বয়েল-জাদুতে মুগ্ধ দুনিয়া
ত্যাধুনিক প্রযুক্তির ‘দাদাগিরি’। চোখধাঁধানো আতসবাজির খেলা। ব্রিটেনের এ কাল-সে কাল। ‘জেমস বন্ড’ ড্যানিয়েল ক্রেগের সঙ্গে ‘অভিনেত্রী’ রানি এলিজাবেথের প্রথম আত্মপ্রকাশ। স্পিডবোট চালকের ভূমিকায় ডেভিড বেকহ্যাম। এক কথায়, ২০১২ লন্ডন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ছিল ব্রিটিশ সৃষ্টিশীলতা ও উদ্দীপনার উজ্জ্বল প্রতীক।
‘স্লামডগ মিলিওনেয়ার’-এর অস্কারজয়ী পরিচালক ড্যানি বয়েলের কল্পনাপ্রসূত অনুষ্ঠান যে ২০০৮ বেজিংকে টেক্কা দেবে না, বলে দিয়েছিলেন বয়েল নিজেই। বেজিং যদি দর্শকের মনে দাগ কেটে থাকে অর্থের আতিশয্যে, নির্ভুল প্রযুক্তির প্রদর্শনীতে, তা হলে তার উত্তরসুরি স্মরণীয় হয়ে থাকবে একটা দেশের সংস্কৃতির প্রতি দায়বদ্ধতায়। যে দেশ নিজের ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব করে ঠিকই। আবার নিজেকে নিয়ে হাসতেও পিছপা হয় না।
আশি হাজার দর্শকে ভরা অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ছাগল, হাঁস, গরু চরানো গ্রাম্য মহিলাদের হাত ধরে ঢুকে পড়ে চিরাচরিত ব্রিটিশ গ্রামের পরিবেশ। তারপর ব্রিটিশ জীবনের বিবর্তন বোঝাতে গিয়ে আবির্ভাব নানা রকম মেশিন নিয়ে কারখানার শ্রমিকদের। সেখান থেকে ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস, পিটার প্যান, হ্যারি পটার, মেরি পপিন্স, মিস্টার বিন, নানা দশকে ব্রিটিশ সঙ্গীতের বিবর্তন, সামাজিক জীবনের পাল্টে যাওয়া মুখ, যুব প্রজন্মে ফেসবুক-টুইটারের প্রভাবব্রিটিশ জনজীবনের কোনও অংশই ২২৫ মিনিটের অনুষ্ঠানে বাদ দেননি বয়েল। অনুষ্ঠানের সেরা চমক কী ছিল? নজিরবিহীন ভাবে তরুণ অ্যাথলিটদের দিয়ে মশাল জ্বালানো? না ব্রিটেনের পতাকা আঁকা প্যারাশু্যটে রানির প্রবেশ? অভিন্ন রায় দিতে পারেনি ব্রিটিশ জনতা।
তবে বয়েলের সৃজনশীলতায় এতটাই প্রভাবিত বিশ্বের প্রচারমাধ্যম যে, ব্রিটিশ জীবনের সবচেয়ে কড়া সমালোচক সে দেশের মিডিয়াও প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এ মেরিনা হাইড লিখছেন, “বয়েল বুঝিয়ে দিলেন ব্রিটিশ জীবনকে ছকে বাঁধা অসম্ভব।” ‘দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ’-এর চোখে বয়েলের অনুষ্ঠান, “চোখ ধাঁধানো, পাগলামিতে ভরপুর এবং একশো শতাংশ ব্রিটিশ!”
ইংরেজরা ডান দিকে গেলে যারা বরাবর বাঁ দিকে হেঁটে এসেছে, সেই ফরাসিরাও মুগ্ধ লন্ডন অলিম্পিকের সূচনা অনুষ্ঠানে। ফ্রান্সের ক্রীড়া সংবাদপত্র লে’কিপ যেমন। “এই অনুষ্ঠান গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিল যে ব্রিটিশরা অসাধারণ সাহসী, কাব্যিক এবং কৌতুকপ্রিয়।” বিশ্বের অন্য গোলার্ধের সংবাদপত্র সিডনি মর্নিং হেরাল্ড আবার লিখেছে, বেজিং গেমসে যে কৌতুকের অভাব ছিল, সেটা খুব ভাল ভাবে তুলে ধরেছেন বয়েল। বয়েল নিজে কী বলছেন? “বেজিংয়ের অনুষ্ঠানের চেয়ে বড় কিছু হতে পারত না। আমরা চেয়েছিলাম বেজিংয়ের চেয়ে ভাল নয়, তার চেয়ে অন্য রকম কিছু করতে।”
ভবিষ্যদ্বাণী মিলিয়ে দিয়েছেন বয়েল। ‘অন্য রকম’ই হয়েছে। সিনেমার মোড়কে অলিম্পিকের বোধন আর কে কবে দেখেছে?




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.