দলের অবিশ্বাস্য সাফল্যের পিছনে অনুঘটক বোল্টই। ওর উত্তরাধিকার আগামী বহু বছর ধরে টের পাওয়া যাবে।
ব্যক্তিত্ব, পারফরম্যান্স আর ট্র্যাকের শোম্যানশিপ বোল্টের জনপ্রিয়তাকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে। গোটা বিশ্ব ওকে ভালবাসে। কিন্তু বোল্টের মতো সফল মানুষদের ক্ষেত্রে এমন একটা সময় আসে যখন একের পর এক উচ্চতা পার করতে করতে সামনে নতুন করে স্পর্শ করার মতো আর কোনও উচ্চতা পড়ে থাকে না। তখন কিন্তু বাদবাকিরা তাকে টেনে নামিয়ে আনার নানা রাস্তা খুঁজতে ব্যস্ত হয় পড়ে। বোল্ট উচ্চতার সেই বিন্দুটার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। আমার মনে হয়, এ বার ওর অবসর নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করা উচিত। এমনিতে অ্যাথলেটিক্সের জন্য বোল্টের থেকে বড় বিজ্ঞাপন আর কেউ নেই। কিন্তু নিজের প্রতি ওর একটা কর্তব্য রয়েছে। আর সেটা হল, এটা নিশ্চিত করা যে ও যেন চূড়োয় থাকতে থাকতে সরে যেতে পারে।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.