|
|
|
|
মালিকানা সমস্যা মেটায় চাষিদের পাশে প্রশাসন |
নারায়ণ দে • আলিপুরদুয়ার |
জমির মালিকানা সমস্যা মেটায় বক্সা পাহাড়ের কমলা চাষিদের সাহায্যে এগিয়ে এল উদ্যান পালন দফতরও। প্রায় দু’দশক ধরে পোকার আক্রমণের জেরে এই এলাকার চাষিরা কমলা লেবু উৎপাদনে মার খাচ্ছেন। ফল পাকার আগেই ঝরে পড়ছে। জমির মালিকানা না থাকায় চাষিরা সরকারি সাহায্য পাননি। কয়েক মাস আগে রাজ্যের বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বক্সা পাহাড়ের বনবস্তির একাংশের হাতে জমির শংসাপত্র তুলে দেওয়ায় সমস্যা দূর হয়েছে। কালচিনি থেকে নির্বাচিত আরএসপি জেলা পরিষদ সদস্য রামকুমার লামা বলেন, “জমির মালিকানা না-থাকলে সরকারি সাহায্য মেলে না। দুঃস্থ চাষিদের পক্ষে সম্ভব ছিল না নিজেদের পয়সায় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে লেবু চাষের। বন দফতর শংসাপত্র বিলি করায় ওই সমস্যা দূর হয়েছে।” চাষিরাও কমলা লেবু চাষে উদ্যান পালন দফতরের দারস্থ হন। উদ্যান পালন বিভাগের কালচিনির ক্ষেত্র পরামর্শদাতা দিব্যেন্দু অধিকারী বলেন, “চাষিরা জমির শংসাপত্র পাওয়ায় আমাদের দিক থেকে সব ধরনের সাহায্যের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ বছর কমলা লেবুর মরশুমের শুরুতেই চাষিরা যোগাযোগ করেছেন। ফলন যাতে বাড়ে সেই চেষ্টা করছি।” পাশাপাশি পাহাড়ে আদা চাষেও উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। বক্সা পাহাড়ের লালবাংলো, চুনাভাটি, তাসিগাঁও, লেপচা খা, বক্সা ফোর্ট, সদর বাজার,আদমা-সহ ১১টি গ্রামে কমলা লেবুর চাষ হয়। এই এলাকার চাষিদের জীবিকা বলতে এই কমলা চাষ এবং পশু পালন। এক সময়ে এই এলাকার চাষিরা শীতে প্রচুর কমলা বিক্রি করতেন। কিন্তু পরিচর্যার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, সার, কীটনাশকের অভাবে রোগপোকার আক্রমণ শুরু হয়। পুরানো গাছের ফলনের মানও নেমে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে যান উত্তরবঙ্গের প্রত্যন্ত এই এলাকার বাসিন্দারা। জমির মালিকানা না-থাকায় সমস্যা জটিল আকার নেয়। এলাকার কমলা চাষিরা জানান, জুলাই মাসে কমলা লেবুর গাছে ফুল আসে। এক মাস পরে গাছে ফল দেখা দেয়। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে কমলা লেবু পাকে। বিগত কয়েক বছর ধরে ফল আকারে বড় হলেই হলদে হয়ে গাছ থেকে পড়ে যেত। কখনও পোকার আক্রমণে গাছ নষ্ট হয়ে যেত। এলাকার কমলা চাষি সুবা ডুকপা, রেজিনা ডুকপা, দীপ ডুকপা, তাজি ডুকপারা বলেন, “প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামে পশুপালন আর কমলা চাষ ছাড়া রোজগারের অন্য রাস্তা তো নেই। এ বার উদ্যান পালন দফতর এগিয়ে আসায় মনে হচ্ছে কমলালেবু চাষ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারব।” |
|
|
|
|
|