বুঝিয়ে নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসন
ত বুধবার নিজের বিয়ের কার্ড বিলি করতে বেরিয়েছিল গোঘাটের মহেশপুরের মেয়েটি। যাচ্ছিল বর্ধমানে উচালন গ্রামে দিদির বাড়িতে। কিন্তু আরামবাগ থেকে বাসে চড়া ১৫ বছরের ওই ছোট্ট কিশোরীর খুব তাড়াতাড়িই চোখ ঘুমে জড়িয়ে আসে। ঘুম যখন ভাঙল, বাস ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছে বর্ধমান শহরে!
অচেনা বাস স্ট্যান্ডে নেমে সে বুঝতে পারেনি, কী ভাবে বাড়ি ফিরবে। আশেপাশের লোককে জিজ্ঞাসা করে জায়গার নাম জানতে পারে। আর তখনই এক পুলিশের নজরে পড়ে যায়। তিনি মেয়েটিকে নিয়ে থানায় আসেন। তার কাছ থেকে পাওয়া কার্ড দেখে বর্ধমান পুলিশ বুঝতে পারে মেয়েটির বিয়ে। এবং সে নাবালিকা! সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের দায়িত্ব ঠিক করে ফেলে বর্ধমানের পুলিশ। বধর্মান চাউল্ড লাইনকে সবটা জানিয়ে পুলিশ মেয়েটিকে পাঠিয়ে দেয় বর্ধমানের একটি হোমে। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার তাকে আবার পাঠিয়ে দেওয়া হয় হুগলির উত্তরপাড়ার একটি হোমে। হোম কর্তৃপক্ষ ওই দিনই যোগাযোগ করেন মেয়ের বাড়িতে।
শুক্রবার সকালেই ওই পরিবারের লোকজন তাকে নিতে আসেন। ওই কিশোরীর বিয়ে দেওয়া হবে না, এই মর্মে মুচলেকা না দিলে হোম কর্তৃপক্ষ কিছুতেই মেয়েটিকে ছাড়তে চায়নি। অবশেষে জেদ ছেড়ে মেয়ের অভিভাবকেরা জানালেন, ১৮ বছরের আগে তাঁরা ওই মেয়ের বিয়ে দেবেন না। কিন্তু তখন কে জানতো, তাঁদের মনে কী চলছে! বাড়ি ফিরতেই বিয়ের তোড়জোর যেমন চলছিল তেমনই চলতে থাকল। তাঁরা ভেবেছিলেন এই বিয়ের কথা হোম কর্তৃপক্ষ জানতেই পারবে না।
কিন্তু আরও এক নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসনই। বর্ধমান চাইল্ড লাইন থেকে আরামবাগের এসডিও অরিন্দম নিয়োগীকে আগেই সবটা জানানো হয়েছিল। তখন থেকেই তৎপর ছিল প্রশাসন। অরিন্দমবাবু খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দেন বিডিও শিবপ্রিয় দাশগুপ্তকে। তিনি খবর পান ওই মেয়ের বাড়ির লোক বিয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি। মঙ্গলবার তাই তিনি নিজে ওই মেয়েটির বাড়ি গিয়ে বিয়ে আটকালেন। এ দিন পুলিশের সঙ্গে গ্রামে গিয়ে শিবপ্রিয়বাবু পরিবারের লোকজনকে নিয়ে প্রথমেই একটি কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করেন। আলাদা করে কথা বলেন ওই নাবালিকার সঙ্গেও। তাঁদের বোঝান, বিষয়টি কেন আইনত দণ্ডনীয়, ওই বয়সে বিয়ে হলে মেয়ের কী কী সমস্যা হতে পারে, মেয়ের সন্তানেরই বা কী সমস্যা হতে পারে সবটা বোঝান শিবপ্রিয়বাবু। অবশেষে ওই নাবালিকার পরিবার এই বিয়ের উদ্যোগ বন্ধ করেছেন। নাবালিকার বাবা রতন মালিক ও মা রেণুকা মালিক বলেন, “আমরা খেতমজুর। তাই বিয়ের কথা এগিয়ে যাওয়ায় আর পিছোতে পারিনি। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি এতে আমার মেয়েরই ক্ষতি হত।” ওই কিশোরীর কথায়, “কিছুই জানতাম না। ১৮ বছরের আগে বিয়ে করতে চাই না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.