|
অন্য স্বাদ |
সস দিয়ে যায় চিনা
সুচন্দ্রা ঘটক |
|
ছ’মাস ধরে চলেছে জোর প্রস্তুতি। নিত্য নতুন কর্মশালা।
বেবিকর্নে কখনও পড়েছে পিক্সিয়ান বিন সস্, কখনও ইউ ইয়্যাং সস্। বেজিং আর চেংদু থেকে উড়ে এসেছেন বিশেষজ্ঞ শেফ-রা। হাত মিলিয়েছেন ভারতীয় রন্ধন-বীরদের এই প্রচেষ্টায়। টার্গেট একটাই। তৈরি করতে হবে এমন কিছু চিনা খাবার, যাদের সঙ্গে কলকাতাবাসীরা খুব একটা পরিচিত নন। কিন্তু শহুরে বাঙালির অত্যন্ত কাছের হয়ে ওঠার সম্ভাবনা অবশ্যই থাকতে হবে সে সব রেসিপিতে। উদ্যোগে প্রধান অস্ত্র হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল কয়েকটি নতুন ফ্লেভারের সস্। তা দিয়েই হল বাজি মাত। |
|
ভারতীয় জিভের সঙ্গে বহু দিন ধরেই স্থায়ী বন্ধুত্ব অয়স্টার সস্, পাম অথবা চিলি বিনের মতো স্বাদের। কিন্তু চিনে এমন আরও অনেক সস্ রয়েছে যা ঢাললে অতি-পরিচিত রেসিপিও জিভে অচেনা ঠেকবে। আর চিনা খাদ্যের সঙ্গে বাঙালি জিভের বহু দিনের এই বোঝাপড়ার মাঝে চলে আসতে পারে প্রথম প্রেমের রোমান্স ফিরে পাওয়ার মতো সুযোগ। সে সব ভেবেই ‘মেনল্যান্ড চায়না’র মেনুতে এ বার এল নতুন সস্ পর্ব। পাতে পড়তে পারে চিকেন ইন চেংদু পিকল্ড চিলি সস্ বা স্টিম্ড ফিশ ইন পিক্সিয়ান বিন সসের মতো বেশ কিছু নতুন রেসিপি। পরিচিত আবহে নতুন ধাঁচের কিছু খাবারের সঙ্গে আলাপ সেরে নেওয়ার অভিজ্ঞতাই তো এই প্রচেষ্টার মূল উদ্দেশ্য। তার মাধ্যমেই অতি চেনা চিনা রান্নাগুলোকে এ বার নতুন করে চিনে নেওয়ার সুযোগ মিলছে কলকাতায় বসেই।
তবে সসেই শেষ নয় এ সফর। স্বাস্থ্য সচেতনদের দিকেও বিশেষ নজর দিয়েছেন শেফরা। তুলে আনা হয়েছে চিন দেশের মা-কাকিমাদের হেঁশেলের কিছু ঘরোয়া রেসিপি। তাই বেশ কয়েক ধরনের হার্বাল স্যুপ আর নতুন নতুন স্বাদের ডিমসামও এখন হাজির চিনা খাদ্যপ্রেমী বাঙালিদের জন্য। |
|
নানা ধরনের উপকারী শাক-পাতা দিয়ে তৈরি এই সব স্যুপই প্রধান খাদ্য হিসেবে থাকে বহু চিনা পরিবারের রোজের ঘরোয়া মেনুতে। জিনসেং বা রেড বেরির মতো পাতা যেমন স্বাস্থ্য রাখে, তেমনই আবার স্বাদও বাড়ায়। সঙ্গ দিতে বেছে নেওয়া যায় বেক্ড সব্জি, কাঁকড়ার মাংস বা চিকেন ভরা কিছু ডিমসাম।
নতুন এই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে মেনুতে যোগ হয়েছে চিন মুলুকের বিশেষ কিছু ‘ক্লে-পট’ রান্নাও। মাটির পাত্রে গরম গরম চিকেন বা মশলাদার মাছ দেখে কয়েক মুহূর্তের জন্য হঠাৎ যদি বদলে যায় স্থান-কালের জ্ঞান, তাতেও অবাক হওয়ার নেই। কোনও খাবারের পাত্রের কাছ থেকে বাঙালির প্রত্যাশা আরও বাড়িয়ে দিতেই তো এত দিন ধরে চলেছে ভাবনাচিন্তা!
|
ছবি: দেবাশিস রায় |
|