জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার সদস্য সন্দেহে পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে ধৃত চার জনের কাছ থেকে একটি ‘ভুয়ো’ ভোটার কার্ড পাওয়া গিয়েছিল বলে মঙ্গলবার দাবি করলেন মামলার সাক্ষী, সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) এক কনস্টেবল। যদিও কার্ডটির বৈধতা যাচাইয়ের জন্য বিএসএফের তরফে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি বলেও অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীর প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছেন তিনি।
২০০৭ সালের ৩ এপ্রিল পেট্রাপোল সীমান্তে শেখ নঈম ওরফে সামির, শেখ আবদুল্লাহ, মুজফ্ফর আহমেদ রাঠৌড় এবং মহম্মদ ইউনুসকে ধরেন বিএসএফের ১৯৩ নম্বর ব্যাটেলিয়নের জওয়ানেরা। ধৃতদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র-সহ বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। গত ১৬ জুলাই থেকে মামলার শুনানি শুরু হয়েছে বনগাঁ আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফাস্ট ট্র্যাক-২) অপরাজিতা ঘোষের এজলাসে। জম্মুতে কর্মরত তিন বিএসএফ জওয়ানের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
সরকারি আইনজীবী সমীর দাসের প্রশ্নের জবাবে ২০০৭-এর ওই গ্রেফতারের সময়ে পেট্রাপোলের হরিদাসপুর ক্যাম্পে কর্মরত বিএসএফ কনস্টেবল আর রামকৃষ্ণ জানান, ধৃত চার জনের কাছ থেকে সিম-কার্ড ছাড়া একটি মোবাইল ফোন, চন্দ্রশেখর আজাদ ইউনিভার্সিটির একটি পরিচয়পত্র, কিছু টাকা, ভারতীয় নাগরিক হিসাবে একটি ‘নকল’ ভোটার পরিচয়পত্র-সহ কিছু জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়। ‘সিজার লিস্ট’ তৈরি করেন তৎকালীন কোম্পানি কম্যান্ডান্ট অমিত যাদব। সেখানে সই করেছিলেন রামকৃষ্ণ।
অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী অমিতাভ গঙ্গোপাধ্যায় জানতে চান, যে ভোটার কার্ডটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল, তা ‘নকল’ না ‘আসল’, তা কি কলকাতায় নির্বাচন কমিশনের কাছে পরীক্ষা করানো হয়েছিল? রামকৃষ্ণ জানান, এমন কোনও পরীক্ষা করানো হয়নি।
বীরেশ্বর কুমার এবং সানোয়ার হোসেন নামে আরও দুই বিএসএফ কনস্টেবলের সাক্ষ্যগ্রহণ হয় এ দিন। ১৬-৩১ জুলাই মামলার প্রথম দফার শুনানি চলাকালীন ১৩ জন বিএসএফ জওয়ানের সাক্ষ্যগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু এসেছেন ৭ জন। সমীরবাবু আদালতকে জানান, বিএসএফের কল্যাণী শাখার মাধ্যমে জওয়ানদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। যাঁরা জম্মুতে কর্মরত, কেবলমাত্র তাঁদেরই হাজির করানো গিয়েছে। বাকিরা দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে আছেন। সকলে এখনও খবর পাননি। সমীরবাবু আরও জানান, অমিত যাদব (এঁর নেতৃত্বেই ধরা পড়েছিল চার জন) চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁকে আদালতে হাজির করাতে সময় লাগবে। আগামী ১০-১৫ সেপ্টেম্বর ফের মামলার শুনানি হবে বলে জানিয়ে দেন বিচারক। |