অলিম্পিক শুরুর আগে হকিতে ডামাডোল
সর্দার-তিরকের চোট নিয়ে আতঙ্কে ভারত
প্রস্তুতি টুর্নামেন্টে বিশ্রী ফল। গোল করায় চূড়ান্ত ব্যর্থতা। সঙ্গে নতুন নীল টার্ফে খেলা নিয়ে মারাত্মক সমস্যা।
এত কিছুর পর অলিম্পিক শুরুর ঠিক মুখে ভারতীয় হকির জন্য আরও খারাপ খবর। দলের দুই নির্ভরযোগ্য প্লেয়ারের গুরুতর চোট সারেনি। দলের এক নম্বর ডিফেন্ডার ইগনেস তিরকের চোট গোড়ালিতে। এক নম্বর মিডফিল্ডার সর্দার সিংহের হাঁটুর নীচে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, ভারতের স্পেনীয় কোচ মাইকেল নবস বলে ফেললেন, “টিমের আসল দু’জনই চোট নিয়ে ভুগছে। খুব খারাপ সময় যাচ্ছে আমাদের।”
বলা হয়, অলিম্পিকের ঠিক আগের সপ্তাহের প্রস্তুতি টিমের কাছে অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ। ঘটনা হচ্ছে এই দু’জনই একটা লম্বা সময় পুরোপুরি প্র্যাক্টিসের বাইরে। অথচ দু’জনের একজন সম্পর্কে ভাবা হচ্ছিল অলিম্পিকেও ভারতীয় রক্ষণের ভিত গড়বেন। তিনি ইগনেস। খুঁড়িয়ে হাঁটার অবস্থায় একটু উন্নতি করে গতকাল সন্ধ্যায় যাঁকে হাল্কা প্র্যাক্টিসে দেখা গিয়েছে। আর মিডফিল্ডার সর্দার তো সাম্প্রতিক ভারতীয় হকির শ্রেষ্ঠ সম্পদ। বিশ্বের অন্যতম সেরা মিডফিল্ডার বলা হচ্ছে তাঁকে। জখম পা নিয়ে যাঁর এখনও নাজেহাল অবস্থা।
আপাতত খবর হকি দলের মেডিক্যাল কর্মীরা দু’জনকেই মাঠে ফেরাতে ‘ওভারটাইম’ দিচ্ছেন। নবস ভারতীয় হকিপ্রেমীদের সান্ত্বনা দেওয়ার কায়দায় জানাচ্ছেন, দু’জনই নাকি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী ব্যাপারটা এ রকম, “আমাদের কপাল নেহাত ভাল বলে দু’জনই আস্তে আস্তে সুস্থ হচ্ছে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে প্রথম ম্যাচেই হয়তো ওদের পেয়ে যাব।” প্রথম ম্যাচ ৩০ জুলাই। প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস। মারণ-গ্রুপে অন্য হার্ডলগুলোও রীতিমতো কড়া। নিউজিল্যান্ড (অগস্ট ১), জার্মানি (অগস্ট ৩), কোরিয়া (অগস্ট ৫) ও বেলজিয়াম (অগস্ট ৭)।
সর্দার-তিরকে। সেরা দু’জনকে নিয়েই এখন সংশয়।
নবস জানাচ্ছেন, স্পেন সফরের প্রথম ম্যাচেই প্রতিপক্ষের জোরালো একটা শট খুব কাছ থেকে সর্দারের পায়ে লাগে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে পরের কোনও ম্যাচেই তাঁকে নামানো যায়নি। লন্ডন পৌঁছনোর ঠিক আগে ইউরোপ সফরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে গোড়ালি মচকায় ইগনেসের। পরের তিনটি ম্যাচেই তাঁকে বাইরে রেখে টিম নামাতে হয়। অলিম্পিকে আর পাঁচটা কাঁটার মতো এখন নবসের বড় ব্যথার জায়গা এই দু’জনের চোট। এটা নিয়ে উদ্বেগ আড়াল না করে আজ বলে দিলেন, “আমার স্ট্র্যটেজিতে ইগনেস আর সর্দারের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। স্বভাবতই ওদের চোট আমাকে ভাবাচ্ছে। তবু আশা করছি ডাচদের বিরুদ্ধে নামার আগে সব ঠিক হয়ে যাবে।”
কেন কোচ বলছেন সর্দার আর ইগনেসই তাঁর ভরসার প্রধান দুটি জায়গা?
স্পেনীয় কোচ ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, “ইগনেস সারাক্ষণ আমার ডিফেন্সের ছন্দটা ধরে রাখে। বিশেষ করে প্রতি পর্বের শেষ দিকটায় যখন প্রতিআক্রমণের অসম্ভব চাপ থাকে, তখন ওর অভিজ্ঞতাই উতরে দেয়। আর সর্দার হচ্ছে বিশ্বসেরা মিডিওদের একজন। আমার গেমমেকার। আরও বড় কথা দু’জনের কেউ কখনও ভেঙে পড়ে না। এখন যেমন চোটের মধ্যেও ওরা টিমে ফিরতে ছটফট করছে।”
এ বারের টিমে মাত্র দু’জন আগে অলিম্পিকে খেলেছেন। এক জন ইগনেস তিরকে। লন্ডনে যাঁর খেলায় প্রশ্নচিহ্ন দেখা যাচ্ছে।
অন্যজন সন্দীপ সিংহ। পেনাল্টি কর্নার মারায় টিমের এক নম্বর লোক। বিশ্বসেরাদের একজনও। যাঁর কাছে অলিম্পিকই হকির শেষ কথা। আটবারের সোনাজয়ী ভারত গতবার বেজিংয়ে যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। এ বারও না পারলে কী হত? সন্দীপ বলেছেন, “ভারতীয় হকিকে তা হলে লোকে ডাইনোসর বলত। এই গ্রহের বিলুপ্ত প্রাণীটার মতো ভারতীয় হকিও নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত।”
সন্দীপ আলোর খোঁজে দিশেহারা ভারতীয় হকি সম্পর্কে আশার কথাও শুনিয়েছেন। যদিও সেটা নিছকই ‘ভাগ্যে’ বাজি ধরার মতো কথা। পেনাল্টি কর্নারে প্রাজ্ঞ এই তারকার হঠাৎই মনে হচ্ছে, “সে-ই আটচল্লিশে লন্ডন থেকে ভারত অলিম্পিক সোনা এনেছিল। হতে পারে শহরটা আমাদের কাছে এ বারও ‘লাকি’ হয়ে উঠবে...।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.