কোথাও বড়-বড় ফাটল। কোথাও বা বড় গর্ত। আবার কোনও জমি ক্রমে নিচু হয়ে যাচ্ছে। এমনই ঘটছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর-১ ব্লকের দাসপুর-১ পঞ্চায়েতের ধরমপুর, শ্যামসুন্দরপুর এলাকায়। উদ্বিগ্ন এলাকার মানুষ। তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না, পরিণতি কী দাঁড়াবে। এলাকার মানুষজন স্থানীয় প্রশাসনকেও বিষয়টি জানিয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ, ঘটনার কারণ জানতে বা জানাতে প্রশাসনের তরফে সে রকম উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। যদিও ঘাটালের মহকুমাশাসক অংশুমান অধিকারীর বক্তব্য, “বিষয়টি জানার পরেই এলাকায় গিয়েছিলাম। ছবিও তোলা হয়েছে। যাতে দ্রুতই কারণ জানা যায়, তার চেষ্টা চলছে।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, বেশ কিছু দিন ধরেই দাসপুরের ওই সব গ্রামের চাষযোগ্য জমিতে এ রকমের ফাটল বা গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এখনই প্রায় দেড় থেকে ২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে একাধিক জমিতে এ রকমের ফাটল বা গর্ত হয়েছে। নদী থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার দূরের এই সব জমিতে পুরো অংশ জুড়ে নয়, কিছু এলাকায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ভয়ে অনেকে সেখানে চাষ করছেন না। |
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক মাস আগে এলাকার নন্দলাল পোড়ের জমিতে প্রথমে ফাটল দেখা যায়। ইদানীং আরও জমিতে একই অবস্থা হয়েছে। স্থানীয় অনুপ বেরা, সদানন্দ বেরা, তারাপদ সাঁতরারা বলেন, “আমাদের জমিতে এ রকমের ফাটল ও গর্ত তৈরি হয়েছে। পুরো জমিতে না হওয়ায় এখনও চাষ করছি। তবে যে হারে ফাটল দেখা দিচ্ছে, তাতে পরে আর চাষ করা যাবে কি না, বুঝতে পারছি না।’’
এখন প্রশ্ন, কেন এ রকম ঘটনা ঘটছে? জমি বা মাটি নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেন, তাঁরাও এখনও পরিষ্কার ভাবে কিছু বলতে পারছেন না। ফাটলের সম্ভাব্য বেশ কয়েকটি কারণ অবশ্য জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের সহ কৃষি-অধিকর্তা (সয়েল-সার্ভে) মানস ওঝা ও বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যলয়ের ভূগোলের বিভাগীয় প্রধান রামকৃষ্ণ মাইতি। তাঁরা বলেন, “পুরনো পলি এবং নতুন পলির সংযোগস্থলে জল ও বাতাস আটকে থাকলে এবং পরে যদি ওই জল ও বাতাস কোনও কারণে অপসারিত হয়--তা হলে ফাটল দেখা দিতে পারে। চাষের কাজে দীর্ঘ দিন ধরে পাম্প থেকে জল তোলা হলে এবং জলের সঙ্গে বালি উঠলেও এ রকম হতে পারে।” জমিতে দিনের পর দিন জল জমে থাকা ও সেই জল ক্রমে শুকনো হওয়ার কারণেও (ডি-ওয়াটারিং) এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে তাঁরা ইঙ্গিত করেছেন। |