মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পাননি। তাই মহাকরণের এক কর্মীর মাথাতেই হাতুড়ির ঘা বসিয়ে দিলেন এক বহিরাগত প্রৌঢ়। অনিমেষ মিশ্র নামে ওই ব্যক্তির হাতুড়ির আঘাতে জন অভিযোগ ও সহায়তা কেন্দ্রের কর্মী অলোক সাহার মাথা ফেটে যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন বলে সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ মহাকরণের ১ নম্বর গেটে ২৮ নম্বর ঘরের সহায়তা কেন্দ্রে চিঠি দিতে হাজির হন অনিমেষবাবু। মমতা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে ওই ঘরটিই তাঁর কাছে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট হয়েছে। অলোকবাবু ওখানেই কর্মরত। এ দিন তাঁর কাছে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পরে আচমকা ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বার করে অলোকবাবুর মাথায় মারেন ওই প্রৌঢ়। প্রচণ্ড আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন অলোকবাবু। পুলিশ ও অন্য কর্মীরা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে অনিমেষবাবুকে ধরে ফেলেন। তাঁকে গ্রেফতার করে হেয়ার স্ট্রিট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তার আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান পুলিশ কমিশনার-সহ লালবাজারের পদস্থ কর্তারা। তাঁরা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। খতিয়ে দেখেন মহাকরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও। জিজ্ঞাসাবাদ করেন অনিমেষবাবুকে। |
ধৃত অনিমেষ মিশ্র। নিজস্ব চিত্র। |
কিন্তু অনিমেষবাবু এই কাজ করলেন কেন? পুলিশ ও মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সূত্রের খবর, জমি সংক্রান্ত একটি বিবাদ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানাতে আগেও কয়েক বার মহাকরণে এসেছেন অনিমেষবাবু। তাঁর ইচ্ছে ছিল, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সরাসরি অভিযোগ জানাবেন। কিন্তু অনুমতি মেলেনি। পুলিশের অনুমান, সেই ক্ষোভ থেকেই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তবে এই ঘটনার পরেও মহাকরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই বলেই মনে করেন পুলিশকর্তারা।
ধৃতের বাড়ি নদিয়ার কৃষ্ণনগরের নগেন্দ্রনগরে। আগে থাকতেন ধুবুলিয়ার রেলবাজারে। তাঁর ছেলে অক্ষয় মিশ্র বলেন, “মা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন চার বছর আগে। বাবা কাপড়ের ব্যবসা করেন। আমি তাঁকে মাঝেমধ্যে সাহায্য করি।”
প্রতিবেশীরা জানান, অনিমেষবাবু এবং তাঁর ছেলে প্রায় কারও সঙ্গেই তেমন মেলামেশা করেন না। সমর পাত্র নামে পাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, “ওঁরা বাপ-ছেলে নিজেদের মতোই থাকেন। কেউ খুব একটা মিশুকে
নন। ভক্তিমূলক গান চালিয়ে সন্ধ্যাবেলা পুজো করেন বাড়িতে।” এ দিন সন্ধ্যায় মিশ্রদের বাড়িতে যায় পুলিশ। ওই প্রৌঢ় সম্পর্কে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খোঁজখবর নেয় তারা। |