আসমুদ্র হিমাচল নিষ্প্রদীপ। মধ্যে শুধু জ্বলজ্বল করছে দুর্গাপুর ইস্পাতনগরী।
সৌজন্যে, ডিএসপি আর তার নিজস্ব ক্যাপটিভ প্ল্যান্ট। বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক রইল ইস্পাতনগরীতে, ডিএসপি হাসপাতালে। ভুগল বাকি শিল্পাঞ্চল। কলকারখানা অচল রইল। বন্ধ ইসিএলের সব খনির উৎপাদনও। আসানসোলের ইস্কো স্টিল প্ল্যান্টে অবশ্য স্বাভাবিক কাজকর্ম হয়েছে।
আগের দিন নর্দার্ন গ্রিড স্বাভাবিক করতে সময় লেগেছিল প্রায় ১৫ ঘন্টা। এ দিনও সেই একই পরিস্থিতি হতে পারে ভেবে, বিশেষ করে ফের নর্দার্ন গ্রিড বসে যাওয়ার খবরে ছড়ায় উৎকন্ঠা। দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ ঘণ্টাখানেকের জন্য রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের আওতাভুক্ত কাঁকসা, বুদবুদ থানা এলাকায় বিদ্যুৎ আসে। মোবাইলের ব্যাটারি চার্জ করা থেকে পাম্পে জল তোলার মতো জরুরি কাজগুলি বাসিন্দারা সেই সময়ে সেরে নেন।
ডিভিসি-র কারখানার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক বিভুরঞ্জন কানুনগো জানান, ডিএসপি-র নিজস্ব ক্যাপটিভ পাওয়ার প্ল্যান্ট থাকা এবং গ্রিড থেকে নিজেদের বিছিন্ন করার ব্যবস্থা থাকায় পরিস্থিতি আপাতত সামাল দেওয়া গিয়েছে। তিনি বলেন, “কারখানা, হাসপাতাল বা টাউনশিপে প্রভাব পড়েনি। তবে দীর্ঘক্ষণ এই পরিস্থিতি চললে কী হবে বলা মুশকিল।” |
তবে রাজ্য সরকারি সংস্থা ডিপিএল যে সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, যেমন সিটি সেন্টার, বিধাননগর, এমএএমসি, সগড়ভাঙ্গায় এক বারের জন্যও বিদ্যুৎ আসেনি। সমস্ত অফিস, নার্সিংহোমে ঘণ্টার পর ঘন্টা জেনারেটর চালিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। বিদ্যুৎ ছিল না রাতুরিয়া-অঙ্গদপুর শিল্পতালুক এবং বাঁশকোপা শিল্পতালুকে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল বা ইএসআই হাসপাতালে জেনারেটর চালিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হয়। ইএসআই হাসপাতালের সুপার শোভন পন্ডা জানিয়ে দেন, ১২ ঘন্টা জেনারেটর চলার মতো ডিজেল মজুত রেখেছেন। তিনি বলেন, “শুধু পানীয় জলের সরবরাহ যদি না আসে সে কথা ভেবে দুশ্চিন্তা হচ্ছে।” অবশ্য তাঁকে বিনিদ্র রাত কাটাতে হয়নি।
দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে জেনারেটর চালিয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা গেলেও অপারেশন থিয়েটার বন্ধ ছিল বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাস। বিভিন্ন বণিক সংগঠন জানিয়েছে, বিদ্যুৎ না থাকায় ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে। তবে গ্রিড বসে যাওয়ায় ইস্কো স্টিল প্ল্যান্টে কোনও প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন কারখানার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ভাস্কর কুমার। যদিও খনিগুলিতে ব্যাপক প্রভাব পড়ে। সংস্থার সিএমডি-র কারিগরি সচিব তথা মুখপাত্র নীলাদ্রি রায় জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় খনিতে উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। কত ক্ষতি হয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। |