দ্বন্দ্বে বন্ধ পঞ্চায়েত
তৃণমূল কংগ্রেসের দুই গোষ্ঠীর কোন্দলের জেরে টানা তিন ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে তুফানগঞ্জের নাটাবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত দফতর। মঙ্গলবার থেকে ওই পঞ্চায়েত দফতর বন্ধ হয়ে রয়েছে। সোমবার তৃণমূলের দখলে থাকা ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধানের অনুগামী দুই শিবিরের মধ্যে ব্যাপক গোলমাল হয়। গোলমালের সময় ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট ও গ্রাম রোজগার সেবককে মারধর করার পাশাপাশি প্রধানকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। তার জেরেই মঙ্গলবার থেকে পঞ্চায়েত প্রধান ও কর্মীরা দফতরে আসছেন না। ফলে গ্রাম পঞ্চায়েতের সমস্ত কাজকর্ম অচল হয়ে পড়েছে। আর্থিক আয়ের শংসাপত্র থেকে একশো দিনের কাজ, রাস্তা নির্মাণ, কালভার্ট তৈরির উদ্যোগ সবই থমকে গিয়েছে। সমস্যা মেটাতে দুই পক্ষকে নিয়ে বিডিও’র ডাকা শান্তি বৈঠকও ভেস্তে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্ষোভ বাড়ছে এলাকার বাসিন্দাদের। তাতে অস্বস্তিতে পড়েছেন প্রশাসনের কর্তারাও। প্রধান ও উপপ্রধান যুযুধান দুই শিবিরই ওই পরিস্থিতির জন্য পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন কর্মীরাও। নাটাবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান আদুরি রায়ের অভিযোগ, “সোমবার পরিকল্পিত ভাবে উপপ্রধান ও তাঁর সঙ্গী অন্য দফতরের এক কেপিএস সহ দুই সরকারী কর্মীর নেতৃত্বে কিছু লোক নানা ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে আচমকা দফতরে ঢুকে গোলমাল করেন। দুই কর্মীকে মারধর করা হয়। আমাকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। রাতে মিছিল করেও নানা হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বাধ্য হয়েই নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের জন্য মঙ্গলবার থেকে দফতরে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে পারছি না। কর্মীরাও ওই কারণে দফতরে যেতে পারছেন না। সমস্ত ঘটনার কথাই বিডিওকে জানিয়েছি।” ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলেরই সুজিত চাকির অভিযোগ, “প্রধান ও কিছু কর্মী মিলে ব্যাপক দুর্নীতি করছেন। ওই কর্মীরা খেয়ালখুশি মত দফতরে আসছেন। এসব নিয়ে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা সোমবার প্রতিবাদ জানাতে যান। কাউকে মারধর করা হয়নি। তার পরেও পরিষেবা বন্ধ করে মঙ্গলবার থেকে প্রধানের নির্দেশে দফতর বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এতে অনেকেই সমস্যায় পড়ছেন। দলে আলোচনা করে অফিস সচল করার আর্জি নিয়ে শুক্রবার বিডিও’র কাছে যাওয়া হবে।” প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রধান ও উপপ্রধানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই মতবিরোধ চলছে। সম্প্রতি ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের চাড়ালজানি এলাকায় একটি পাকা রাস্তা তৈরির কাজ নিয়ে তা চরম আকার নিয়েছে। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপ প্রধান সুজিত চাকি জানান, চাড়ালজানি তে আমার বুথে কাজ শুরু করা করা হলেও তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। তাঁর অভিযোগ, প্রধান নিজের পচ্ছন্দ মত লোককে ওই কাজের বরাত দিয়েছেন। নাটাবাড়ির তৃণমূল প্রধান আদুরি রায় পাল্টা বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। নিয়ম মেনেই ওই কাজ শুরু করা হয়।” সোমবার দফতরে ঢুকে পড়া লোকজন ওই রাস্তার কাজ নিয়েও অভিযোগ তোলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পরিস্থিতি মেটাতে তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের বিডিও প্রধান ও উপপ্রধান যুযুধান দুই শিবির কে নিয়ে বৈঠক ডাকেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, উপপ্রধান ওই বৈঠকে উপস্থিত না হওয়ায় তা ভেস্তে যায়। তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের বিডিও তাপস সিংহরায় বলেন, “ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭ জন কর্মীই নিরাপত্তা জনিত উদ্বেগের কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবারেও আমার অফিসেই হাজিরা দিয়েছেন। আলোচনার মাধ্যমে মঙ্গলবার সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করেছিলাম। ফের শুক্রবারের থেকে দফতর খোলার চেষ্টা চলছে।” ঘটনার জেরে দুর্ভোগ বেড়েছে বাসিন্দাদের। নাটাবাড়ির বাসিন্দা তপন রায় বলেন, “হাসপাতালে চিকিসাধীন আত্মীয়ের জন্য আয়ের শংসাপত্র দরকার। বৃহস্পতিবার ওই অফিস বন্ধ থাকায় তা পেলাম না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.