বকেয়া পেতে একজোট হিমুল কর্মীরা
কেয়া আদায়ে রাজনীতি ভুলে একজোট হচ্ছেন হিমুলের কর্মীরা। গত ডিসেম্বর থেকে হিমুলের কর্মীদের ইনক্রিমেন্ট বন্ধ রয়েছে। পিএফ এবং গ্র্যাচুইটিও বকেয়া পড়ে গিয়েছে। কবে কর্মীরা প্রাপ্য টাকা পাবেন তাঁর কোনও স্পষ্ট উত্তর পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই আইএনটিইউসি অনুমোদিত হিমুল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন এবং সিটুর ডেয়ারি ফার্ম মজদুর ইউনিয়ন একজোট হয়ে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরিস্থিতি যে সঙ্কটজনক সেই অভিযোগ করছে আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত হিমুল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নও। ঝান্ডা নামিয়ে একজোট হয়ে আন্দোলনে নামার ব্যাপারে তাঁরাও একমত। তবে শাসক দলের সংগঠন হওয়ার সুবাদে তাঁরা ওই আন্দোলনে সামিল হওয়ার ব্যাপারে দলের অনুমতি চেয়েছে। ৩ অগস্ট উত্তরবঙ্গে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে দিন মাটিগাড়া নকশালবাড়ির কংগ্রেস বিধায়ক সঙ্কর মালাকারের মাধ্যমে হিমুল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের কর্মীরা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এই বিষয়ে সরাসরি কথা বলার জন্য সময় চেয়েছেন। মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরে এসে এ বার যাতে হিমুলের কর্মীদের সময় দেন সেই ব্যাপারে চেষ্টা করছি। কর্মীদের ক্ষোভের কথা জেনে মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই কিছু একটা পদক্ষেপ করবেন বলে আশা করছি।”
তাতে কাজ না-হলে লাগাতার ধর্না, বিক্ষোভ-সহ একাধিক আন্দোলনের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন হিমুল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের নেতা সুবীর মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “পরিচালনার ত্রুটিতে হিমুল গত দু’দশক ধরে বেহাল হয়ে রয়েছে। তার জন্য কেবল কর্মীদের বঞ্চিত হতে হবে কেন? আমরা বকেয়া চাই। সেটা দিতে না-পারলে রাজ্য সরকার আমাদের সম্মানজনক শর্তে স্বেচ্ছাবসরের ব্যবস্থা করুক। এই দাবিতেই সমস্ত ইউনিয়নের কর্মীরা একজোট হয়ে আন্দোলনে নামব বলে ঠিক করেছি।”
সোমবার এবং মঙ্গলবার সিটু এবং আইএনটিইউসি এই ব্যাপারে বৈঠকও করে। সিটুর ডেয়ারি ফার্ম মজদুর ইউনিয়নের সম্পাদক বিজয় প্রধান বলেন, “কর্মীদের আর্থিক সুরাহার ব্যাপারে কোনও সরকারি উদ্যোগ দেখতে পারছি না। সেই জন্যই সমস্ত ইউনিয়ন মিলে একজোট হয়ে আন্দোলনে নামার প্রস্তাবে সহমত হয়েছি।” হিমুল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের নেতা পূর্ণ দোর্জি জানান, দলের অনুমতি পেলেই তাঁরা ওই আন্দোলনে সামিল হবেন।
হিমুলের বর্তমান মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব। বকেয়া নিয়ে কর্মীদের ক্ষোভ যে যুক্তিসঙ্গত সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনিও। মহকুমাশাসক বলেন, “কর্মীরা আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁদের বক্তব্য শুনেছি। কর্মীদের বকেয়া মেটাতে রাজ্য সরকারের কাছে বিশেষ অনুদান চেয়ে চিঠি পাঠানোর পরিকল্পনা হয়েছে। সেটা হলে সমস্যা মিটবে বলে আশা করছি।”
১৯৭৬ সালে সমবায় ভিত্তিতে চালু হওয়া উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান এই দুগ্ধ উৎপাদন কেন্দ্রটি প্রথম দিকে ভালই চলছিল। পাহাড়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে দুধের সরবরাহ ব্যবস্থা মার খায়। লোকসানের মুখে পড়ে হিমূল। ধীরে ধীরে দুধ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে থাকে। মুখ থুবড়ে পড়ে হিমুলের গোখাদ্য তৈরির কারখানা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে নতুন সরকার গঠনের পরে দার্জিলিঙের অতিরিক্ত জেলাশাসক রজত সাইনিকে হিমুলের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাশাপাশি, বকেয়া মেটানোর জন্যও প্রায় ৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়।
কর্মীদের দাবি, অতিরিক্ত জেলাশাসক দায়িত্ব দেওয়ার পরে হিমুলের দুধ সরবরাহ ব্যবস্থা নতুন করে চাঙ্গা হয়। দুধ, লস্যি, ঘি, পনির বিক্রি শুরু হওয়ায় হৃতগৌরব কিছুটা পুনরুদ্ধার হয়। কিন্তু কর্মীদের প্রতি বঞ্চনা দূর হয়নি। রজত সাইনির পরে শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক দায়িত্ব নিলেও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয়নি। বাধ্য হয়েই তাঁদের একজোট হয়ে আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা নিতে হয়েছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.