টানা বৃষ্টি হচ্ছে না, ক্ষতির আশঙ্কা আমনে
লের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে হাওড়া জেলায়। আমন ধানের বীজতলা তৈরি করে চাষিরা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন কবে বৃষ্টি হবে সেই আশায়। বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হলেও টানা বৃষ্টি অমিল। ফলে আশঙ্কায় চাষিরা।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে যদি ভাল বৃষ্টি না-হয় তা হলে আমন চাষের ক্ষেত্রে বিপদ দেখা দিতে পারে। সেই রকম পরিস্থিতি দেখা দিলে বোরো মরসুমে যে ভাবে কৃত্রিম উপায়ে জল তুলে চাষ করা হয় সেটাই করতে হবে। এর অর্থ, জোয়ারের জল তুলে আটকাতে হবে। রিভার লিফটিং পাম্প (আরএলআই) এবং ডিপটিউবওয়েলগুলিকেও পুরোমাত্রায় চালু করতে হবে। এটা করতে গিয়ে যাতে সেচ দফতর, কৃষি প্রযুক্তি দফতর প্রভৃতির সহযোগিতা পাওয়া যায়, সে জন্য জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বিষয়টি আগাম জানিয়ে দিয়েছে জেলা কৃষি দফতর।
হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া এবং হাওড়া সদর এই দু’টি মহকুমার ১৪টি ব্লকে প্রায় ৬২ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে বলে জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। বীজতলা তৈরি হয়ে পড়ে থাকলেও মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে এখনও পর্যন্ত বীজতলা রোপণ করা সম্ভব হয়েছে বলে জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। ঠিকমতো ধানের ফলন পেতে হলে অগস্ট মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে বীজতলা রোপন করা জরুরি। একই সঙ্গে জেলা কৃষি দফতরের এক কর্তা বলেন, “২৫ অগস্ট শেষ সীমা হলেও এর কয়েক দিন আগেই বীজতলা রোপন করলে ফলন অনেক ভাল হয়। সেই হিসাবে অগস্ট মাসের ১০-১২ তারিখের মধ্যে বীজতলা রোপন করা উচিত। কিন্তু ওই তারিখের মধ্যে বৃষ্টি না-হলে ১০০ শতাংশ জমিতে বীজতলা রোপণ সম্ভব হবে কিনা তাতে সন্দেহ রয়েছে।”
জেলার মধ্যে উলুবেড়িয়া মহকুমার ৯টি ব্লকেই সব থেকে বেশি আমন ধানের চাষ হয়। এ বছর এই মহকুমায় কৃষি দফতর ৫০ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে। অন্য দিকে, হাওড়া সদর মহকুমার ৫টি ব্লকে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৫২০ হেক্টর জমি।
আমন ধান চাষে বড় সহায় হল বৃষ্টির জল। সেই কারণে শুখা মরসুমে কৃত্রিম উপায়ে জল তুলে চাষ করার জন্য যে সব পদ্ধতি রয়েছে, সেগুলি আমন ধান চাষের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু আগামী ১০-১২ দিনের মধ্যে যদি পর্যাপ্ত বৃষ্টি না-হয় তা-হলে বোরো ধানের চাষ করার জন্য জলের জোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে যে সব কৃত্রিম পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় সেগুলি আমন ধানের ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করতে হবে বলে জেলা কৃষি দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন।
কী সেই পদ্ধতি?
নদীর বুক থেকে জল তোলার জন্য যে সব আরএলআই পাম্পগুলি রয়েছে সেগুলি চালু করতে হবে। এ ছাড়াও, চালাতে হবে গভীর নলকূপ বা ডিপটিউবওয়েল। নদী থেকে জোয়ারের জল ঢুকে যাওয়া পরে খালের গেটগুলি বন্ধ করে দিতে হবে। আটকে দেওয়া জল ব্যবহার করতে হবে চাষের কাজে। অর্থাৎ বৃষ্টি না-হলে কয়েক দিনের মধ্যে শুরু করতে হবে বিপুল কর্মযজ্ঞ।
জেলায় সব থেকে বেশি আমন ধানের চাষ হয় শ্যামপুর ১ এবং ২ ব্লকে। দুটি ব্লক মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে এ বারে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে কৃষি দফতর। কিন্তু বেশিরভাগ জমিতেই বীজতলা রোপন করা হয়নি। শ্যামপুর ২ ব্লকের খিদিরপুর গ্রামের বাসুতোষ পাড়ুই বলেন, “জমি খাঁ খাঁ করছে। কবে বৃষ্টি হবে জানি না। অবিলম্বে বৃষ্টি না-হলে সর্বনাশ হয়ে যাবে।” একই বক্তব্য অন্যান্য চাষিদের। বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে জেলাশাসক শান্তনু বসু বলেন, “অবিলম্বে জেলা কৃষি দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বসে পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় স্থির করা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.