কেরলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
ভর্ৎসনা, ফের শাস্তি ভিএস-কে
রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরাগভাজন হয়ে ফের শাস্তি পেলেন ভি এস অচ্যুতানন্দন। কেরলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ধামাচাপা দিতে গিয়ে রাজ্যে এই মুহূর্তে দলের জনপ্রিয়তম নেতাকে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করল সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি। তবে পিনারাই বিজয়নদের প্রবল দাবি সত্ত্বেও ভিএস-এর বিপুল জনপ্রিয়তার কথা ভেবেই তাঁকে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বরখাস্ত করার মতো কড়া পদক্ষেপ করা হল না। সীতারাম ইয়েচুরির নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্যান্য রাজ্যের নেতারা ভিএস-কে কড়া শাস্তির বিপক্ষেই মত দেন। শেষ পর্যন্ত তাঁদের যুক্তি মেনে নেন প্রকাশ কারাট।
এই নিয়ে তৃতীয় বার সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ভিএস-এর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিল। তার পরেও অবশ্য কেরলে সিপিএমের সঙ্কট এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মিটবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। রাজ্য সম্পাদক পিনারাই বিজয়ন ও বিরোধী দলনেতা ভিএস এর আগেও প্রকাশ্য কলহে জড়িয়েছিলেন। যার জেরে ২০০৭ সালে দু’জনকেই পলিটব্যুরো থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর পরে ২০০৯ সালে পলিটব্যুরো থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ভিএস-কে। এ বার দলত্যাগী সিপিএম নেতা টি পি চন্দ্রশেখরণের হত্যার পরে নিজের দলের দিকেই সন্দেহের আঙুল তুলেছিলেন ভিএস। রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় নেতাদের চিঠিও দেন। তার জেরে ফের শাস্তি। কিন্তু এ বার কি বিবাদ থামবে? কারাটের যুক্তি, “ভিএস নিজেও আত্ম-সমালোচনা করে স্বীকার করেছেন যে, তাঁর কিছু মন্তব্য ও পদক্ষেপ ভুল ছিল এবং তা এড়ানো যেত।” একই সঙ্গে কারাট স্বীকার করেছেন, সামগ্রিক ভাবে এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং তা ঠেকাতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা তাঁর কাছে মোটেও ‘আনন্দদায়ক বিষয়’ নয়।
ভিএস-এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার পরে এ বার সামগ্রিক ভাবে কেরলে দলের ভাবমূর্তি উদ্ধারের জন্য মাঠে নামতে হচ্ছে সিপিএম নেতৃত্বকে। চন্দ্রশেখরণের হত্যার ঘটনায় পুলিশ দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে গ্রেফতার করেছে। সিপিএমের দাবি, কেরলে কংগ্রেস সরকারের নির্দেশেই পুলিশ মিথ্যে মামলায় তাদের নেতাদের ফাঁসাচ্ছে। কিন্তু দলের নেতা এম এম মণি যে ভাবে প্রকাশ্যে দলের খুনের-রাজনীতির বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন, তাতে সমস্যা বেড়েছে। বিজয়নের ঘনিষ্ঠ এই নেতাকে তাঁর পদ থেকে সরানো হয়েছে। মণির বিরুদ্ধে আরও কড়া শাস্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিজয়নকে। কারাটের যুক্তি, “দলীয় নেতৃত্ব বা কোনও কমিটি কখনও কাউকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয়নি। এর বাইরে দলের মধ্যে কেউ এই ধরনের কাজে জড়িত ছিল কি না, তা দল তদন্ত করবে।” সিপিএম সূত্রের খবর, এ জন্য তদন্ত কমিশন গঠন করা হতে পারে। আগামিকাল থেকে শুরু হওয়া কেরলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ও রাজ্য কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হবে। কারাটও সেখানে উপস্থিত থাকবেন।
কেন্দ্রীয় কমিটিতে অনেক সদস্যই ভিএস-এর পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেন, মণির মন্তব্যের পরে গোটা দেশে দলকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। চন্দ্রশেখরণের মতো দলত্যাগী নেতা বা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবিলায় সিপিএম ‘খুনের রাজনীতি’ করে, অন্যান্য রাজ্যেও এই অভিযোগ তোলার সুযোগ পেয়েছে বিরোধীরা। সে দিক থেকে চন্দ্রশেখরণের পরিবারের পাশে ভিএস দাঁড়ানোয় দলের ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও রক্ষা পেয়েছে। যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক, সেই ভিএস কিন্তু বরাবরের মতোই অবিচল। কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শেষে রসিকতার ঢঙে তাঁর মন্তব্য, “সাধারণ সম্পাদক বৈঠক ডেকেছিলেন। এসেছিলাম। উনি আলোচ্যসূচি ঠিক করে দিয়েছেন। আলোচনা করেছি। এ বার উনি বৈঠক শেষ বলে ঘোষণা করেছেন। তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি!”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.