দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
সংস্কারের অপেক্ষায়
দুর্ভোগ-সরণি
হেশতলার বাসিন্দা পরভিন খাতুনকে অ্যাম্বুল্যান্সে এসএসকেএমে আনছিলেন তাঁর আত্মীয়েরা। গার্ডেনরিচ জলপ্রকল্পের সামনের গর্তে চাকা পড়ে আটকে গেল অ্যাম্বুল্যান্সটি। পরভিনকে অনেক কষ্টে নামিয়ে, গর্ত থেকে চাকা তুলে অ্যাম্বুল্যান্স আবার রওনা দিল। শুধু পরভিনই নন, তারাতলা-সন্তোষপুর লিঙ্ক রোড দিয়ে মহেশতলা, সন্তোষপুর কিংবা আক্রা ফটকে যাতায়াত করতে গিয়ে অনেকেই এমন নানা সমস্যায় পড়েন।
গত কয়েক বছর ধরে সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ তারাতলা-সন্তোষপুর লিঙ্ক রোডের খুবই খারাপ অবস্থা। আলোর ব্যবস্থা না থাকায় সন্ধ্যার পরে সমস্যা আরও বাড়ে। রাস্তাটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে রাজ্য পূর্ত দফতরের হাইওয়ে ডিভিশন। অভিযোগ, গত পাঁচ বছরে রাস্তাটির ঠিকমতো সারাই হয়নি। মাঝেমধ্যে রাবিশ ফেলে ছোটখাটো মেরামতি হয়েছে মাত্র। এখন রাস্তার নানা জায়গায় ছোট-বড় গর্ত। বৃষ্টিতে জল জমে থাকায় অনেক সময়ে গর্ত বোঝা যায় না।
কয়েকটি জায়গায় ছোট ডোবার মতো অবস্থা হয়েছে। এর মধ্য দিয়েই বাস, অটো, গাড়ি, এমনকী বড় বড় ট্রেলার যাতায়াত করে। ফলে অসাবধান হলেই বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থার জন্য রাত সাড়ে ৮টা-৯টার পরে এই রাস্তা দিয়ে সাধারণত কোনও গাড়ি যাতায়াত করে না।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নেচার পার্কের উল্টো দিকের প্রায় ৩০০ মিটার অংশে রাস্তাটির অবস্থা ভয়াবহ। বড় বড় গর্ত হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দা মহম্মদ খালিদের কথায়: “পাশেই খিদিরপুর ডক। তাই রাস্তার পাশে ডকের মাল রাখার জন্য বড় বড় গুদাম তৈরি রয়েছে। প্রতি দিন সকাল থেকে বড় বড় ট্রেলার যাতায়াত করে। তাতেই হাল আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে।”
রাস্তার বেহাল দশার কথা স্বীকার করে মেটিয়াবুরুজের বিধায়ক তৃণমূলের মমতাজ বেগম বলেন, “আগে ওখানে বেশ কয়েক বার রাবিশ ফেলা হয়েছিল। কিন্তু ওখানে যে ভাবে বড় ট্রেলার যাতায়াত করে, তাতে এ ভাবে মেরামত করলে কোনও লাভ হবে না। রাস্তার সামনের অংশটি কংক্রিট আর বাকি অংশে ম্যাসটিক অ্যাসফল্ট না করলে রাস্তা বেশি দিন ঠিক থাকবে না।”
পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, চলতি আর্থিক বছরে এই রাস্তাটি জন্য ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু সারানো শুরু হয়নি কেন? পূর্ত দফতরের হাইওয়ে ডিভিশনের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বিনয় মজুমদার বলেন, “বার বার রাস্তাটি খারাপ হওয়ায় স্থানীয় বিধায়ক দীর্ঘস্থায়ী মেরামতির দাবি করেন। বরাদ্দ অর্থে তা করা সম্ভব নয়।” পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, গার্ডেনরিচ জলপ্রকল্প সংলগ্ন অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী মেরামতির জন্য কংক্রিট করা জরুরি। বাকি রাস্তায় ম্যাসটিক অ্যাসফল্ট করতে হবে। এর জন্য অনেক বেশি খরচ হবে। হিসেব করে তা উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.