|
|
|
|
তরজা কিন্তু চলছেই |
বরুণ বিশ্বাসের খুন নিয়ে রাজনীতি চায় না সুটিয়া |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গোবরডাঙা |
রাজীব দাস হত্যাকাণ্ডের পরে ‘লাশের রাজনীতি’র বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন বারাসতের সাধারণ মানুষ। বরুণ বিশ্বাসের খুনকে ঘিরেও রাজনীতি চাইছে না সুটিয়া।
কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই ‘ঘনিষ্ঠতা’ ছিল না সুটিয়া গণধর্ষণ মামলার অন্যতম সাক্ষী বরুণের। যদিও তাঁর মৃত্যুর পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে শুরু হয়েছে তরজা। বিষয়, সুটিয়া গণধর্ষণ-কাণ্ডের পরে কোন দল কতটা ছিল সুটিয়ার মানুষের পাশে। যা শুনে বরুণের দাদা অসিত বিশ্বাসের আর্জি, “আমার ভাইয়ের খুনের ঘটনাকে সামনে রেখে কেউ যেন নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য রাজনীতি না করেন।”
গত ৫ জুলাই গোবরডাঙা স্টেশনের সামনে দুষ্কৃতীরা গুলি করে মারে স্কুলশিক্ষক বরুণকে। স্থানীয় মানুষের একাংশের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটকে ‘পাখির চোখ’ করে এলাকার জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব বরুণের মৃত্যুকে নিয়ে ময়দানে নেমেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বরুণের মৃত্যুর পরে তৃণমূল ইতিমধ্যেই গাইঘাটায় ‘প্রতিবাদ সভা’ করেছে। কংগ্রেস, ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রতিনিধিরা বরুণের বাড়িতে গিয়েছেন। সোমবারও সেই রাজনীতিই চলেছে।
এ দিন গোবরডাঙা স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের সামনে (এখানেই খুন হন বরুণ) সভা করে বামপন্থী চারটি মহিলা সংগঠন। গণধর্ষণের ঘটনা জানাজানির পরে বামেরাই সুটিয়ার মানুষের ‘পাশে থেকেছেন’ বলে সভায় দাবি করা হয়। মহিলা সংগঠনের নেত্রী তথা রাজ্যের প্রয়াত মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তীর স্ত্রী রমলা চক্রবর্তীর দাবি, “২০০২ সালে আমাদের আন্দোলনেই দোষীরা ধরা পড়েছিল। আর বরুণকে খুনের ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীরা এখনও অধরা। ওরা (দুষ্কৃতী) জানে, এই সরকার তাদেরই।” ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেন তিনি।
বামেদের সভার কিছু ক্ষণের মধ্যে একই এলাকায় মাইক বেঁধে সভা শুরু করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। প্রকাশ্যে ২১ জুলাই সমাবেশের ‘প্রস্তুতিসভা’ বলা হলেও বরুণবাবুকে খুনের প্রসঙ্গই সেখানে বারবার উঠে আসে। গণধর্ষণ কাণ্ডের পরে সিপিএম সুটিয়ার মানুষের স্বার্থে আন্দোলন করেনি বলে অভিযোগ তোলা হয়। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কটাক্ষ, “আজকে যারা (বাম) নাচানাচি করছে, তাদের সে দিন দেখাই যায়নি! সেই লজ্জা ঢাকতেই ভোটের দিকে তাকিয়ে ওরা আসরে নেমে পড়েছে।”
নিহতের দাদা অসিতবাবু বলছেন, “বরুণের সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। ও মারা যাওয়ার পরে বিভিন্ন দলের অনেকে এসেছেন। তাঁদের বলেছি, এই ঘটনায় রাজনীতির রঙ লাগাবেন না।” ‘প্রতিবাদী মঞ্চ’-এর সভাপতি ননীগোপাল পোদ্দার বলেন, “দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন পর্বে কোনও দল এই মঞ্চকে প্রভাবিত করতে পারেনি। পারবেও না।”
খাদ্যমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, “সুটিয়া পঞ্চায়েত আমাদের। পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদও আমাদের। ২০০১ থেকে ২০১১ পর্যন্ত আমি এখানকার (গাইঘাটা) বিধায়ক ছিলাম। শুরু থেকে আমরাই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। আমাদের ভূমিকা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।” |
|
|
|
|
|