সদ্যোজাতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে ১৫ অগষ্ট রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট (এসএনসিইউ) চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। রবিবার রায়গঞ্জে এ কথা জানিয়েছেন রায়গঞ্জের বিধায়ক তথা রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য মোহিত সেনগুপ্ত। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক প্রতিনিধি দল নবনির্মিত এসএনসিইউ ইউনিট পরিদর্শন করার পর সেটি চালু করার বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও উত্তর দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দেন, শীঘ্রই এসএনসিইউ চালু করার চেষ্টা চলছে। রায়গঞ্জের বিধায়ক বলেন, “বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ভবনে স্বাস্থ্য দফতরের কমিশনার দিলীপ ঘোষের সঙ্গে এসএনসিইউ চালুর ব্যাপারে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ১৫ অগষ্ট ইউনিট চালু করা হবে। দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের এসএনসিইউ চালুর দাবি জানাচ্ছিলাম। সেটি চালুর ব্যাপারে তাঁরা উদ্যোগী হওয়ায় খুশি হয়েছি।” হাসপাতালের সুপার অরবিন্দ তান্ত্রি বলেন, “শিশু বিভাগের পরিকাঠামো ভাল নয়। দু’বছর আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে এসএনসিইউ চালুর প্রস্তাব পাঠানো হয়। ইউনিট তৈরির কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর কয়েকজন চিকিৎসক নিয়োগ এবং জরুরী কিছু যন্ত্রসামগ্রী বরাদ্দ করার কথা জানিয়েছেন। শুনেছি ১৫ অগষ্ট সেটি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।” প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচে এসএনসিইউ গড়ে তোলার কাজ শেষ হয়েছে। বাতানুকুল ওই ইউনিটে সদ্যোজাতদের জন্য ১২ টি শয্যা রয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ওই ইউনিটের জন্য ৯ জন চিকিৎসক ও ১২ জন নার্স নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেয় হাসপাতালের সাধারণ স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষন দিয়ে ওই ইউনিটের বিভিন্ন বিভাগের দ্বায়িত্ব দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই ৫ জন চিকিৎসককে নিয়োগপত্র দিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি ৪ জন চিকিৎসক ও নার্সদের নিয়োগপত্র দিয়ে খুব শীঘ্রই ইউনিটের দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, ২৮ দিন অবধি বয়সী অসুস্থ সদ্যোজাতদের এসএনসিইউ ইউনিটে ভর্তি রেখে নিখরচায় চিকিৎসা হবে। মূলত সেপটিসিমিয়া, লো বার্থ ওয়েট, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া-সহ অন্তত ৩০টি জটিল রোগের চিকিৎসা করানো হবে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ওই ইউনিটের জন্য ওয়ার্মার, ফোটোথেরাপি, পালস অক্সিমিটার, ইনফিউশন পাম্প ও অক্সিজেন কনসিনট্রেটর-সহ ৩০টি যন্ত্র বরাদ্দ করে। কয়েক মাস আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। শিশুবিভাগে চিকিৎসাধীন এক সদ্যোজাতের মৃত্যুর ঘটনায় ব্যাপক হইচই হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে ২৩ জন শিশুকে অন্যত্র রেফার করে দেন। কংগ্রেস ও তৃণমূলের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এসএনসিইউ ইউনিটের কাজ শেষ করার দাবি জানানো হয়। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ পৃথক ভাবে বলেন, “নির্মীয়মান এসএনসিইউ পরিদর্শন করে এসেছি। সেটি চালু হলে অসুস্থ ও জটিল রোগে আক্রান্ত শিশুদের উন্নত চিকিৎসা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অসুবিধা হবে না।” |